শিল্প খাত

কিস্তিতে গ্যাস বিল পরিশোধের সুযোগ পাবেন ভালো গ্রাহকরা

জেসমিন মলি

নভেল করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা কিস্তিতে গ্যাস বিল পরিশোধের সুযোগ চেয়েছিলেন। তাদের সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ভালো গ্রাহকদের সুযোগ দেয়ার কথা ভাবছে সরকার। তবে সেসব শিল্পপ্রতিষ্ঠান সুযোগ পাবে, যারা করোনার আঘাত আসার আগে নিয়মিত গ্যাস বিল পরিশোধ করেছে। যারা আগে থেকেই বিল পরিশোধে অনিয়মিত বা বিল খেলাপি, তারা সুযোগ পাবে না। জ্বালানি খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, মন্ত্রণালয়ের জ্বালানি খনিজ সম্পদ বিভাগের মাসিক সমন্বয় সভায় তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (টিজিটিডিসিএল) পক্ষ থেকে কিস্তিতে বিল পরিশোধের আবেদনের বিষয়টি তুলে ধরা হয়। প্রস্তাবটির বিষয়ে সভায় যে আলোচনা হয়, তার ভিত্তিতে এবং তিতাসের বোর্ড সভায় অনুমোদনের পরিপ্রেক্ষিতে ভালো গ্রাহকদের কিস্তিতে গ্যাস বিল পরিশোধের সুযোগ দেয়া হতে পারে।

দেশে নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ দেখা দেয়ার পর ২৬ মার্চ থেকে গত ৩০ মে পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সরকার। তখন রফতানিমুখী শিল্প খাত, ওষুধ শিল্প খাদ্যপণ্য উৎপাদক প্রতিষ্ঠান ছাড়া অন্য সব শিল্প ব্যবসা প্রতিষ্ঠান কার্যত বন্ধ ছিল। সেই সময় কোনো কোনো শিল্প-কারখানা চালু থাকলেও উৎপাদিত পণ্য বিক্রি করতে পারেনি। ফলে প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষে গ্যাস বিল পরিশোধ করা সম্ভব হয়নি। ধরনের বেশকিছু প্রতিষ্ঠান গ্যাস বিল কিস্তিতে পরিশোধ করার সুযোগ চেয়ে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করে। গত মার্চ থেকে মে পর্যন্ত সময়ের গ্যাস বিল ছয় মাস থেকে ১২ মাসের কিস্তিতে পরিশোধের সুযোগ তারা চেয়েছে বলে জানা গেছে।

গত ১০ জুন ডিজিটাল মাধ্যমে জ্বালানি খনিজ সম্পদ বিভাগের মাসিক সমন্বয় সভায় গ্রাহকদের আবেদনের বিষয়টি তুলে ধরেন তিতাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলী মো. আল মামুন। তিনি জানান, -সংক্রান্ত কোনো নির্দেশনা গ্যাস বিপণন নিয়মাবলিতে না থাকায় বিষয়টি নিয়ে সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। তখন জ্বালানি বিভাগের সিনিয়র জানান, বিশেষ পরিস্থিতি বিবেচনায় বিষয়ে একটি বিশেষ আদেশ জারি করা যেতে পারে।

বিষয়টি সম্পর্কে জানতে তিতাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলী মো. আল মামুনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, রকম একটি আলোচনা হয়েছে। তবে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। শেয়ারবাজারের তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠান হিসেবে বোর্ড সভার অনুমোদনের বাইরে ধরনের কোনো সিদ্ধান্ত নেয়ার সুযোগ নেই। বোর্ড সভায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে। এর পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিতাস গ্যাসের পরিচালনা পর্ষদের এক সদস্য জানান, কভিড-১৯ মহামারীর কারণে ব্যবসায় নেতিবাচক প্রভাব পড়ায় বেশকিছু শিল্পপ্রতিষ্ঠান গ্যাস বিল কিস্তিতে পরিশোধ করার আবেদন করেছেন। যারা ভালো গ্রাহক তাদের বিষয়ে ছাড় দেয়ার চিন্তাভাবনা রয়েছে সরকারের। সেক্ষেত্রে করোনাকালীন গ্যাস বিল তারা কিস্তিতে পরিশোধের সুযোগ পেতে পারেন।

তিনি বলেন, আমরা গ্রাহকদের নিয়মিত সময়মতো গ্যাস বিল পরিশোধে অনুরোধ জানিয়েছি। অনেক গ্রাহক সেই অনুরোধে সাড়া দিয়ে নিয়মিত বিল পরিশোধ করছেন। অনেকেই করোনায় ব্যবসায়িকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণে বিল পরিশোধ করতে পারছেন না। আবার অনেকেই আছেন যারা করোনাকে একটি সুযোগ হিসেবে দেখে গ্যাস বিল পরিশোধের ক্ষেত্রে নানা অজুহাত দিচ্ছেন। তবে যারা নভেল করোনাভাইরাসের আগে নিয়মিত গ্যাস বিল পরিশোধ করতেন, তাদের কেইস বাই কেইস ভিত্তিতে কিস্তিতে বিল পরিশোধের সুযোগ দেয়া হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন