ইআইএর প্রতিবেদন

ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা সত্ত্বেও বিশ্বব্যাপী কমতে পারে জ্বালানি তেলের দাম

আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম চলতি বছর আরো কমতে পারে। আগামী বছরও এ নিম্নমুখিতা অব্যাহত থাকবে।

আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম চলতি বছর আরো কমতে পারে। আগামী বছরও এ নিম্নমুখিতা অব্যাহত থাকবে। গত মঙ্গলবার চলতি ও আগামী বছরের জন্য জ্বালানি তেলের পূর্বাভাস সংশোধন করে এ তথ্য জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের এনার্জি ইনফরমেশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (ইআইএ)।

‘‌অক্টোবর শর্ট-টার্ম এনার্জি আউটলুকে’ ইআইএ জানায়, চলতি বছর পণ্যটির দাম ব্যারেলপ্রতি প্রায় ২ ডলার ও আগামী বছর ৬ ডলার ৫০ সেন্ট কমতে পারে। এর মধ্যে চলতি বছর অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের আন্তর্জাতিক বাজার আদর্শ ব্রেন্টের দাম আগের পূর্বাভাসের তুলনায় ১ ডলার ৯১ সেন্ট কমতে পারে। ব্যারেলপ্রতি মূল্য নেমে যেতে পারে ৮০ ডলার ৮৯ সেন্টে। আগামী বছর পণ্যটির দাম আগের পূর্বাভাসের তুলনায় ৬ ডলার ৫০ সেন্ট কমে প্রতি ব্যারেলের মূল্য ৭৭ ডলার ৫৯ সেন্ট হতে পারে।

অন্যদিকে চলতি বছর মার্কিন বাজার আদর্শ ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েটের (ডব্লিউটিআই) দাম আগের পূর্বাভাসের তুলনায় কমতে পারে ১ ডলার ৮৯ সেন্ট। আগামী বছর তা ৬ ডলার ৫০ সেন্ট কমে ব্যারেলপ্রতি মূল্য হতে পারে ৭৩ ডলার ১৩ সেন্ট।

সংস্থাটির প্রতিবেদন অনুযায়ী,"মধ্যপ্রাচ্যে ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা বেড়েছে। কিন্তু এ প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়ার সময় পর্যন্ত জ্বালানি তেল সরবরাহ ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। এ কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমতে পারে বলে আমরা ধারণা করছি।

ইআইএ আরো জানায়, মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনৈতিক উত্তেজনার সম্ভাব্য সমাধানের কোনো সময়সীমা নেই। এ পরিস্থিতি চলমান থাকলে সরবরাহ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি। তবে একই সময় আমাদের মূল্যায়ন অনুযায়ী, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অপরিশোধিত জ্বালানি তেল উত্তোলনের সক্ষমতা রয়েছে। তাই সরবরাহ বিঘ্ন ঘটলে এসব প্লান্ট চালু করা যেতে পারে।

সংস্থাটি জানায়, ‌আগামী বছরের মাঝামাঝি সময়ে আমরা ওপেক প্লাসের উত্তোলন বাড়ানোর পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র, গায়ানা, ব্রাজিল ও কানাডায় উত্তোলন বৃদ্ধির প্রত্যাশা করছি।

ইআইএ চলতি বছরের জন্য বিশ্বব্যাপী অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের চাহিদার পূর্বাভাসও সংশোধন করেছে। চলতি বছর পণ্যটির চাহিদা আগের পূর্বাভাসের তুলনায় দৈনিক ৪০ হাজার ব্যারেল কমিয়েছে সংস্থাটি। এতে বৈশ্বিক চাহিদা ১০ কোটি ৩০ লাখ ৬০ হাজার ব্যারেলে দাঁড়াতে পারে। অন্যদিকে ২০২৫ সালের পূর্বাভাস দৈনিক ২ লাখ ৫০ হাজার ব্যারেল কমানো হয়েছে। এতে আগামী বছর বৈশ্বিক চাহিদা দৈনিক ১০ কোটি ৪৩ লাখ ৫০ হাজার ব্যারেল হতে পারে।

এদিকে আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম গতকালও নিম্নমুখী ছিল। গতকাল ব্রেন্টের দাম আগের দিনের তুলনায় ২৯ সেন্ট বা দশমিক ৪ শতাংশ কমেছে। ব্যারেলপ্রতি মূল্য নেমেছে ৭৯ ডলার ১১ সেন্টে। অন্যদিকে ডব্লিউটিআইয়ের দাম কমেছে আগের দিনের তুলনায় ২১ সেন্ট বা দশমিক ৩ শতাংশ। প্রতি ব্যারেলের মূল্য স্থির হয়েছে ৭৫ ডলার ৬৪ সেন্টে।

আইজির মার্কেট স্ট্র্যাটেজিস্ট কৌশলী ইয়েপ জুন রং বলেন, ‘ভূরাজনৈতিক উত্তেজনায় জ্বালানি তেলের দাম ঊর্ধ্বমুখী ছিল। তবে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের মজুদের ঊর্ধ্বমুখিতা ও যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ (ফেড) সুদহার ধীরে হ্রাসের সম্ভাবনা সাম্প্রতিক উত্থানকে থামিয়ে দিয়েছে।’

আরও