রোবোট্যাক্সি ‘সাইবারক্যাবের’ উন্মোচন করেছেন টেসলার সিইও ইলন মাস্ক। ক্যালিফোর্নিয়ায় এক জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানে সম্প্রতি নতুন প্রজন্মের এ পরিবহন সম্পর্কে বিস্তারিত জানান তিনি। ইলন মাস্ক জানান, তার কোম্পানির স্বয়ংক্রিয় গাড়িগুলো স্টিয়ারিং ছাড়াই চলবে, পার্কিং লট পরিণত হবে পার্কে এবং রোবট ও মানুষ একসঙ্গে ঘুরে বেড়াবে। এসব কিছুই কয়েক বছরের মধ্যে বাস্তবায়ন হবে বলে তিনি প্রতিশ্রুতি দেন। খবর সিএনএন।
ইলন মাস্ক প্রতিশ্রুত সময়সীমা পূরণের ক্ষেত্রে আশাবাদী হলেও তার আগের পূর্বাভাসগুলো পূরণ হতে বছরের পর বছর লেগেছে। পাঁচ বছর আগে তিনি জানিয়েছিলেন, রোবোট্যাক্সির বহর মাত্র এক বছরের মধ্যে রাস্তায় থাকবে। গত বৃহস্পতিবার ওয়ার্নার ব্রাদার্স স্টুডিওতে আয়োজিত অনুষ্ঠানে স্বীকৃতোক্তির মতো তিনি বলেন, ‘সময়সীমা নিয়ে আমি একটু বেশি আশাবাদী হয়ে যাই।’
তবে বিনিয়োগকারীরা রোবোট্যাক্সি উন্মোচন নিয়ে খুব একটা উচ্ছ্বসিত নন। কারণ টেসলার সময়সীমা পূরণের ব্যর্থতা। শুক্রবার বিকাল নাগাদ কোম্পানিটির শেয়ারদর কমে ৮ শতাংশের বেশি।
টেসলা দীর্ঘদিন ধরেই ফুল সেলফ ড্রাইভিং বা এফএসডির কথা বলে আসছে, যার দাম বর্তমানে ৮ হাজার ডলার। গাড়ির একটি অপশন হিসেবে দেয়া হয় এফএসডি। তবে টেসলা বলেছে, চালকদের গাড়ির নিয়ন্ত্রণ নিতে প্রস্তুত থাকতে হবে, এমনকি এফএসডি মোডেরও।
সাইবারক্যাব উন্মোচন করে মাস্ক জানান, এটি কোনো স্টিয়ারিং হুইল বা অ্যাক্সিলারেটর বা ব্রেক প্যাডেল ছাড়াই চালানোর জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। ২০২৬ সালের মধ্যে এর উৎপাদন শুরুর কথা। এ মডেল আরামদায়ক ছোট লাউঞ্জের মতো হবে বলেও জানান মাস্ক।
তিনি আরো জানান, ‘রোবোট্যাক্সি অন্যান্য বিদ্যুচ্চালিত গাড়ির মতো হবে না, এতে কোনো প্লাগ ব্যবহার করা হবে না, বরং একটি চার্জিং প্লেটের ওপর দিয়ে গাড়ি চালিয়ে চার্জ করা হবে। ২০ জন যাত্রী বা পণ্য বহন করতে পারে, এমন একটি বড় গাড়িও তিনি দেখিয়েছেন। সেটিকে ‘রোবোভ্যান’ নাম দিয়েছেন মাস্ক। তবে গাড়িটি কবে বাজারে আসবে, তা উল্লেখ করেননি।
মাস্ক জানান, সাইবারক্যাব ট্যাক্সি হিসেবে ভাড়া করা যাবে। যাত্রীরা স্মার্টফোনের অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে গাড়িটি ভাড়া করতে পারবেন। রোবোট্যাক্সিগুলো টেসলা ক্রেতাদের খরচ কমাবে। কারণ এসব গাড়ির মালিকরা নিজে না চালানোর সময় গাড়িগুলো টেসলার সার্ভিস ব্যবহার করে ভাড়া দিতে পারবেন।
পরিকল্পিত এ রোবোট্যাক্সি পরিষেবা শুধু উবারের মতো মানবচালিত পরিষেবার সঙ্গেই নয়, অন্যান্য চালকবিহীন পরিষেবার সঙ্গেও প্রতিযোগিতা করবে।
ডিপওয়াটার অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের ম্যানেজিং পার্টনার জিন মুনস্টার গত সপ্তাহের শুরুতে বলেছিলেন, ‘৩ শতাংশ সময় এ গাড়িগুলোয় মানুষের নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজন পড়বে। ৯৭ শতাংশ পর্যন্ত পৌঁছনো মানে মনে হতে পারে যে আমরা প্রায় লক্ষ্যে পৌঁছে গেছি, কিন্তু বাস্তবে তা নয়। এটি ৯৯ শতাংশের ওপর হতে হবে। ৯৫ বা ৯৭ থেকে ৯৯ শতাংশে যাওয়া খুব কঠিন। আমি মনে করি, প্রযুক্তিটি সঠিকভাবে প্রস্তুত করতে দুই বছর সময় লাগবে।’
সাইবারক্যাব দুই বছরের মধ্যে পাওয়া যাবে, মাস্কের এমন প্রতিশ্রুতির বিষয়ে মুনস্টার উল্লেখ করেন, ‘সাইবারট্রাক পিকআপটি উন্মোচন থেকে উৎপাদনে যেতে প্রায় ৪৮ মাস সময় লেগেছিল। অন্যান্য কিছু গাড়ি, যেমন বিদ্যুচ্চালিত সেমি ট্রাক ছয় বছরেরও বেশি আগে উন্মোচন হলেও এখনো উৎপাদন এখনো শুরু হয়নি।’