জর্জ ক্লার্ক একজন ‘টেন্ট মাস্টার’ হিসেবে পরিচিত। কারণ বড় কনসার্ট বা উৎসবে তিনি তাঁবু খাটানোর কাজ করেন। এবার নতুন চাকরিতে নাম লিখিয়েছেন তিনি। ‘টেন্ট মাস্টার’ থেকে হয়ে যাচ্ছেন পোস্টমাস্টার। এ কাজে চিঠিপত্রের হিসাবের পাশাপাশি পেঙ্গুইনের হিসাবও রাখতে হবে তাকে। তার নতুন কর্মস্থল হতে যাচ্ছে অ্যান্টার্কটিকা মহাদেশের গৌডিয়ার দ্বীপ। একটা ফুটবল মাঠের সমান এ দ্বীপে অবস্থিত একটি জাদুঘর ও পোস্ট অফিসে কাজ করতে হবে তাকে।
সম্প্রতি ক্লার্কসহ পাঁচজনের ছোট একটি দলকে নিয়োগ দিয়েছে যুক্তরাজ্যের অ্যান্টার্কটিক হেরিটেজ ট্রাস্ট। দাতব্য এ সংস্থা মহাদেশটির ঐতিহাসিক ব্রিটিশ ঘাঁটিগুলোর দেখভাল ও সংরক্ষণের কাজ করে। আগামী মাসে ক্লার্ক ছোট দলটির সঙ্গে পাঁচ মাসের জন্য ওই দ্বীপে যাবেন। এ সময় তাদের হিমশীতল তাপমাত্রায় জাদুঘরের দেখভাল, পেঙ্গুইনের সঙ্গে বসবাস ও তাদের গণনাসহ বন্যজীবন পর্যবেক্ষণ এবং ক্রুজ জাহাজে আসা দর্শনার্থীদের অভ্যর্থনা জানানোর কাজ করতে হবে।
চলতি বছরের শুরুর দিকে দ্য গার্ডিয়ানের একটি আর্টিকেল থেকে পোস্টমাস্টারের কাজ সম্পর্কে জানতে পারেন ইংল্যান্ডের ব্রিস্টল শহরের ৩৪ বছরের জর্জ ক্লার্ক। আগ্রহী হয়ে আবেদন করেন। এ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘মনে করেছিলাম নতুন ও রোমাঞ্চকর কিছু পেতে যাচ্ছি। এছাড়া আমার কাছে মনে হয়েছে, এ কাজে হারানোর কিছু নেই। আমি একটি দৃশ্য কল্পনা করেছি যে ঘুম থেকে উঠে অ্যান্টার্কটিকায় সকালের কফি উপভোগ করছি। এ সময় একটি তিমিও দেখা যেতে পারে। আমি আমার চিন্তাভাবনাকে প্রশস্ত রাখতে চাই। দেখা যাক ভাগ্য আমাকে কোথায় নিয়ে যায়।’
কাঠের তৈরি ছোট জাদুঘরে ক্রুজ জাহাজে করে যারা ঘুরতে আসেন তারা সেখানে চিঠি বা পোস্টকার্ড রেখে যান। জর্জ ক্লার্ক এসব চিঠি ও পোস্টকার্ডের দেখভাল করবেন। এসব ঠিকঠাক সংগ্রহ করে ডাকটিকিট সম্পর্কিত কাজ শেষ করে তিনি দ্বীপটি ঘেঁষে চলে যাওয়া জাহাজে করে নির্দিষ্ট ঠিকানায় পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা করবেন। জীবনধারণের মোটামুটি সব ব্যবস্থার পাশাপাশি বেজ স্টেশনে ইন্টারনেট সংযোগ রয়েছে। তবে দলের সদস্যরা খুব বেশি প্রয়োজন না হলে ইন্টারনেট ব্যবহার করেন না। তারা নতুন এক জীবনের অভিজ্ঞতা নিতে নিজেদের সঙ্গে কথা বলেন, বই পড়েন আর শিল্প চর্চা করেন। ক্লার্ক বলেন, ‘দূরবর্তী এ রকম একটি স্থানে থাকার আনন্দই হচ্ছে মূল পৃথিবী থেকে কিছু সময়ের জন্য বিচ্ছিন্ন হওয়া। তাই প্রতি সন্ধ্যায় মুঠোফোনে স্ক্রোল করতে হবে এ চিন্তা করতে হয় না।’ খবর দ্য গার্ডিয়ান