দেশে ৫ হাজার কোটি টাকার বেশি সম্পদ আছে ২১ ব্যক্তির

আইন ও সংবিধানের ভিত্তিতে আমানতকারীদের তথ্য সুরক্ষিত ও গোপন রাখতে পারে সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকগুলো। যেকোনো অবস্থায়ই ব্যাংকগুলো থেকে আমানতকারীর গোপন তথ্য পাওয়া অসম্ভব। এজন্য বিশ্বের ধনীদের কাছে বৈধ-অবৈধ পন্থায় অর্জিত অর্থ জমা রাখার জন্য সবচেয়ে আকর্ষণীয় গন্তব্য সুইজারল্যান্ড। বিভিন্ন দেশ থেকে আসা গোপন আমানত জমা

আইন সংবিধানের ভিত্তিতে আমানতকারীদের তথ্য সুরক্ষিত গোপন রাখতে পারে সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকগুলো। যেকোনো অবস্থায়ই ব্যাংকগুলো থেকে আমানতকারীর গোপন তথ্য পাওয়া অসম্ভব। এজন্য বিশ্বের ধনীদের কাছে বৈধ-অবৈধ পন্থায় অর্জিত অর্থ জমা রাখার জন্য সবচেয়ে আকর্ষণীয় গন্তব্য সুইজারল্যান্ড। বিভিন্ন দেশ থেকে আসা গোপন আমানত জমা রাখতে সেখানে গড়ে উঠেছে তিন শতাধিক বেসরকারি ব্যাংক। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় ব্যাংকটি হলো ক্রেডিট সুইস। ১৬৬ বছর ধরে ব্যাংকিং কার্যক্রম চালিয়ে আসা প্রতিষ্ঠানটি এখন বিশ্বব্যাপী গোপন অর্থ আমানতের সবচেয়ে বড় গন্তব্যগুলোর একটি।

ব্যবসায়িক কারণেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সম্পদশালীদের তথ্য সংগ্রহ করে থাকে জুরিখভিত্তিক ব্যাংকটি। প্রায় দেড় দশক ধরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সম্পদশালীদের পরিসংখ্যান নিয়ে ডাটাবেজ তৈরি করছে প্রতিষ্ঠানটির গবেষণা উইং, যা প্রকাশ হয় গ্লোবাল ওয়েলথ ডাটাবুক শিরোনামে। ক্রেডিট সুইস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের তৈরি করা ডাটাবেজটির সর্বশেষ প্রকাশিত ২০২২ সালের সংস্করণে দেখা যায়, দেশে এখন ৫০ কোটি ডলার বা হাজার কোটি টাকার বেশি পরিমাণের সম্পদ আছে ২১ ব্যক্তির কাছে। কভিড মহামারীর মধ্যেও ২০২১ সালে দেশে ১০ কোটি টাকার বেশি সম্পদ আছে, এমন ব্যক্তির সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ৪৩ শতাংশ। ওই বছরের শেষে দেশে মিলিয়ন ডলার (বর্তমান বিনিময় হার অনুযায়ী ১০ কোটি ৭০ লাখ টাকার সমপরিমাণ) বা এর বেশি মূল্যমানের সম্পদের মালিক ছিল ৩০ হাজার ৫৫৯ জন। ২০২০ সালে কভিডের বছরে সংখ্যা ছিল ২১ হাজার ৩৯৯ জন।

দেশের অর্থনীতিকে বিপত্তির মুখে ঠেলে দিয়েছিল কভিড মহামারীর প্রাদুর্ভাব। কর্মহীন হয়ে পড়েছিলেন অনেকে। অবনতির দিকে যায় দারিদ্র্য পরিস্থিতি। করোনা প্রাদুর্ভাবের পরের বছর ২০২১ সালটিকে দেখা হচ্ছিল অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের বছর হিসেবে। যদিও প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করে তুলেছিল কভিডের নতুন ধরনের আবির্ভাব, নতুন সংক্রমণ ঢেউ বিধিনিষেধ। পরিস্থিতি আরো সঙ্গিন হয়ে পড়ে বছরের শেষার্ধ্বে বৈশ্বিক জ্বালানি বাজারের অস্থিতিশীলতায়। এসব প্রতিকূলতার মধ্যেও দেশে বিভিন্ন সুবিধাবাদী গোষ্ঠীর সম্পদ বৃদ্ধি থেমে থাকেনি। বরং সময় দেশে অতিধনীদের সংখ্যা আরো দ্রুতগতিতে বেড়েছে।

ডাটাবেজের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সাল শেষে দেশে ৫০ কোটি ডলারের বেশি ( হাজার ৩৫০ কোটি টাকার বেশি) সম্পদ ছিল ২১ ব্যক্তির কাছে। সময় ১০ থেকে ৫০ কোটি ডলারের ( হাজার ৭০ কোটি থেকে হাজার ৩৫০ কোটি টাকা) সম্পদ ছিল ৪৩ ব্যক্তির। এছাড়া -১০ কোটি ডলারের (৫৩৫ কোটি থেকে হাজার ৭০ কোটি টাকা) সম্পদ ছিল ৩৯ ব্যক্তির হাতে। ৪০০ ব্যক্তির হাতে ছিল - কোটি ডলারের (১০৭ কোটি থেকে ৫৩৫ কোটি টাকা) সমপরিমাণ সম্পদ। ৫০ লাখ থেকে কোটি ডলারের (৫৩ দশমিক কোটি থেকে ১০৭ কোটি টাকা) সমপরিমাণ সম্পদ ছিল হাজার ১২৫ জনের। ২৮ হাজার ৯৩১ জনের কাছে সম্পদ ছিল ১০ লাখ থেকে ৫০ লাখ ডলারের (১০ কোটি ৭০ লাখ থেকে ৫৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা)

ক্রেডিট সুইসের ভাষ্যমতে, মূলত নিট উচ্চমূল্যের সম্পদ মালিকদের (হাই নিট ওয়ার্থ ইনডিভিজুয়াল) তথ্য জানতে ডাটাবেজটি নিয়মিতভাবে তৈরি করা হয়। নিট সম্পদের মালিকানার হিসাব করা হয় ব্যক্তির মালিকানাধীন আর্থিক অনার্থিক সম্পদের (স্থাবর সম্পদ যেমন জমি, বাড়ি ইত্যাদি) মোট মূল্য থেকে দায়দেনা বাদ দিয়ে।

দুর্নীতিকে মহামারীর মধ্যেও দেশের ধনীদের সম্পদ বৃদ্ধির বড় একটি কারণ হিসেবে দেখছেন অর্থনীতিবিদ বিশেষজ্ঞরা। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক . ইফতেখারুজ্জামান বণিক বার্তাকে বলেন, মানুষের সম্পদের বিকাশ সম্পূর্ণ বৈধ স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় হতে পারে। এখানে সম্পদের বৈষম্য পুঁজিবাদের একটা বৈশিষ্ট্যও বটে। তার পরও যে বিষয়টি আমাদের মতো দেশে ঘটছে এবং পৃথিবীর অন্যান্য দেশেও ঘটে, সেটি হলো দুর্নীতি। এর নেতিবাচক প্রভাবগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে অর্থনৈতিক বৈষম্য বেড়ে যায়। আমাদের নীতিকাঠামোটা অনেক ক্ষেত্রেই দুর্নীতিসহায়ক। পৃথিবীর যেসব দেশে সবচেয়ে বেশি হারে উচ্চধনীর সংখ্যা বাড়ছে, তার অন্যতম হলো বাংলাদেশ।

