রমজানকে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জের নিতাইগঞ্জে অস্থির হয়ে পড়েছে ডালের বাজার। এক-দুই সপ্তাহের ব্যবধানে সব ধরনের ডালের দাম বেড়েছে। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, ডলার সংকটসহ নানা কারণে ছোট ব্যবসায়ীরা আমদানি করতে হিমশিম খাচ্ছেন। এ সুযোগে বড় আমদানিকারকরা রমজান সামনে রেখে দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জের নিতাইগঞ্জে মুগডাল বেচাকেনা হচ্ছে ১৬৪ টাকা কেজি দরে, দুই সপ্তাহ আগে যা ছিল ১৫৫ টাকা। সে হিসেবে কেজিতে দাম বেড়েছে ৯ টাকা। অ্যাঙ্কর ডাল বাজারে বেচাকেনা হচ্ছে ৭৬ টাকা কেজি দরে, গত সপ্তাহে যা ছিল ৬৭ টাকা। সে হিসেবে দাম কেজিতে বেড়েছে ৯ টাকা।
বাজারে দেশী মসুর ডাল বেচাকেনা করা হচ্ছে ১২৬ টাকা কেজি দরে। এক সপ্তাহ আগেও একই ডাল বেচাকেনা হয়েছে ১২৪ টাকা দরে। সে হিসেবে দাম বেড়েছে ২ টাকা।
দিল্লি সুপার ডাল বেচাকেনা হচ্ছে ১৩৮ টাকা কেজি দরে। একই ডাল কিছুদিন আগেও বেচাকেনা হয়েছিল ১৩৬ টাকায়। সে হিসেবে দাম বেড়েছে কেজিতে ২ টাকা। দিল্লি সুপার ডাল (৩০ কেজি) বাজারে বেচাকেনা হচ্ছে ১২৭ টাকা কেজি দরে। একই ডাল কয়েকদিন আগেও বেচাকেনা হয়েছিল ১২৫ টাকা কেজি দরে। সে হিসেবে এর দাম বেড়েছে কেজিতে ২ টাকা।
বোল্ডার ডাল বাজারে বেচাকেনা হচ্ছে ১০৪ টাকা কেজি দরে, দুই সপ্তাহ আগেও যা ছিল ৯৬ টাকা। সে হিসেবে কেজিতে দাম বেড়েছে ৮ টাকা।
খেসারি ডাল বাজারে বেচাকেনা হচ্ছে ১১২ টাকা কেজি দরে। একই ডাল গত সপ্তাহে বেচাকেনা হয়েছিল ৯২ টাকায়। সে হিসেবে দাম বেড়েছে কেজিতে ২০ টাকা। বুটের ডাল বাজারে বেচাকেনা হচ্ছে ৯৪ টাকা কেজি দরে। একই ডাল গত সপ্তাহে ছিল ৮৭ টাকা। সে হিসেবে দাম বেড়েছে কেজিতে ৭ টাকা।
নারায়ণগঞ্জের ডাল ব্যবসায়ী সুধীর চন্দ্র দাস বলেন, ‘রমজান সামনে রেখে পাইকারি বাজারে সব রকমের ডালের দামই বেড়েছে। মূলত মিলগেট থেকে দাম বাড়িয়ে দেয়ার কারণে পাইকারি বাজারেও আমাদের বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। এর প্রভাব পড়ছে খুচরা বাজারে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে সব প্রকার ডালের দাম কেজিতে ৩-২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। কী কারণে ডালের দাম বাড়ছে সেটা আমরা নিজেরাও বুঝতে পারছি না। ’
নারায়ণগঞ্জের ডাল ব্যবসায়ী বিকাশ সাহা জানান, নারায়ণগঞ্জের নিতাইগঞ্জে প্রায় ছোট-বড় ৭০টি ডাল মিল ছিল। কিন্তু করপোরেট কোম্পানির সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে বেশির ভাগই বন্ধ হয়ে গেছে। নিতাইগঞ্জের ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন আমদানিকারকদের কাছ থেকে আস্ত ডাল কিনে এনে নিজেদের মিলে ভাঙিয়ে বাজারে বিক্রি করতেন। কিন্তু বর্তমানে বড় বড় করপোরেট কোম্পানি বিদেশ থেকে সরাসরি ডাল আমদানি করে বাজারজাত করছে।
ব্যবসায়ী বিপ্লব বড়ুয়া জানান, ডাল, চিনিসহ ভোগ্যপণ্যের বাজার চলে গেছে গুটিকয়েক বড় কোম্পানির হাতে। তারা যে রেট আমাদের নির্ধারণ করে দেন, নিতাইগঞ্জের ব্যবসায়ীরা সে রেটেই কিনে স্বল্প লাভে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন।