বাংলাদেশ পাটকল কারখানার নিয়ন্ত্রণাধীন রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল কারখানার পর এবার বেসরকারি খাতে দেয়া হচ্ছে বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস করপোরেশনের তিন বস্ত্রকল। তিন কারখানা ইজারায় দিতে শিগগিরই টেন্ডার প্রক্রিয়ার কাজ শুরু করবে বিটিএমসি। ইজারার অনুমতি পাওয়া পাটকলগুলো হলো চট্টগ্রামের ভালিকা উলেন মিলস, সিলেট টেক্সটাইল মিলস ও কুড়িগ্রাম টেক্সটাইল মিলস।
সম্প্রতি বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. আলমগীর হোসেনের সই করা একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বিটিএমসির কারখানাগুলো বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় পুনরায় চালুর জন্য ইজারা দেয়া হবে। এর জন্য ইজারার শর্তাবলি, ইজারা পদ্ধতি ও ইজারা প্রস্তাব চূড়ান্ত করার জন্য ১০ সদস্যের একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় ওয়ার্কিং কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ ওয়ার্কিং কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (বস্ত্র) সুব্রত শিকদারকে।
জানতে চাইলে সুব্রত শিকদার বণিক বার্তাকে বলেন, ‘আন্তঃমন্ত্রণালয় ওয়ার্কিং কমিটির কাজ হচ্ছে ইজারার শর্তাবলি, ইজারার পদ্ধতি ও ইজারা প্রস্তাব চূড়ান্তকরণ। কিন্তু এ কাজের আগে বস্ত্র কলগুলো টেন্ডারে দিতে হবে। তারপর আসবে ওয়ার্কিং কমিটির কাজ। ইজারার বিপরীতে বিভিন্ন প্রস্তাব নিষ্পত্তির জন্য পরামর্শও দেবে কমিটি। বিজেএমসির পাটকলগুলো যেভাবে ইজারায় দেয়া হয়েছে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে এবং সবকিছু যাচাই-বাছাই করে, তবে ইজারার প্রক্রিয়া নির্দিষ্ট করবে কমিটি।’
তিনি আরো বলেন, ‘বিটিএমসির মালিকানাধীন ২৫ কারখানাই এখন বন্ধ আছে। প্রধানমন্ত্রী প্রাথমিকভাবে তিনটি বস্ত্রকল বেসরকারি খাতে দেয়ার জন্য অনুমোদন দিয়েছেন। আমরা সে উদ্দেশ্য নিয়েই কাজ করছি।’
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, বিটিএমসির ২৫টি মিলের ৬৩৬ দশমিক ৩৮ একর জমি অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে আছে। ২০১৪ সালের ১২ অক্টোবর বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় পরিদর্শনের সময় বিটিএমসির বন্ধ মিল চালুর বিষয়ে নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার পরিপ্রেক্ষিতে নানা উদ্যোগের পর ঢাকার ডেমরায় অবস্থিত আহমেদ বাওয়ানী টেক্সটাইল মিলস লিমিটেড ও গাজীপুরের টঙ্গীতে অবস্থিত কাদেরিয়া টেক্সটাইল মিলস লিমিটেড পিপিপি পদ্ধতিতে চালু করা সম্ভব হয়। কিন্তু করোনার সময় নানা আর্থিক সমস্যার কারণে মন্ত্রণালয়ের সে উদ্যোগও ভেস্তে যায়। সম্প্রতি বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। আলোচনায় চাপ প্রয়োগ করে বিক্রি হওয়া মিল চালুর বিষয়ে সুপারিশ করে সংসদীয় কমিটি।
জানতে চাইলে বিটিএমসির মুখ্য পরিচালন কর্মকর্তা মো. নূরুল আলম বলেন, ‘বিটিএমসির নিয়ন্ত্রণাধীন এখন ২৫টি মিল রয়েছে। তার মধ্যে তিনটি মিল ইজারায় দেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী সম্মতি দিয়েছেন। যথাযথ প্রক্রিয়ায় টেন্ডার দেয়ার পর মিলগুলো বেসরকারি খাতে ইজারা দেয়া হবে।’