সম্পদের কেন্দ্রীভবনকে বাংলাদেশে সুষম উন্নয়নের পথে অন্তরায় হিসেবে দেখছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর . সালেহউদ্দিন আহমেদ। বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, যাদের ধনসম্পদ আছে উচ্চপর্যায়ের ব্যক্তিদের সঙ্গে তাদের সংযোগও বেশি। সংযোগ রাজনীতি থেকে শুরু করে আমলাতন্ত্র, ব্যাংক সব পর্যায়ে তাদের প্রভাবশালী করছে। ফলে তারা ব্যাংক ঋণের সুবিধা পায়। ব্যাংক খাতে দেখা যাবে ঋণের বেশির ভাগই কেন্দ্রীভূত বড় গ্রাহকদের মধ্যে। অঞ্চলভিত্তিক দেখলেও দেখা যাবে চট্টগ্রাম ঢাকা ছাড়া বেশির ভাগ এলাকাই বঞ্চিত। আবার আয় বাড়লে ধনীরা জমি-সম্পদ কেনে। প্রয়োজন দুই বিঘা। কিনে রাখে দশ বিঘা। পরে আট বিঘা বিক্রি করে। স্পেকুলেটরি ইনভেস্ট করে। ওদের কাছে সুযোগ সম্ভাবনা আছে। বাংলাদেশে কয়েকটা ক্ষেত্রে মনোপলি-অলিগোপলি আছে। যেমন বিদ্যুৎ, ব্যাংক, ওষুধএসব খাতেই কয়েকটা গ্রুপই সবকিছু করছে। অন্যদিকে ক্ষুদ্র-মাঝারি প্রতিষ্ঠানগুলো দিনে দিনে বঞ্চিত হচ্ছে। এটি মোটেও ভালো লক্ষণ না।

ক্রেডিট সুইসের প্রতিবেদনে বলা হয়, বিভিন্ন উৎস থেকে সংগৃহীত তথ্যের ভিত্তিতে বিশ্বের ২১৭টি দেশ অর্থনৈতিকভাবে স্বতন্ত্র অঞ্চলে (হংকংয়ের মতো বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চল) সম্পদের বণ্টন সংশ্লিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে ডাটাবেজটি তৈরি করা হয়েছে। ডাটাবেজটি তৈরি হয়েছে তিনটি ধাপে। এর মধ্যে প্রথম ধাপে সংশ্লিষ্ট দেশ অঞ্চলগুলোর গড় সম্পদের বণ্টন হিসাব করা হয়েছে। এক্ষেত্রে বড় একটি উৎস ছিল দেশগুলোর খানা জরিপের তথ্য। যেসব দেশের খানা জরিপের তথ্য পাওয়া যায়নি, সেগুলোর ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক পরিসংখ্যানকে ভিত্তি করে সম্পদের বণ্টন হিসাব করা হয়েছে। অনেক দেশেই পর্যাপ্ত তথ্যের অভাবে সংশ্লিষ্ট উপ-অঞ্চলের গড় সম্পদ জিডিপির অনুপাতসহ বিভিন্ন উপাত্তের ভিত্তিতে রিগ্রেশন অ্যানালাইসিসসহ কয়েকটি পরিসংখ্যান পদ্ধতির প্রয়োগ করতে হয়েছে।

ক্রেডিট সুইসের ডাটাবেজ তৈরির দ্বিতীয় ধাপে পর্যালোচনা করা হয় সংশ্লিষ্ট দেশ বা অঞ্চলগুলোর সম্পদ মালিকানার ধরনকে। এক্ষেত্রে পূর্ণাঙ্গ তথ্য পাওয়া যায় ৪০টি দেশের। এসব দেশের তথ্য পর্যালোচনায় সম্পদ আয়ের বণ্টনের মধ্যে সরাসরি সম্পর্কের প্রমাণ পেয়েছেন গবেষকরা। সম্পর্ককে কাজে লাগিয়ে আরো ১৪০টি দেশের পরিসংখ্যান তৈরি করা হয়েছে। এসব দেশের আয়ের তথ্য পাওয়া গেলেও সম্পদের মালিকানা সম্পর্কে বিশদ কোনো তথ্য পাওয়া যায় না। বাকি ৩৭টি দেশের ক্ষেত্রেও সংশ্লিষ্ট উপ-অঞ্চলের গড়ের আশ্রয় নিতে হয়েছে বিশেষজ্ঞদের।

তৃতীয় ধাপে হিসাব করা হয়েছে বিভিন্ন দেশের শীর্ষ পর্যায়ের বা অতিধনীদের সম্পদের পরিমাণকে। এক্ষেত্রেও গতানুগতিক উৎসগুলোকে অনির্ভরযোগ্য হিসেবে বিবেচনা করেছেন ক্রেডিট সুইসের গবেষকরা। এজন্য বিভিন্ন দেশের শীর্ষ ধনীদের মধ্যে সম্পদের বণ্টন পর্যালোচনার জন্য অন্যান্য উৎসের পাশাপাশি ফোর্বসের বৈশ্বিক বিলিয়নেয়ারদের তালিকার সহায়তা নেয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে সম্পদের মূল্য হিসাব করা হয়েছে ডলারের প্রাতিষ্ঠানিক বিনিময় হারের ভিত্তিতে। বিষয়ে ক্রেডিট সুইসের বক্তব্য হলো, গোটা বিশ্বেই শীর্ষ পর্যায়ের ধনীদের মধ্যে এক দেশ থেকে আরেক দেশে সম্পদ স্থানান্তরের প্রবণতা আছে। কারণে বৈশ্বিক সম্পদের বণ্টন পর্যালোচনা করতে হলে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিময় হারকেই বিবেচনায় নেয়া উত্তম।

সাবেক সচিব এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান . মোহাম্মদ আবদুল মজিদ বণিক বার্তাকে বলেন, দেশে অবশ্যই ধনীদের সম্পদের পরিমাণ বাড়ছে। এক্ষেত্রে জবাবদিহিতা, সুশাসন রাজনৈতিক অর্থনীতির দিকভ্রান্তির প্রভাব রয়েছে। ফাঁকি দিয়ে হোক, দুর্নীতি করে হোক সম্পদ যদি অর্থনীতিতেই থাকত, তাহলে অর্থনীতি অন্তত আরো ৭৫ শতাংশ উপযোগিতা পেত। কারণ মানুষের কর্মসংস্থান হতো। অর্থ দেশেই থাকত এবং দেশেই প্রবাহিত হতো। এক্ষেত্রে প্রথম অন্যায় যেটি হচ্ছে সেটি হলো ফাঁকি দিয়ে বা দুর্নীতি করে সবার কাছ থেকে সম্পদ কুড়িয়ে নেয়া হচ্ছে। যাদের কাছ থেকে নেয়া হচ্ছে তাদের দিকে না তাকিয়ে বা ফেলে দিয়ে অর্থ নেয়া হচ্ছে বিদেশে। সেখানে সম্পদ গড়ে উঠছে, কর্মসৃজন হচ্ছে, উন্নতি হচ্ছে। এগুলো এখানেই ঘটতে পারত। এসব কিছুর প্রতিফলন হিসেবে বৈষম্য বাড়ছে। দেখা যাবে যে সংস্কার দেশে প্রয়োজন সেটা দুর্নীতিবাজরাই করতে দেবে না। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) দুর্নীতিবাজের মামলা সম্পন্ন করতে পারছে না। দেশের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো যদি ঠিকভাবে কাজ করতে পারত তাহলে আজ দেশের অবস্থা হয় না।

