দিনাজপুরের হিলিতে সপ্তাহের ব্যবধানে আবারো বেড়েছে আলুর দাম। নিম্নমুখী সরবরাহকে এর পেছনে দায়ী করছেন ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, ভারত থেকে আলু আমদানি অব্যাহত আছে। কিন্তু স্থানীয় কৃষকরা মজুদ করে রেখে কৃত্রিম সংকট তৈরি করছে। এ কারণে দাম না কমে উল্টো বাড়ছে। হিলি বাজারের তথ্য বলছে, সপ্তাহের ব্যবধানে হিলিতে আলুর দাম বেড়েছে কেজিতে ৫-৬ টাকা।
বর্তমানে কাটিনাল জাতের আলু বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা কেজি দরে, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ২৪ টাকা। দেশী গুটি জাতের আলু বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৩৬ টাকায়, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৩০-৩২ টাকা। সরকারিভাবে মূল্য নির্ধারণ করে দেয়া হলেও বাজারে সে দামে আলু পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ ক্রেতাদের।
সিদ্দিক হোসেন নামে এক ক্রেতা বলেন, ‘খবরে দেখলাম সরকার আলুর দর বেঁধে দিয়েছে। কিন্তু সে দামে কিনতে পাওয়া যাচ্ছে না।’
হিলি বাজারের আলু বিক্রেতা মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘অধিকাংশ কৃষক তাদের উৎপাদিত আলু বাজারে বিক্রি না করে মজুদ করে রাখছেন। ফলে মোকামগুলোয় সরবরাহ কমে দাম বাড়ছে। এছাড়া ভারত থেকে আমদানীকৃত আলুর দাম বেশি, স্বাদও কিছুটা কম। ফলে আমদানি অব্যাহত থাকলেও দামে প্রভাব পড়ছে না।’
হিলি স্থলবন্দরের আলু আমদানিকারক সাহাবুল ইসলাম বলেন, ‘দেশের বাজারে আলু সরবরাহ স্বাভাবিক ও দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে ১ ফেব্রুয়ারি ভারত থেকে আমদানির অনুমতি দেয় সরকার। আমদানিকারকরা ৩ ফেব্রুয়ারি আমদানি শুরু করেন। ভারত থেকে বন্দর পর্যন্ত আমাদের পড়তা পড়ছে কেজিতে ২৭-২৮ টাকার মতো।
তিনি আরো জানান, ভারত থেকে আমদানির খবরে দেশী আলুর দাম কমে কেজিপ্রতি ২০ টাকায় নেমে গিয়েছিল। এতে আমদানি করে লোকসানের মুখে পড়েন ব্যবসায়ীরা। ফলশ্রুতিকে চারদিন পরই আমদানি বন্ধ হয়ে যায়। তবে সম্প্রতি পণ্যটির দেশীয় বাজার ফের ঊর্ধ্বমুখী হয়ে উঠায় আবারো আমদানি শুরু করেছেন ব্যবসায়ীরা।
হিলি স্থলবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন বলেন, ‘এক মাস বন্ধের পর ৯ মার্চ আবারো ভারত থেকে আলু আমদানি শুরু হয়েছে। এখন পর্যন্ত বন্দর দিয়ে তিনদিনে সাত ট্রাকে ১৫৬ টন আলু আমদানি হয়েছে।’
প্রসঙ্গত, সরবরাহ কমার অজুহাতে দাম ঊর্ধ্বমুখী হয়ে উঠলে গত বছরের ৩০ অক্টোবর আলু আমদানির অনুমতি দেয় সরকার। দুই দফায় মেয়াদ বাড়িয়ে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়। পরে সময়সীমা শেষ হওয়ায় ১৫ ডিসেম্বর থেকে আলু আমদানি বন্ধ ছিল। পরে আবারো পণ্যটির বাজার চড়া হলে ১ ফেব্রুয়ারি আমদানির অনুমতি দেয় সরকার। ৩ ফেব্রুয়ারি বন্দর দিয়ে আলু আমদানি শুরু হয়।