কয়রায় আম্পানে ক্ষতিগ্রস্ত হতদরিদ্র পরিবারে দিনে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ৩ হাজার টাকা করে বিতরণ করে রাতে সেই টাকা ফেরত নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এভাবে ত্রাণের টাকা বেসরকারি সংস্থা উত্তরণের ম্যানেজার ও তার সহযোগীরা আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি জানতে পেরে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে উত্তরণ কর্তৃপক্ষ।
জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড় আম্পানে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মধ্যে ত্রাণ বিতরণের জন্য বেসরকারি সংস্থা উত্তরণ কয়রা উপজেলার দক্ষিণ বেদকাশি, মহারাজপুর ও কয়রা সদর ইউনিয়নে ৭৫০ পরিবারের তালিকা করে। প্রতিটি পরিবারকে নগদ ৩ হাজার টাকাসহ একটি কিট বক্স বিতরণ করা হয়। উত্তরণের কয়রার ম্যানেজার মাসুদ ও তার সহযোগী এসব টাকা বিতরণের পর গত মঙ্গলবার রাতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে সেই টাকা নিয়েছেন। পরে প্রত্যেককে ১২ হাজার টাকা করে দেয়ার কথা বলে এ টাকা তিনি ফেরত নিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন ত্রাণগ্রহীরা।।
কালনা গ্রামে সালেহা খাতুন, নুরজাহান, আসমা, মহারাজপুর গ্রামের রুবেল, জামাল গাজী বলেন, বিকালে টাকা দিয়ে সন্ধ্যার পর আবার ঘরে ঘরে এসে ম্যানেজার মাসুদ ও বাশার এসে ৩ হাজার টাকা ফেরত নিয়ে যান। মাসুদ ও বাশার বলেন, এই টাকা ফেরত দিলে কিছুদিন পর ১২ হাজার দেয়া হবে।
উত্তরণ কয়রার ম্যানেজার মাসুদ আহসান বলেন, গত ১৪-১৫ জুন কয়রা সদর ইউনিয়ন ও ১৬-১৭ জুন মহারাজপুর ইউনিয়নে ৪৮৬ পরিবারে ত্রাণ বিতরণ করা হয়েছে। দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়নে আজ (বৃহস্পতিবার) ত্রাণ বিতরণের কথা ছিল। কিন্তু হেড অফিস ত্রাণ বিতরণ বন্ধ করে দিয়েছে।
তিনি জানান, মঙ্গলবার মহারাজপুর ইউনিয়নের কালনা, মহারাজপুর, দশালিয়া, মঠবাড়ী, আটরা, শ্রীরামপুরসহ একাধিক গ্রামে ২৫০ পরিবারে ৩ হাজার টাকা করে ও একটি করে কিট বক্স বিতরণ করা হয়।
টাকা ফেরত নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে ম্যানেজার মাসুদ আহসান বলেন, এই কাজের সঙ্গে তিনি জড়িত নন। বাশার আরো কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে এ কাজ করেছে বলে শুনেছি। ঘটনাটি জানার পর প্রধান কার্যালয় থেকে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। একই সঙ্গে ত্রাণ বিতরণ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে উত্তরণের সহকারী সমন্বয়কারী (প্রশাসন) শম্ভু চৌধুরী বলেন, এ ধরনের অভিযোগ জানার পর গতকাল বুধবার ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্তে প্রমাণিত হলে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কয়রা সদর ইউপি চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবিরের দাবি, উত্তরণের ম্যানেজার মাসুদ তার ইউনিয়নে ব্যাপক অনিয়ম, দুর্নীতি করেছেন। তারা একই পরিবারের স্বামী, স্ত্রী, সন্তানদের নামও তালিকাভুক্ত করে ত্রাণ দিয়েছেন।
