ফ্লোরিডায় খাবার মেন্যুতে শিগগিরই যুক্ত হচ্ছে অজগরের মাংস

বণিক বার্তা অনলাইন

যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যে এখন সবচেয়ে ভয়ঙ্কর শিকারী প্রাণিতে পরিণত হয়েছে বার্মিজ অজগর।  এই অজগরের দৌরাত্ম্যে ওই অঞ্চলের ছোট আকৃতির স্তন্যপায়ী প্রাণি প্রায় বিলুপ্ত হওয়ার পথে।  

অজগরের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য অনেক আগে থেকেই সরকারিভাবে নিধন প্রকল্প চালু রয়েছে।  তাতেও খুব একটা কাজ হচ্ছে না। এবার খাবার মেন্যুতে অজগরের মাংস যোগ করা যায় কিনা তা নিয়ে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে কর্তৃপক্ষ। এরই মধ্যে মাংসের নমুনা নিয়ে একাধিক ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা চলছে।  

বিজ্ঞানীরা এ মাংস নিরাপদ বলে রায় দিলেই তা দেখা যাবে ফ্লোরিডার হোটেল রেস্টুরেন্টের খাবার মেন্যুতে। 

অজগরের মাংস খাওয়ার অনুমোদনের বিষয়ে ফ্লোরিডা ফিশ অ্যান্ড ওয়াইল্ডলাইফ কনজারভেশন কমিশন (এফডব্লিউসি)  ফ্লোরিডা স্বাস্থ্য অধিদফতরের সঙ্গে কাজ করছে।  এটি নিরাপদে ভক্ষণযোগ্য কিনা তা নির্ধারণ করতে অজগরের শরীরে পারদের মাত্রা যাচাই করে দেখা হচ্ছে। 

বার্মিজ অজগর মূলত দক্ষিণ ফ্লোরিডায় বেশি দেখা যায়। এই অঞ্চলের স্থানীয় বন্যপ্রাণিদের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করেছে বিশালাকৃতির এই সরীসৃপগুলো।  

অজগর কিন্তু ফ্লোরিডার স্থানীয় বন্যপ্রাণি নয়।  ১৯৮০-এর দশকে এভারগ্লেডসে এগুলো প্রথম দেখা যায়।  ধারণা করা হয়, সৌখিন কেউ তার শখের চিড়িয়াখানা থেকে পালিত অজগর প্রকৃতিতে ছেড়ে দিয়েছিল।  আর সেখান থেকেই বংশবৃদ্ধি করে আজ রীতিমতো আপদে পরিণত হয়েছে। 

এফডব্লিউসি শহরবাসীকে বছরের একটা নির্দিষ্ট সময় অজগর ধরা ও মানবিকভাবে হত্যা করার বিষয়ে উৎসাহ দেয়।  এমনকি এর জন্য প্রণোদনাও দেয়া হয়।  সেই সঙ্গে কোনো দর্শনীয় স্থানে অজগর দেখা গেলে তাৎক্ষণিকভাবে কর্মকর্তাদের জানানোর জন্য উৎসাহিত করা হয়। 

এদিকে ঠিকাদারের মাধ্যমে অজগর অপসারণ কর্মসূচিও আছে কর্তৃপক্ষের। এই কর্মসূচির নাম ‘পাইথন এলিমিনেশন প্রোগ্রাম’। এফডব্লিউসি এবং দক্ষিণ ফ্লোরিডা পানি ব্যবস্থাপনা ডিস্ট্রিক্ট পরিচালিত এই কর্মসূচির আওতায় এভারগ্লেডস থেকে এখন পর্যন্ত ৬ হাজার অজগর অপসারণ করা হয়েছে।  এই কর্মসূচির পাশাপাশি এখন অজগরের মাংসে পারদের মাত্রা যাচাই কর্মসূচির অর্থায়ন করা হচ্ছে।

পাইথন ইলিমিনেশন প্রোগ্রামের ম্যানেজার মাইক কর্কল্যান্ড বলেন, পারদ পরিবেশের একটি প্রাকৃতিক উপাদান এবং এভারগ্লেডসে এটির মাত্রা একটু বেশি।  পারদ এখানে পরিবেশে ঘনীভূত হচ্ছে এবং খাদ্যমৃঙ্খলের উচ্চস্তরেও প্রবেশ করছে। আর অজগরের অবস্থানও খাদ্যশৃঙ্খলের উচ্চস্তরে।

তিনি বলেন, আমাদের ধারণা, ফলাফল যা আসবে তাতে অজগরের মাংস ভক্ষণে মানুষ নিরুৎসাহিতই হবে।  তবে এই মাংস খাওয়া নিরাপদ প্রমাণিত হলে এবং মানুষকে খেতে উৎসাহিত করা গেলে এই অঞ্চলে অজগরের সংখ্যা হ্রাসে তা দারুণ সহায়তা করবে।

এদিকে সম্প্রতি ডোনা কালিল নামে একজন পেশাদার অজগর শিকারী অজগরের মাংসে পারদের মাত্রা সম্পর্কিত একটি পোস্ট টুইটারে শেয়ার করেছেন। তিনি দেখিয়েছেন, এই মাংসে পারদের মাত্রা নিরাপদ, আর মাংস ঠিকঠাক রান্না করা গেলেও খেতেও বেশ সুস্বাদু!

সূত্র: সিএনএন

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন