ইসরায়েলি বিমান হামলায় গাজা উপত্যকার উত্তরাঞ্চলের বেইত লাহিয়া শহরে অন্তত ৭৩ জন নিহত হয়েছে, যাদের মধ্যে নারী ও শিশুরাও রয়েছে বলে হামাস শাসিত কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। গতকাল শনিবার (১৯ অক্টোবর) রাতে ইসরায়েলি বোমা হামলায় আরো বহু মানুষ আহত হয়েছে এবং অনেকে এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়ে আছে বলে জানায় কর্তৃপক্ষ। খবর বিবিসি।
তবে ইসরায়েলের দাবি, তারা হতাহতের খবর পরীক্ষা করে দেখেছে যে, হামাস কর্তৃপক্ষ বেসামরিকদের হতাহতের যে সংখ্যা প্রকাশ করেছে তা অতিরঞ্জিত এবং তাদের সামরিক বাহিনীর কাছে থাকা তথ্যের সঙ্গে মেলে না।
বেইত লাহিয়ার ইন্দোনেশিয়ান হাসপাতালে ইসরায়েলি সৈন্যদের তীব্র গুলিবর্ষণের খবর পাওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর আসে সর্বশেষ এই হামলায় ব্যাপক হতাহতের তথ্য। গাজা স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বেইত লাহিয়ায় উদ্ধার কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে, কারণ ওই অঞ্চলে যোগাযোগ ও ইন্টারনেট পরিষেবা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
হামাস শাসিত গাজার মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, বোমা হামলাটি হয়েছে ঘনবসতিপূর্ণ আবাসিক এলাকায়। সেখানেই অন্তত ৭৩ জন নিহত হয়েছেন। এ সংখ্যাটি গাজার সিভিল ডিফেন্স এজেন্সি দ্বারাও নিশ্চিত করা হয়েছে।
ফিলিস্তিনের সংবাদ সংস্থা ওয়াফা জানিয়েছে, হামলায় একটি সম্পূর্ণ আবাসিক কমপ্লেক্স ধ্বংস হয়ে গেছে।
ইসরায়েল ডিফেন্স ফোর্সেস (আইডিএফ) বিবিসিকে বলেছে যে, তারা হামাসের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করেছে এবং বেসামরিকদের ক্ষতি এড়াতে সম্ভাব্য সবকিছু করছে। হামাস অফিসের দেয়া হতাহতের ঘটনা অতিরঞ্জিত। এ ধরনের সূত্রগুলোর তথ্য আগেও মিথ্যা বলে প্রমাণিত হয়েছে।
ইসরায়েল অক্টোবরের শুরুতে উত্তর গাজায় নতুন করে সামরিক অভিযান শুরু করে বলেছে যে, তারা এই অঞ্চলে হামাসকে পুনরায় সংগঠিত হতে দেবে না। বিশেষ করে, ইসরায়েলি বাহিনী ঘনবসতিপূর্ণ জাবালিয়া এলাকা ঘেরাও করে অবিরাম বোমাবর্ষণ করছে। যার মধ্যে একটি শরণার্থী শিবিরও রয়েছে। শুক্রবার গভীর রাতে সেখানে এক হামলায় কমপক্ষে ৩৩ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
মানবিক গোষ্ঠীগুলো সতর্ক করেছে যে, গত কয়েক সপ্তাহে কার্যত কোনো সাহায্য এই এলাকায় প্রবেশ করেনি। ইসরায়েলের নিজস্ব পরিসংখ্যান দেখায় যে, সেপ্টেম্বরের একই সময়ের সঙ্গে তুলনা করলে সামগ্রিকভাবে গাজায় ত্রাণ বিতরণ কমে গেছে।
জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা বিষয়ক শীর্ষ কর্মকর্তা জয়েস মসুয়া শনিবার বলেছেন, উত্তর গাজার ফিলিস্তিনিরা অকথ্য ভয়াবহতা সহ্য করছে। তিনি এই নৃশংসতা বন্ধের আহ্বান জানান।