মিরসরাই বিসিক শিল্পনগরী

প্লট বরাদ্দ শুরুর পাঁচ বছরে উৎপাদনে যেতে পেরেছে ৭ শিল্প-কারখানা

চট্টগ্রামের মিরসরাই বিসিক শিল্পনগরীতে ২০২০ সালে পরীক্ষামূলক উৎপাদনে যায় তিনটি শিল্পপ্রতিষ্ঠান।

চট্টগ্রামের মিরসরাই বিসিক শিল্পনগরীতে ২০২০ সালে পরীক্ষামূলক উৎপাদনে যায় তিনটি শিল্পপ্রতিষ্ঠান। এরপর ২০২২ সালে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদনে যায়এয়াকুব অটো রাইস মিল নামে একটি শিল্প-কারখানা। সর্বশেষ সাতটি শিল্প-কারখানা উৎপাদনে গেছে বলে নিশ্চিত করেছে কর্তৃপক্ষ।

বিসিক সূত্রে জানা গেছে, দেশের ৭৫তম মিরসরাই বিসিক শিল্পনগরীতে সবকটি কারখানা চালু হলে প্রায় পাঁচ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে। ১৫ দশমিক ৩২ একর জমির ওপর নির্মিত শিল্পনগরীতে ব্যয় হয়েছে ২৯ কোটি ২৫ লাখ টাকা। প্রকল্পের কাজ শেষ হয় ২০১৭ সালে। কাজ শেষ হওয়ার দুই বছর পর ২০১৯ সালে বরাদ্দের জন্য ৮৮টি প্লটের বিপরীতে ১১৪টি আবেদনপত্র জমা পড়ে। যাচাই-বাছাই শেষে ৮৮টি শিল্পোদ্যোক্তাকে প্লট বরাদ্দ দেয় বিসিক চট্টগ্রাম জেলা প্লট বরাদ্দ কমিটি।

কিন্তু ১৪টি শিল্পোদ্যোক্তারা সময়মতো অর্থ পরিশোধ করতে ব্যর্থ হওয়ায় প্লটগুলো শূন্য ঘোষণা করা হয়। পরে ১৪টি প্লটের বিপরীতে ৫৬টি আবেদন জমা পড়ে। যাচাই-বাছাই শেষে অবশিষ্ট ১৪টি প্লট বরাদ্দ দেয়া হয়। পাঁচ বছরের মধ্যে নয়টি কিস্তিতে প্লটের টাকা পরিশোধ করতে পারবেন শিল্পোদ্যোক্তারা। এসব প্লটে প্রতি বর্গফুট জমির মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৮০০ টাকা। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে হওয়ায় শিল্পনগরীকে ঘিরে শিল্পোদ্যোক্তাদের আগ্রহও বেশি।

বিসিক সূত্রে আরো জানা গেছে, মিরসরাইয়ে অবস্থিত শিল্পনগরীতে -টাইপ প্লট-২৭টি, বি-টাইপ প্লট-৩৩টি সি-টাইপ প্লট-২৭টি। প্লট বরাদ্দ কমিটি প্রকৌশল খাতে ১৯টি, তৈরি পোশাক খাতে ১৬, খাদ্য খাদ্যজাত খাতে ১৯, কেমিক্যাল অ্যান্ড অ্যালাইড খাতে ১০, বন বনজাত খাতে তিন, প্যাকেজিং খাতে আট, সিরামিকস নন মেটালিক খাতে তিন, রাবার-লেদার অ্যান্ড অ্যালাইড খাতে চারটি প্লট বরাদ্দ দিয়েছেন। এরই মধ্যে পণ্য উৎপাদনের জন্য গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানিসহ নানা সুবিধার আওতায় আনা হয়েছে মিরসরাই বিসিক শিল্পনগরীকে। এদিকে সর্বশেষ উৎপাদনে থাকা সাতটি প্রতিষ্ঠান হলো এয়াকুব অটো রাইস মিল, খাজা ভাণ্ডার, খান অ্যাকসেসরিজ, নাছির কেমিক্যাল, আলিফ ফুড, মেঘনা ডাল মিল ইনোভা টেক্সটাইল। বর্তমানে এসব প্রতিষ্ঠানে অর্ধশতাধিক লোক কাজ করছে। তবে ইনোভা টেক্সটাইল পুরোপুরি চালু হলে কয়েকশ মানুষের কর্মসংস্থান হবে বলে দাবি উদ্যোক্তাদের। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটিতে ২৫ জন কাজ করছে।

বিসিক চট্টগ্রামের উপব্যবস্থাপক নিজাম উদ্দিন জানান, মিরসরাই বিসিক শিল্পনগরীটি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে হওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো। তাই চাহিদাও বেশি। সম্প্রতি সাতটি কারখানা উৎপাদনে গেছে। বাকি কারখানাগুলোর নির্মাণকাজ চলমান রয়েছে।

জানা গেছে, ২০০৯ সালে চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে একটি বিসিক শিল্পনগরী স্থাপনের উদ্যোগ নেয় সরকার। ২০১০ সালে স্থানীয় একটি অনুষ্ঠানে গিয়ে বিসিক শিল্পনগরী স্থাপনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কিন্তু মাটি ভরাটসহ নানা জটিলতায় আটকে যায় শিল্পনগরী স্থাপনের কাজ। এরই মধ্যে একাধিকবার প্রকল্পের ব্যয় বাড়ানো হয়। প্রকল্পের সময়সীমাও বৃদ্ধি করা হয়। ২০১৫ সালের ১২ মে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে দ্বিতীয় সংশোধিত প্রকল্প আকারে ২৯ কোটি ২৫ লাখ টাকার মিরসরাই বিসিক প্রকল্প অনুমোদন হয়। কিন্তু ব্যয় সময়সীমা বাড়িয়েও নির্দিষ্ট সময়ে প্রকল্পের কাজ শেষ করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ।

আরও