দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর শুরু হতে যাচ্ছে গ্র্যান্ড ইজিপশিয়ান মিউজিয়ামের ট্রায়াল রান

মিউজিয়াম কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মিউজিয়ামে মোট ১ লাখেরও বেশি প্রাচীন মিশরীয় নিদর্শন প্রদর্শন করা হবে। ট্রায়াল রান মিউজিয়ামটির পূর্ণ উদ্বোধনের প্রস্তুতি হিসেবে কাজ করবে। এতে সৃষ্ট সমস্যাগুলোর সমাধান খোঁজা সহজ হবে। মিউজিয়ামের সহকারী মহাপরিচালক আল-তায়েব আব্বাস এ তথ্য জানিয়েছেন।

অবশেষে প্রাচীন মিশরের অমূল্য ঐতিহ্য নিয়ে নির্মিত গ্র্যান্ড ইজিপশিয়ান মিউজিয়াম শুরু করতে যাচ্ছে ট্রায়াল রান। এ সপ্তাহ থেকেই মিউজিয়ামের মূল প্রদর্শনীর ১২টি গ্যালারিতে প্রাচীন মিশরের ইতিহাস নিয়ে প্রদর্শনী উন্মুক্ত করা হবে। এটি প্রতিদিন ৪ হাজার দর্শনার্থীর জন্য খোলা থাকবে বলে জানিয়েছে মিশরের প্রত্নতত্ত্ব মন্ত্রণালয়। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনের তারিখ এখনো নির্ধারণ করা হয়নি।

গিজার বিখ্যাত পিরামিডের কাছে অবস্থিত এই মিউজিয়াম নির্মাণে এখন পর্যন্ত ১০০ কোটি মার্কিন ডলারেরও বেশি ব্যয় হয়েছে। দীর্ঘ এক দশকেরও বেশি সময় ধরে মিউজিয়ামটির নির্মাণ কাজ চলছে। কোভিড-১৯ মহামারির মতো নানা কারণে এর উদ্বোধন বারবার পিছিয়েছে।

মিউজিয়াম কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মিউজিয়ামে মোট ১ লাখেরও বেশি প্রাচীন মিশরীয় নিদর্শন প্রদর্শন করা হবে। ট্রায়াল রান মিউজিয়ামটির পূর্ণ উদ্বোধনের প্রস্তুতি হিসেবে কাজ করবে। এতে সৃষ্ট সমস্যাগুলোর সমাধান খোঁজা সহজ হবে। মিউজিয়ামের সহকারী মহাপরিচালক আল-তায়েব আব্বাস এ তথ্য জানিয়েছেন।

১২টি গ্যালারিতে মিশরের সমাজ, ধর্ম ও বিশ্বাস নিয়ে প্রদর্শনী হবে। গ্যালারিগুলোকে প্রাচীন মিশরের বিভিন্ন যুগ অনুযায়ী ভাগ করা হয়েছে। এর প্রতিটি গ্যালারিতে সেই যুগের হাজার হাজার নিদর্শন প্রদর্শিত হবে। প্রদর্শনীতে থার্ড ইন্টারমিডিয়েট পিরিয়ড (খ্রিস্টপূর্ব ১০৭০-৬৬৪), লেট পিরিয়ড (খ্রিস্টপূর্ব ৬৬৪-৩৩২), গ্রিক-রোমান যুগ (খ্রিস্টপূর্ব ৩৩২-খ্রিস্টাব্দ ৩৯৫), নিউ কিংডম (খ্রিস্টপূর্ব ১৫৫০-১০৭০), মিডল কিংডম (খ্রিস্টপূর্ব ২০৩০-১৬৫০) এবং ওল্ড কিংডমের (খ্রিস্টপূর্ব ২৬৪৯-২১৩০) নিদর্শন প্রদর্শিত হবে।

মিউজিয়ামের কিছু অংশ ২০২২ সাল থেকে সীমিত দর্শনার্থীদের জন্য খোলা ছিল। কানাডার পর্যটক অড পোরসেডে এবং কোস্টারিকান পর্যটক জর্জ লিকানো মিউজিয়ামটির প্রশংসা করে বলেন, এটি মিশরীয় সভ্যতার সম্পর্কে অনেক নতুন তথ্য জানতে সাহায্য করছে।

মিউজিয়ামের ছয়তলা উঁচু গ্র্যান্ড সিঁড়ি থেকে গিজার পিরামিড দেখা যায়। সেই অংশটি এরই মধ্যে দর্শকদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। এখানে বিভিন্ন প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন যেমন সারকোফেগাস ও ভাস্কর্য প্রদর্শিত হচ্ছে। কিং তুতানখামেনের ধন-সম্পদ নিয়ে একটি বিশেষ গ্যালারি পরবর্তী পর্যায়ে খোলা হবে।

মিউজিয়ামের গ্যালারিগুলোতে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। এতে মাল্টিমিডিয়া প্রদর্শনীর মাধ্যমে প্রাচীন মিশরের রাজা ও জনগণের জীবন সম্পর্কে ব্যাখ্যা দেয়া হবে। এক গ্যালারিতে ভার্চুয়াল রিয়ালিটি ব্যবহার করে মিশরের সমাধি ও মৃতদেহ সৎকার প্রথার বিবর্তন তুলে ধরা হবে।

মিউজিয়ামের পুনঃস্থাপন এবং প্রত্নতত্ত্ব স্থানান্তরের পরিচালক ইসা জিদান জানান, এটি কেবল একটি প্রত্নতাত্ত্বিক প্রদর্শনীর স্থান নয়। বরং শিশুদের জন্য মিশরের ইতিহাস শেখার একটি সুযোগ। এটি পুরো বিশ্বের জন্য একটি উপহার।

আরও