অবকাঠামোগত সমস্যা ও জলবায়ু পরিবর্তনজনিত জটিলতা মোকাবেলায় হিমশিম খাচ্ছে মধ্য এবং পশ্চিম আফ্রিকার দেশগুলো। এর মধ্যেও কিছু ক্ষেত্রে সেসব দেশ উদাহরণ হয়ে উঠেছে। এ অঞ্চলে ক্রমবর্ধমান ব্যবসার ওপরের দিকেই স্থান করে নিয়েছে সৌরবিদ্যুৎ কোম্পানিগুলো। যার কারণে আলো পৌঁছে যাচ্ছে দরিদ্রপীড়িত অঞ্চলগুলোয়। খবর এপি।
আফ্রিকান-মালিকানাধীন কোম্পানিগুলো এমন এলাকায় ব্যবসা করছে, যেখানে বেশির ভাগ মানুষ জাতীয় সঞ্চালন লাইন থেকে বিচ্ছিন্ন। এখানে বাতি থেকে টেলিভিশন, সব ধরনের বিদ্যুতের উৎস সৌরশক্তি। চাহিদা অনুসারে, গ্রাহকরা খরচ করে থাকেন সর্বনিম্ন ২০ থেকে হাজার হাজার ডলার পর্যন্ত।
বিশ্বের সর্বনিম্ন বিদ্যুতায়নের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে মধ্য ও পশ্চিম আফ্রিকার দেশগুলো। পশ্চিম আফ্রিকায় ২২ কোটি মানুষ বিদ্যুৎ ছাড়াই বসবাস করেন। কেরোসিন ও অন্যান্য জ্বালানির ওপর নির্ভর করায় এসব এলাকার বাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকিতে থাকে।
সর্বশেষ জাতিসংঘ জলবায়ু সম্মেলনে ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বে নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষমতা তিন গুণ করার লক্ষ্য নেয়া হয়েছে। পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায়, অন্য মহাদেশের তুলনায় আফ্রিকা খুব কমই কার্বন নিঃসরণের জন্য দায়ী। কিন্তু বিদ্যুৎ সরবরাহে নবায়নযোগ্য ও সাশ্রয়ী উপায় ব্যবহারে মহাদেশটি অন্যদের তুলনায় দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে।
এ বছরের শুরুর দিকে ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সি (আইএই) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, এ মহাদেশে ছোট ও মাঝারি আকারের সৌরবিদ্যুৎ কোম্পানিগুলো বাড়ি বাড়ি পৌঁছানোয় দ্রুত অগ্রগতি করছে। তবে ২০৩০ সালের মধ্যে সব আফ্রিকান বাড়ি ও ব্যবসায় পৌঁছনোর জন্য আরো বেশি বিনিয়োগ করতে হবে।
২০২৩ সালে আফ্রিকার যেসব কোম্পানি দ্রুত সম্প্রসারণ হয়েছিল সম্প্রতি তার একটি তালিকা প্রকাশ করেছে ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস। সেখানে শীর্ষ র্যাংকিংয়ে নাম লিখিয়েছে ইজি সোলার। স্থানীয় মালিকানাধীন কোম্পানিটি সিয়েরা লিওন ও লাইবেরিয়ায় বাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে সৌরবিদ্যুৎ স্থাপনে সাহায্য দিয়ে আসছে, যার আওতায় এসেছে সিয়েরা লিয়নের ১৬টি জেলার সব এবং লাইবেরিয়ার নয়টির মধ্যে সাতটি জেলা।
২০১৬ সালে চালু হওয়ার পর থেকে দেশ দুটির ১০ লাখের বেশি লোকের কাছে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছে ইজি সোলার, যা সিয়েরা লিয়ন ও লাইবেরিয়ার সম্মিলিত জনসংখ্যা ১ কোটি ৪০ লাখের উল্লেখযোগ্য একটি অংশ।
কঙ্গোর সৌরবিদ্যুৎ কোম্পানি অলটেক আফ্রিকার দ্রুততম কোম্পানির একটি হিসেবে স্থান পেয়েছে।৷ বিশ্বব্যাংকের মতে, কঙ্গোর জনসংখ্যার ২০ শতাংশেরও কম বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ পান। অলটেক এখন কঙ্গোর ২৬টি প্রদেশের মধ্যে ২৩টিতে কাজ করছে এবং বছরের শেষ নাগাদ বাকি প্রদেশে পৌঁছানোর আশা করছে। এর প্রতিষ্ঠাতারা জানান, অলটেক কঙ্গোয় সৌরচালিত ১০ লাখের বেশি পণ্য বিক্রি করেছেন।