অবশ্য সম্পদ বৃদ্ধির পরিসংখ্যানকে ব্যক্তি খাতের বিকাশেরই প্রতিফলন হিসেবে দেখছেন ব্যবসায়ী নেতারা। এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন বণিক বার্তাকে বলেন, বাংলাদেশ উন্নয়নশীল থেকে উন্নত দেশের পথে রয়েছে। এখানে নতুন ব্যবসা-বাণিজ্য হচ্ছে, নতুন নতুন খাতের বিকাশ ঘটছে। কেউ ভালো করছেন, কেউ পারছেন না। অর্থনীতি দাঁড়িয়ে আছে ব্যক্তি খাতের ওপরে। খাতে সম্পদ বাড়ছে। সরকারের সহায়তায় অনেক নতুন নতুন খাত উন্মুক্ত হচ্ছে যেমন বিদ্যুৎ জ্বালানি, টেলিযোগাযোগ, আইটি, ব্যাংকিং। এর প্রভাবে বড় করপোরেটগুলোর সুযোগ বেড়েছে, তারা ভালো করছে। কিন্তু সমতা আনার জন্য একটা প্রচেষ্টা আমাদের থাকতে হবে। বিশেষ করে ব্যাংক খাতকে এগিয়ে আসতে হবে এসএমই খাত বিকাশের জন্য। বৈষম্য অবশ্যই আছে। এটি কমানোর জন্য আমাদেরকে চেষ্টা করতে হবে। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো দেশে ব্যবসা করলে কর্মসংস্থান হয়। এখন ব্যবসা যদি বাংলাদেশের মধ্যেই থাকে তাহলে ঠিক আছে। কিন্তু বাংলাদেশ থেকে যদি ড্রেন আউট হয়ে যায় বা চলে যায় তাহলে তা আমাদের জন্য কঠিন। এজন্য ভারসাম্য থাকা দরকার।

দেশে অতিধনীর সংখ্যা বাড়লেও আয়করের ৮৫ শতাংশই আসছে পরোক্ষ উৎস থেকে। দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে দুর্বল করভিত্তি বাংলাদেশেই। অতিধনীদের বিরাট অংশ দেশে কর না দিয়ে সম্পদ পাচার করছেন ভিনদেশে। অন্য দেশের নাগরিকত্ব গ্রহণ করছেন অথবা রেসিডেন্স পারমিট নিচ্ছেন গোল্ডেন ভিসায়। বাংলাদেশ ছাড়াও বিভিন্ন অফশোর গন্তব্যে জমা রাখছেন বিপুল পরিমাণ অর্থ। কানাডা, দুবাই, লন্ডনের প্রাইম লোকেশনে কিনছেন উচ্চমূল্যের বাড়ি। বিদেশী গন্তব্যে অর্থের অবৈধ প্রবাহ দেশে বৈদেশিক মুদ্রার ওপরে বড় চাপ তৈরি করেছে।

যদিও নীতিনির্ধারকরা মনে করছেন, উন্নয়নের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া হিসেবেই দেশে সম্পদের বৈষম্য তৈরি হচ্ছে। পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী . শামসুল আলম বণিক বার্তাকে বলেন, অর্থনীতির তত্ত্বেই আছে উন্নয়নের প্রথম পর্যায়ে বৈষম্য বেড়ে যায়। এর কারণ হলো পুঁজিবাদীরা পুঁজির বিনিয়োগ মুনাফা করে। মুনাফা করলে সম্পদও বাড়ে। দরিদ্রদের সম্পদ কমে, যেহেতু তাদের সক্ষমতা কম। এর মূল কারণ হলো উন্নয়নের বিভিন্ন স্তর। একটি স্তরে বৈষম্য বেড়ে যায়। তবে রাষ্ট্র বৈষম্য বাড়ার কালে ধনীদের কাছ থেকে করের টাকা আদায় করে দরিদ্রদের জন্য সামাজিক নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে। চিকিৎসা ব্যবস্থা করে। শিক্ষার সুযোগ দেয়। এতে করে বৈষম্য কিছুটা কমে আসে। বাংলাদেশে এর বাইরে কিছু ঘটেনি। যা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ঘটেছে, সেটি বাংলাদেশেও ঘটছে। কাজেই বৈষম্য বৃদ্ধির বিষয়টি স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায়ই হয়েছে।

আরও