রাজনৈতিক মনোবিজ্ঞান
সংকটে কখনো কখনো গভীর চিন্তার সূত্রপাত ও দীর্ঘস্থায়ী পরিবর্তনেরও সুযোগ সৃষ্টি হয়। এ সংকটের ক্রান্তিকালে সংস্কার নিয়ে চারদিকে আলোচনা হচ্ছে; সন্দেহ নেই, এ দেশের জন্য সংস্কার অতীব প্রয়োজন। কিন্তু আমরা হয়তো অনিচ্ছাকৃতভাবেও কোনো কোনো ছোট কিন্তু অর্থপূর্ণ অথচ অদৃশ্য, অস্পৃশ্য অথচ অনুভূত সংস্কারের বিষয়টি উপেক্ষা করে থাকি। বিশেষত পণ্ডিতরা যখন দৃশ্যমান বড় বড় সমস্যার জটিল তত্ত্ব ও তথ্যের সন্ধানে এবং সমাধানের চিন্তায় ব্যস্ত! তখন কিছু কিছু বিষয় উপেক্ষিত থেকে যায় যা সমস্যা বলেই মনে হয় না। আমরা ভুলে যাই যে ‘ছোট ছোট কব্জাই বড় বড় দরজা খুলে দেয়। এ ছোট ছোট, সমাধান না করা সমস্যাগুলোই একসময় অনেক বড় সমস্যা হয়ে ওঠে। প্রধান উপদেষ্টাও একবার বলেছিলেন, ‘ছোট জিনিসগুলিই উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন করে’।
নেতা ও নীতিনির্ধারকদের মানসিকতা একটি জাতি গঠনের প্রধান স্তম্ভ, দেশের শক্তি নির্ভর করে তাদের উদার নৈতিকতা ও দূরদর্শিতায়। প্রবাদে আছে, ‘একটি জাহাজের কাপ্তান তার গন্তব্য পরিচালনা করে।’ নেতৃত্বের গুণমান রাজনৈতিক অধ্যয়নের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ শৃঙ্খলা ও বিষয়। অথচ নেতা ও নীতিনির্ধারকদের রাজনৈতিক মনোবিজ্ঞান নিয়ে অধ্যয়ন ও অনুশীলন করাকে আমরা অত্যন্ত অবহেলা করে আসছি। রাজনৈতিক মনোবিজ্ঞান এ দেশে খুবই কম মনোযোগ পেয়েছে বা হয়তো একেবারেই পায়নি। এটি একটি এমন একটি ক্ষেত্র যা মনস্তাত্ত্বিক লেন্সের মাধ্যমে রাজনীতি ও রাজনৈতিক নেতা এবং তাদের সহযোগী সরকারি কর্তাব্যক্তিদের আচরণ অধ্যয়ন করে। এটি একটি আন্তঃবিভাগীয় ক্ষেত্র যা রাষ্ট্রবিজ্ঞান, অর্থনীতি, জনপ্রশাসন, যোগাযোগ দক্ষতা, ‘ই কিউ’ এবং শিক্ষাসহ অন্য অনেক সামাজিক বিজ্ঞান থেকে আকৃষ্ট হয়। যদিও রাষ্ট্র বা রাজনৈতিক বিজ্ঞান প্রাথমিকভাবে প্রতিষ্ঠান এবং শাসন ব্যবস্থার ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে, রাজনৈতিক মনোবিজ্ঞান নেতৃত্বের সিদ্ধান্তগুলোকে আকৃতি দেয় এমন ব্যক্তিগত প্রেরণা ও আচরণগুলো খুঁজে বের করে।
বর্তমান সরকার যখন শুরুতেই প্লাস্টিক বোতলজাত পানি পরিহার করে স্বাস্থ্য ও পরিবেশবান্ধব উপায়ে পানি পান করার ঘোষণা দেয়, মেঘাচ্ছন্ন রাজনৈতিক পরিমণ্ডলেও মানুষ নৈতিকতা ও আদর্শের মধুর স্বাদ পায়। যখন শীতকালীন সময়ে সরকারি অফিসে ‘এসিগুলো’ বন্ধ রাখার নির্দেশ আসে, মানুষ ক্ষমতায় আসীন কর্মকর্তাদের বিশ্বাস করতে শুরু করে। অর্থাৎ বলতে চাইছি, জনগণের সঠিক মানসিকতা গঠনে এসব নৈতিক মূল্যবোধকে স্থান দেয়ার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে। এ নিয়ে কিছু প্রস্তাব দিতেই এ লেখার অবতারণা। কিন্তু সমস্যা ও সংঘাতে ভরা এ দেশে গোড়াতেই নৈতিকতার চর্চা করা কেন এত প্রয়োজন?
এটা সত্য যে সঠিক ও টেকসই সংস্কার জনবান্ধব সরকারের অধীনে একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া, কোনো স্বল্প সময়ের প্রক্রিয়া নয়। কিন্তু সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, এ সংস্কারগুলো কারা করছে? স্টিয়ারিং হুইলের পেছনে থাকা গাড়িচালকরা যদি যুক্তির সঙ্গে উদারতা-সরলতা এবং নৈতিক স্বচ্ছতা ছাড়া গাড়ি চালাতে যান, তাদের যাত্রা শেষ হবে ভুল গন্তব্যে। তারা প্রজ্ঞাবান না হলে, অর্থের বাহাদুরি বা বিদ্যার এক ঝুড়ি সার্টিফিকেটের অহংকার কেবল গাড়িরই ক্ষতি করবে না! বাইরেও চতুর্দিকে প্রসারিত হবে। জনগণ যেন গাড়িচালকদের বাইরের আকর্ষণীয় পোশাক দেখে আর ভুল না করে, তা থেকে সতর্ক থাকা প্রয়োজন। তাদের সহানুভূতিহীন যোগ্যতার সুবাদে শুধু যানবাহনটাই ঝুঁকির মধ্যে থাকে না, দেশের সর্বসাধারণও হন ক্ষতিগ্রস্ত। বিশেষত অতিদরিদ্র ও অসহায়রা সম্মুখীন হতে পারেন ব্যাপক ধ্বংসের। কিছু লোকের কাছে এটি শুধু বর্ণমালার অক্ষরে সাজানো তাত্ত্বিক মতাদর্শের মতো শোনাতে পারে, তবে ইতিহাসে দেখা গেছে যে নীতিনির্ধারক নেতাদের জন্য ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে নৈতিকতা ও বৈধতার উপলব্ধি শুধু চ্যালেঞ্জিংই নয়, হতে পারে সমালোচনামূলকও। যেখানে তার নাগরিকরা বৈচিত্র্যকে মূল্য দেয় এবং সম্প্রদায়ের বোধ জাগিয়ে তোলে, সেখানেই সম্মান করা সহজ হয়ে ওঠে আইনের শাসনকে।
সত্যের সন্ধানে
রাজনৈতিক নেতৃত্বের নিজ নিজ জটিলতাগুলো প্রায়ই উপেক্ষা করা হয়, বিশেষ করে যখন অর্থনৈতিক নীতি এবং বিভিন্ন মতাদর্শের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হয়। ফলস্বরূপ রাজনৈতিক নেতৃত্বে নৈতিকতার ভূমিকা এবং রাজনৈতিক নেতাদের বৈজ্ঞানিক মানসিক অন্বেষণ ও বিশ্লেষণ করা থেকে আমরা বরাবরই দূরে থাকি। যে দেশে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিশু ও মহিলা অপুষ্টি ও বিশাল সর্বজনীন অপর্যাপ্ত সাক্ষরতার স্তরে ভুগছে, ভাবতে অবাক লাগে, সেখানে নেতাদের ও সরকারি কার্যক্রমে জড়িতদের জন্য উল্লেখযোগ্য অমানবিক ব্যয় বরাদ্দ দেখে। কর্মকর্তাদের দেয়া ব্যক্তিগত অপ্রত্যাশিত সুযোগ-সুবিধাকে ক্ষমা করা অগ্রহণযোগ্য হয়ে ওঠে। বিশেষত ক্ষমতাসীন নেতাদের ও উচ্চ সরকারি কর্মকর্তাদের বিলাসী ব্যয়বহুল গাড়ি, বাসস্থান, বিভিন্ন অজরুরি খাতে আর্থিক সহায়তা গত এক দশকে এক অচিন্তনীয় পর্যায়ে চলে গেছে। এটা শুধু অর্থনৈতিক বিষয়ই নয়, এটা নৈতিক দুর্নীতি ও সামাজিক বৈষম্যের সূচনাকে উৎসাহিত করে। ছোট-বড় সবাইকে উসকে দেয় অনৈতিক হওয়ার জন্য। জনগণের কষ্টের উপার্জিত অর্থের বিনিময়ে এসব ভোগবিলাসিতা শেষ হয় ব্যাংক লুটের পর্ব দিয়ে। এ সংস্থানগুলো কেবল আমাদের অর্থনীতিকে চাপ দেয় না, আরো গুরুত্বপূর্ণভাবে আমাদের সমাজের নৈতিক কাঠামোকে দুর্বল করে। সৎ শ্রম, বিনয়, উচ্চ চিন্তাভাবনা ও জ্ঞানের সংস্কৃতিকে ক্ষুণ্ন করে যা আমরা নতুন প্রজন্মকে শেখার কথা বলি। সাধারণ জনগণ জানেও না কেমন ব্যয় হচ্ছে এসবের পেছনে। এটা সত্যি অকল্পনীয় যে সরকারি নেতারা ও কর্মকর্তারা এখনো তাদের জীবনযাত্রার জন্য অসাধারণভাবে ব্যয় করে চলেছেন যখন অনেক নাগরিক বিশুদ্ধ পানি, খাদ্য, আশ্রয়, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার মতো প্রয়োজনীয়তা মেটাতে প্রতিদিন সংগ্রাম করে। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় শীর্ষ নীতিনির্ধারকরা নিজেদের জন্য যে অসংখ্য অপ্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা চালু করেছেন, যা আমাদের মতো একটি দেশের জন্য বিশেষভাবে আপত্তিকর এবং সম্পদবণ্টনের আশপাশের সামাজিক সম্প্রীতিকে আরো ধ্বংস করেছে। আমরা যে রাজনৈতিক অস্থিরতার মুখোমুখি হই তার কারণও বৈষম্য থেকেই উদ্ভূত হয়। নেতা ও নীতিনির্ধারক যারা এ সমস্যাগুলো সমাধান করবেন বলে মনে করা হয়েছিল, তারা তাদের সম্পদবৈষম্য বাড়িয়ে এবং বিলাসিতা প্রদর্শনচর্চায় দেশ সেবার দায়িত্ব থেকে চলে গেছেন অনেক অনেক দূরে। আসলে এ উল্লেখযোগ্য বিষয়গুলো অনেক তাৎপর্যপূর্ণ, দেশ ও দশের বৃহত্তর স্বার্থে উপেক্ষা করা যায় না।
নৈতিকতার অর্থনীতি
নেতা ও নীতিনির্ধারকদের ছোট ছোট কার্যক্রম তুচ্ছ মনে হতে পারে, কিন্তু তাদের সহজ-সরল জীবনধারা ও নম্রতার সঙ্গে সক্রিয়তা, জনগণের জন্য দীর্ঘমেয়াদি ইতিবাচক প্রভাব ও গভীর মান নির্ধারণ করে। নৈতিকতা হলো যেকোনো উন্নতিশীল সমাজের ভিত্তি। দেখা যাচ্ছে, মানবিক মূল্যবোধকে লালন না করে, বিদ্যাজীবী ও আইনপ্রণেতাদের তৈরি করা ‘আইন ও নিয়মকানুন’ দেশে দেশে শৃঙ্খলার শিকড় ধরে রাখতে সফল হচ্ছে না। প্রবাদ বলে, ‘আইন ছোট সমস্যা ধরতে পারে কিন্তু বৃহত্তর সমস্যাকে ঢেকে দেয়’। উদারতা ও নৈতিকতা ছাড়া ভালো আইন