জাপানে নতুন কার্বন নিঃসরণ প্রযুক্তির পরীক্ষা শুরু

বণিক বার্তা ডেস্ক

হানিসিরাম ব্যবহারের মাধ্যমে বাতাস থেকে সরাসরি কার্বন শোষণে কাজ করছে এনজিকে ছবি: এনপিআর

পরিবেশ দূষণ বর্তমান বিশ্বের অন্যতম একটি সমস্যা। গাছ পরিবেশ থেকে যেভাবে কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্রহণ করে, তার থেকেও সহজ পদ্ধতি রয়েছে বলে দাবি জানিয়েছিলেন গবেষকরা। শুধু কথায় নয়, জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টি ভিন্ন পদ্ধতিতে নিয়ন্ত্রণ করছে জাপানের দুটি প্রতিষ্ঠান। খবর ফ্রিমালয়েশিয়াটুডে।

নাগোয়াভিত্তিক এনজিকে ইনসুলেটরস হানিসিরাম ব্যবহারের মাধ্যমে বাতাস থেকে সরাসরি কার্বন ডাই-অক্সাইড নিঃসরণে কাজ করছে। এটি মূলত সিরামিক অনুঘটক। গাড়ি থেকে যে ধোঁয়া নির্গমন হয়, সেটি নিয়ন্ত্রণে এটি ব্যবহার করা হয়। সরাসরি বায়ু থেকে কার্বন ডাই-অক্সাইড শোষণের ক্ষেত্রে রাসায়নিক বিক্রিয়া ব্যবহার করা হয়। যেগুলো মাটির তলদেশে সংরক্ষণের পাশাপাশি জ্বালানি তৈরিতে ব্যবহার করা যায়। যেসব জায়গায় বাতাস আছে, সেখানে এগুলো কার্যকর।

২০২৫ অর্থবছর থেকে এনজিকের নতুন প্লান্টের কার্যক্রম শুরু হবে। প্রযুক্তিবিদ সংশ্লিষ্টদের ধারণা, এটি প্রতি বছর বাতাস থেকে কয়েক লাখ টন কার্বন ডাই-অক্সাইড শোষণ করতে পারবে। প্লান্টটিতে ভ্যানিলা রঙের কয়েক হাজার হানিসিরাম ব্লক ব্যবহার করবে। এতে যে ফ্যান রয়েছে, সেগুলো বাতাসকে টেনে হানিকম্ব কাঠামোর ভেতরে নিয়ে যাবে। এর উপরে এমন রাসায়নিকের আবরণ রয়েছে, যা কার্বন ডাই-অক্সাইডের সঙ্গে বিক্রিয়া করে। এরপর উচ্চহারে পরিশোধিত কার্বন ডাই-অক্সাইড নির্গমনের জন্য হানিসিরাম তখন উত্তপ্ত হয়।

এনজিকের একজন মুখপাত্র জানান, উপাদান বাতাসের মধ্যে সংযোগ স্থাপনের জন্য হানিকম্ব অবকাঠামো আরো বেশি জায়গা দেয়। ফলে বাতাস থেকে আরো কার্যকরভাবে কার্বন ডাই-অক্সাউড শোষণ করা যায়। ২০৩০ সাল নাগাদ শূন্য কার্বন পণ্য ডিজিটাল উদ্যোগ বাস্তবায়নের হার ৫০ শতাংশ ২০৫০ সাল নাগাদ ৮০ শতাংশে উত্তীর্ণের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে এনজিকে।

দেশটির প্রেসিডেন্ট শিগেরু কোবাইয়াশি বলেন, কার্বন শোষণ প্রযুক্তি আমাদের জন্য বড় আকর্ষণের বিষয়। নাগোয়াভিত্তিক আরেকটি প্রতিষ্ঠান তহো গ্যাস সরাসরি বাতাস আটকানোর প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করছে। তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহের টার্মিনালগুলোয় প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে।

নাগোয়া ইউনিভার্সিটি অন্য সহযোগীদের সঙ্গে কাজ করার মাধ্যমে তহো গ্যাস ২০২৪ অর্থবছর নাগাদ ধরনের একটি প্রটোটাইপ প্লান্ট তৈরিতে কাজ করছে। প্লান্টটি প্রতি বছর এক টনের বেশি কার্বন ডাই-অক্সাইড শোষণ করবে। প্রাকৃতিক গ্যাসকে ঠাণ্ডা করার মাধ্যমে এলএনজি তৈরি করা হয়। প্রক্রিয়াটির বিপরীত অবস্থায় তাপ শোষিত হয় পারিপার্শ্বিক অবস্থা ঠাণ্ডা থাকে। এলএনজিকে রিগ্যাসিফিকেশনের কারণে যে ঠাণ্ডা শক্তি তৈরি হয়, তহো গ্যাস সেটি ব্যবহার করে। এর মাধ্যমে কার্বন ডাই-অক্সাইডকে মাইনাস ১৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় আনার মাধ্যমে ড্রাই আইসে পরিণত করা হয়।

সরাসরি বাতাস থেকে কার্বন ডাই-অক্সাইড শোষণের বিষয়টি আশাজাগানিয়া হলেও প্রতি টনে ৩০০-৬০০ ডলার ব্যয় হবে, যা এটির জন্য বড় বাধা।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন