জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) বৃহৎ করদাতা ইউনিটের (এলটিইউ) কর বিভাগকে চলতি অর্থবছরে রাজস্ব সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা দেয়া হয়েছে ৩৭ হাজার ৮০০ কোটি টাকা। এরই মধ্যে চার মাস পার হয়েছে। এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য দরকার যথেষ্ট জনবল। কিন্তু, গত মাসে জনবলের অধিকাংশই বদলি করা হয়েছে। জনবল সংকটে রাজস্ব সংগ্রহ ব্যাহত হচ্ছে বলে এলটিইউ সূত্রে জানা গেছে।
এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, এলটিইউ কর বিভাগের জন্য অনুমোদিত জনবলের মধ্যে একজন কর কমিশনার ও দুইজন অতিরিক্ত কর কমিশনার রয়েছেন। তবে, চারজন যুগ্ম কর কমিশনারের স্থলে রয়েছেন তিনজন। ১৯ জন উপ কর কমিশনারের স্থলে রয়েছেন মাত্র ১০ জন। সাতজন সহকারী কর কমিশনারের স্থলে রয়েছেন মাত্র একজন। বদলি হওয়া কর্মকর্তাদের স্থলে নতুন কয়েকজন কর্মকর্তা এলেও বাকি দপ্তরগুলো শূন্য রয়েছে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে এলটিইউর কর কমিশনার খাইরুল ইসলাম বণিক বার্তাকে বলেন, ‘দ্রুত জনবল দেয়া প্রয়োজন। নয়তো রাজস্ব সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যাঘাত ঘটতে পারে।’
এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, ব্যাংক, বিমা, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, ননব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠান, কোম্পানি ও ব্যক্তি খাতের বড় করদাতারা এখানকার করদাতা। নতুন কমিশনার যোগ দেয়ার পর বিতর্কিত বকেয়া আদায়ে করদাতার তালিকা করা শুরু হয়। ১৬টি টিম কাজ করে। বকেয়া আদায় শুরুও হয়েছে। এরমধ্যেই অনেক কর্মকর্তার বদলি আদেশ হয়।
এলটিইউ প্রকাশিত হ্যান্ডবুক ২০২৩ এর তথ্যানুযায়ী এখানকার করদাতার সংখ্যা ১ হাজার ৩১৩। এরমধ্যে ব্যাংক খাতে ৬৫, সাধারণ বিমা কোম্পানি ৪৮, জীবন বিমা কোম্পানি ৩৫, মার্চেন্ট ব্যাংক ৮১, লিজিং এবং ইনভেস্টমেন্ট ৩৯, টেলিকমিউনিকেশন ৬, ফুড অ্যান্ড বেভারেজ কোম্পানি ৭, গার্মেন্টস কোম্পানি ১৪, টেক্সটাইল ২২, মাল্টিপল প্রোডাক্টস ৯, ফার্মাসিউটিক্যালস ১৪, ম্যানুফ্যাকচারিং ৭৪, অন্যান্য ৪৭ করদাতাসহ মোট কোম্পানি করদাতা ৪৫৩। এছাড়া ব্যক্তি করদাতা ৮৬০ জনসহ মোট করদাতার সংখ্যা ১ হাজার ৩১৩।
এলটিইউ কর ইউনিট সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩-২৪ করবর্ষে সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা ৩৩ হাজার কোটি টাকার বিপরীতে আদায় করেছে প্রায় ২৯ হাজার কোটি টাকা। ২০২২-২০২৩ করবর্ষে সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা ২৯ হাজার কোটি টাকার বিপরীতে ২৫ হাজার ৮৫৮ কোটি টাকা আদায় হয়েছে। অর্থাৎ ২০২৩-২৪ অর্থবছরে আগের বছরের চেয়ে ১২ দশমিক ১৫ শতাংশ বেশি প্রবৃদ্ধি হয়েছে।