অকেজো। সমাজ বিজ্ঞানীরা বলেন, নৈতিকতার বাস্তব ভিত্তি হলো সহানুভূতি বা বিবেচনা। আমরা দেখেছি, নৈতিক কম্পাস ছাড়াই শুধু আইনের কার্যকারিতা সীমিত এবং হৃদয়ে যখন ন্যায়বিচার থাকে না, তখন আইনগুলো ভিন্ন মাত্রার মুখোশ হয়ে ওঠে। এ ধরনের পরিবেশে, ছোট ছোট মানবিক মূল্যবোধর চর্চা ও অনুশীলনের প্রচলিত এবং উদ্ভাবনী পথ নিয়ে কথা বলার এখনই সময়। কারণ বিষয়টি সামাজিক উত্তেজনা, দ্বন্দ্ব ও বিভাজনগুলো হ্রাস করতে পারে, যা আরো স্থিতিশীল ও সুরেলা সমাজের অনুমতি দেয়।
নেতা ও নীতিনির্ধারকদের বাসস্থান মানসিকতা গঠনের গুরুত্বপূর্ণ স্থান। ‘দয়া-ভালোবাসা ও নিষ্ঠুর মানসিকতা উভয়ই ঘর থেকেই সাধারণত শুরু হয়।’ নেতারা তাদের নিজের ঘরে যে মূল্যবোধগুলো বজায় রাখেন তা প্রায়ই সমাজে নিয়ে আসা নীতিগুলোয় প্রতিফলিত হয়। ঘর নিছক কোনো স্থান নয়। ঘরে ফিরে কেউ যদি দেখেন যে পরিবারের লোকগুলোর মাঝে কিছু গড়বড় হয়ে যাচ্ছে, তখন বিষয়টি যথাযথ গুরুত্বের সঙ্গে মোকাবেলা করা উচিত। অতীতে দেখেছি, বারবার গুরুত্বপূর্ণ নেতা, উপনেতা ও প্রভাবশালী আমলাদের জীবনযাপনের অসংগতি দেশ ও জনগণকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছে। মনস্তাত্ত্বিক বিজ্ঞান সর্বদা ব্যাখ্যা করে এসেছে যে ঘরের স্থিতিশীলতা ও সহমর্মিতায় ভরা পরিবেশ বৃহত্তর দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে মানুষকে গভীরভাবে প্রভাবিত করে। আমরা অতীতে এও দেখেছি, নিজের ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় চারপাশের প্রভাবে ছোট ছোট চিন্তা ও কুকর্ম দিয়ে শুরু করে, ধীরে ধীরে এসব ব্যস্ত মানুষ খারাপ ও ভয়ংকর প্রলোভনে ডুবে গেছে। দুঃখজনক হলেও সত্য যে সরলতা ও নৈতিক মূল্যবোধকে পাশ কাটিয়ে বর্তমান অভিজ্ঞ প্রজন্মের অধিকাংশের ‘খ্যাতি ও উচ্চ জীবনযাপন’ সুযোগের হাতছানি অগ্রাহ্য করার শক্তি অত্যন্ত দুর্বল এবং এ প্রজন্মের প্রতিনিধিরাই মূলত গাড়িচালকের আসনে। সামাজিক মর্যাদা অর্জনের তাগিদে অনিয়ন্ত্রিত জীবনধারা মানুষকে দুর্নীতির দিকে নিয়ে যায়। জাতির এ সন্ধিক্ষণে প্রভাবশালীদের ব্যক্তিগত ও ইতিবাচক মনস্তত্ত্বের গুরুত্ব অসীম, যেমন ‘বিন্দু বিন্দু পরিষ্কার জল দিয়ে একটি সরোবরের স্বচ্ছ স্থিতিশীলতা তৈরি হয়’। এটা যৌথ দায়িত্ব; পরিবর্তনের এ অভিন্ন লক্ষ্যের অংশীদার আমরা সবাই।
ঘরে যেমন, বাইরেও তেমন
