চলতি অর্থবছরের বাজেটে ব্যক্তি বিনিয়োগকারীদের মূলধনি মুনাফায় করারোপ করেছিল বিগত সরকার। এর প্রভাবে সে সময় পুঁজিবাজারে নেতিবাচক প্রভাব দেখা গেছে। সম্প্রতি পুঁজিবাজারকে চাঙ্গা করতে অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে মূলধনি মুনাফার ওপর আরোপিত করহার কমানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এর প্রভাবে টানা দুদিন ধরে দেশের পুঁজিবাজারে ঊর্ধ্বমুখিতা দেখা যাচ্ছে। গতকাল পুঁজিবাজারের সূচক বেড়েছে ২ শতাংশেরও বেশি। পাশাপাশি দৈনিক লেনদেন বেড়েছে প্রায় ৪৯ শতাংশ।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গতকাল লেনদেন শুরুর পর সূচকের ঊর্ধ্বমুখিতা দেখা গেলেও মাঝে মাঝে শেয়ার বিক্রির চাপে কিছুটা পয়েন্ট হারাতে দেখা গেছে। তবে দিন শেষে প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সার্বিক সূচক ডিএসইএক্স ১১২ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ১ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৩৬৫ পয়েন্ট। এছাড়া ডিএসইর অন্যান্য সূচকের মধ্যে শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস গতকাল দিন শেষে ২৯ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ৫১ শতাংশ বেড়ে ১ হাজার ১৯২ পয়েন্টে অবস্থান করছে। নির্বাচিত কোম্পানির সূচক ডিএস-৩০ দিনের ব্যবধানে ৩০ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৫৬ শতাংশ বেড়ে ১ হাজার ৯৬৮ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, মূলধনি মুনাফার ওপর করহার কমানোর কারণে পুঁজিবাজারে কিছুটা গতি ফিরে এসেছে। গতকাল কিছু বিনিয়োগকারীর মধ্যে শেয়ার বিক্রি করে মুনাফা তুলে নেয়ার প্রবণতা দেখা গেলেও অধিকাংশ বিনিয়োগকারীই শেয়ার কিনেছেন। এতে দিন শেষে বাজারে বড় উত্থান হয়েছে। পাশাপাশি লেনদেনও বেড়েছে। তবে পুঁজিবাজারের এ ঊর্ধ্বমুখিতা তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর প্রথম প্রান্তিকের আসন্ন আর্থিক ফলাফল এবং দেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার ওপর নির্ভর করবে।
গতকাল সূচকের উত্থানে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রেখেছে ইসলামী ব্যাংকের শেয়ার। ব্যাংকটির শেয়ারের কারণে সূচক বেড়েছে প্রায় ৩৮ পয়েন্ট। এছাড়া স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, রেনাটা, বীকন ফার্মাসিউটিক্যালস, বেস্ট হোল্ডিংস ও ব্র্যাক ব্যাংকের শেয়ারও সূচকের উত্থানে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে। এদিন ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৯৯টি কোম্পানি, মিউচুয়াল ফান্ড ও করপোরেট বন্ডের মধ্যে দিন শেষে দর বেড়েছে ৩০৪টির, কমেছে ৬৫টির আর অপরিবর্তিত ছিল ৩০টি সিকিউরিটিজের বাজারদর। গতকাল ডিএসইতে ৮৪০ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা আগের কার্যদিবসে ছিল ৫৬৫ কোটি টাকা।
খাতভিত্তিক লেনদেনচিত্রে দেখা যায়, গতকাল ডিএসইর মোট লেনদেনের ২১ দশমিক ৫ শতাংশ দখলে নিয়ে শীর্ষে অবস্থান করছে ওষুধ ও রসায়ন খাত। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৭ দশমিক ১ শতাংশ দখলে নিয়েছে ব্যাংক খাত। ৮ শতাংশ লেনদেনের ভিত্তিতে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে বস্ত্র খাত। ৬ দশমিক ৮ শতাংশ লেনদেনের ভিত্তিতে চতুর্থ অবস্থানে ছিল প্রকৌশল খাত। আর ৬ দশমিক ৬ শতাংশ লেনদেনের ভিত্তিতে পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাত।