শিক্ষার্থীদের খণ্ডকালীন কাজ

পড়াশোনার পাশাপাশি পোশাকে ডিজাইন করেন প্রভা

ছোটবেলা থেকেই প্রচণ্ড ঝোঁক ছিল আঁকাআঁকি ও নকশার প্রতি। স্কুলে পড়াকালীন শখের বশে জামায় নকশা আঁকতেন।

ছোটবেলা থেকেই প্রচণ্ড ঝোঁক ছিল আঁকাআঁকি ও নকশার প্রতি। স্কুলে পড়াকালীন শখের বশে জামায় নকশা আঁকতেন। নকশার মৌলিকত্ব ও নান্দনিকতা তার পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনের থেকে এনে দেয় প্রশংসা ও অনুপ্রেরণা। একজন ডিজাইনার হিসেবেই উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন বুনেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অঙ্কন ও চিত্রায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী তারামুন নেছা প্রভা। বর্তমানে তিনি অনলাইনে ফেসবুক পেজের মাধ্যমে নিজের করা নানা ডিজাইনের নকশি শাড়ি, পাঞ্জাবি ও থ্রিপিস বিক্রি করছেন। 

আগে থেকে আগ্রহ থাকলেও নানা সীমাবদ্ধতার কারণে কাজ শুরু করতে পারেননি প্রভা। কভিড-১৯ মহামারীকালে ফেসবুক পেজ খুলে অনলাইন ব্যবসা শুরু করেন। নকশার মৌলিকত্ব ও নতুনত্বের কারণে পেজের নাম দেন‌ ‘‌নব্যতা’। শুরুর দিকে গ্রাহকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘনিষ্ঠ বন্ধু-বান্ধব ও পরিচিতজনদের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলেও এখন তা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়েছে।

প্রভা বলেন, ‘‌ছোট থেকেই আঁকিবুঁকি করতে ভালো লাগত। একটু অবসর পেলেই কাগজে ও জামায় নকশা আঁকা শুরু করতাম। একদম ছোট্ট বেলার কথা; যখন পুতুলের জন্য বিভিন্ন নকশায় ছোট ছোট জামা তৈরি করতাম। পরবর্তী সময়ে বোনদের জামায় বিভিন্ন ডিজাইন করা শুরু করি। নকশার দৃষ্টিনন্দন ও মৌলিকত্বের কারণে সবাই খুবই প্রশংসা করতেন এবং অনুপ্রেরণা দিতেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলায় ভর্তি হয়ে আমার দৃষ্টিভঙ্গি আরো প্রসারিত হয়। তখনই চিন্তা করি নিজের ডিজাইন করা পোশাক সবার মাঝে ছড়িয়ে দেব। সেই চিন্তা থেকেই নকশি শাড়ি, পাঞ্জাবি ও থ্রিপিস ব্যবসা শুরু করি।’

ব্যবসার শুরুতে খাতা-কলমে ডিজাইন করে পরে তা কাপড়ে নিজের হাতে (হ্যান্ড পেইন্ট) আঁকতেন। এখন চাহিদা বাড়ায় ও ব্যবসা প্রসারিত হওয়ায় নিজের ডিজাইনগুলো বিভিন্ন ডিজিটাল মিডিয়ার সাহায্যে কাপড়ে বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রিন্ট করেন।৷ এছাড়া ফরমায়েশের ভিত্তিতে বাচ্চাদের পোশাকে হ্যান্ড প্রিন্ট নকশা করে দেন। নব্যতার নান্দনিক ডিজাইনগুলো সবার কাছেই বেশ প্রশংসিত। নকশাগুলোর নামও মনোহরি। মোরগফুল, নকশি হাতি, পানকৌড়ি, শুভ্র, প্রজাপতি, কানন, ফুল বিলাস—আরো কত কী! 

এসব নাম প্রভার নিজের দেয়া।  নকশাগুলোর মূল অনুপ্রেরণা চারপাশ ও প্রকৃতি। যা ক্ল্যাসিক ও লোকজ গড়নে তুলে ধরা হয়। এছাড়া দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্যকে গুরুত্ব দেয়া হয় নকশায়। সবচেয়ে মজার বিষয় হলো অনলাইনে মার্কেটিং করতে প্রভা নিজেই নিজের পণ্যের মডেল হিসেবে কাজ করেন।

প্রভার করা নান্দনিক ডিজাইন এরই মধ্যে শিক্ষার্থীদের মাঝে বেশ সাড়া ফেলেছে। গত বছর নারী দিবসে প্রিয় দর্শনী নারী উদ্যোক্তা মেলা ২০২২-এ তার ডিজাইন করা পোশাক সর্বোচ্চ পরিমাণ বিক্রি হয়।

আরও