যেকোনো আন্তরিক সংস্কারের মূল ভিত্তি হচ্ছে যথাযথ মানসিকতা। দুর্ভাগ্য হলো, আদর্শ জাতি গঠনে আমাদের যে নৈতিক মূল্যবোধ থাকা দরকার, আমরা তা যথাযথভাবে লালন করতে পারিনি। আমাদের দৃষ্টিও খুব সীমাবদ্ধ। শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের গুরুত্ব অনুধাবন করলেও অতীতের নেতারা ও নীতিপ্রণেতাদের ব্যক্তিগত মনোভাব ও পরিবারের জীবনধারায় দেশ উপযোগী ইতিবাচক পরিবর্তন নিয়ে আসতে পারেননি। বিশেষ করে দেখা গেছে, প্রাপ্তির সঙ্গে সঙ্গে যে দায়িত্ব মানুষের কাঁধে বর্তায় সেই দায়িত্ব তারা প্রাপ্য ভেবে অবহেলা করে। এটা গুরুতর; বিষয়টি আমলে নিতে হবে।
বাইরের কাজের সঙ্গে পারিবারিক জীবনের নিবিড় সংযোগ আছে; বিষয়টি অবহেলা করা হলে তা দ্রুতই দুষ্টচক্রে পর্যবসিত হয়। ঘরের মানুষ উদারভাবে সহায়তা না করলে এসব মানুষের পক্ষে অনুপ্রাণিত হওয়া ও কার্যকরভাবে কাজ করা খুবই চ্যালেঞ্জিং। শীর্ষ কর্তাদের জন্য এ বিষয়টি বিশেষভাবে সত্য, যাদের অনেক চাপ নিয়ে কাজ করতে হয়। পরিবারের গতিপ্রকৃতি ঠিকঠাক পরিচালিত করতে না পারা এবং সেখানে ক্ষতিকর সাংস্কৃতিক রীতিনীতি বা চর্চা রোধ করতে না পারা অনেক ক্ষেত্রেই আমাদের নেতারা ও নীতিপ্রণেতাদের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা হিসেবে চিহ্নিত করা যায়।
পরিবারের ভেতরে দূষিত মনস্তাত্ত্বিক পরিবেশ থাকলে জননেতার কার্যকারিতা অনেকাংশে ব্যাহত হতে পারে। ইতিহাস বলে, অনেক কুখ্যাত নেতার অনমনীয় মনোভাব, অতিমাত্রায় নিয়ন্ত্রণকামিতা ও সহানুভূতির অভাব তাদের পারিবারিক পরিবেশের মধ্যেই নিহিত। আরো দেখা যায়, পারিবারিক ও বন্ধু মহলের অদৃশ্য চাপে মানুষ দুর্নীতির দিকে ধাবিত হয়। ফলে জনস্বার্থের সঙ্গে ব্যক্তি স্বার্থের সংঘাত হয়। সেজন্য এ ব্যক্তিদের স্ত্রী, সন্তান ও ঘনিষ্ঠ বন্ধু-আত্মীয়স্বজনের কার্যক্রম চূড়ান্ত স্বচ্ছতার সঙ্গে খতিয়ে দেখা উচিত। বিষয়টি রূঢ় এমনকি অযৌক্তিক শোনালেও শীর্ষ নেতৃত্বের অতীত যে ইতিহাস, তাতে এর অন্যথা হওয়ার অবকাশ নেই। অতীতে আমরা যেভাবে হতাশ হয়েছি, তার আলোকে বলা দরকার, এ মানুষের পরিবারের সদস্যরা বিদেশে থাকলেও তাদের নজরদারিতে রাখা উচিত।
[বাকি অংশ আগামীকাল]
ডা. রুবাইয়ুল মুর্শেদ: লেখক ও স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞ;
প্রতিষ্ঠাতা প্রধান, সম্মান ফাউন্ডেশন