এশিয়ার স্পট মার্কেটে চলতি সপ্তাহে টানা দ্বিতীয়বারের মতো তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) দাম স্থিতিশীল ছিল। গ্রীষ্মকালীন তাপমাত্রা কমে আসায় এ খাতের ব্যবসায়ীরা এলএনজি ক্রয় আপাতত বন্ধ রেখেছেন। খাতসংশ্লিষ্টরা জানান, আমদানিকারক দেশগুলো দাম আরো কমার অপেক্ষায় আছে। চাহিদা কম থাকায় স্থিতিশীল আছে পণ্যটির দাম। খবর বিজনেস রেকর্ডার।
শিল্পসংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, চলতি সপ্তাহে উত্তর-পূর্ব এশিয়ায় নভেম্বরে সরবরাহ চুক্তিতে প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজির গড় দাম ছিল ১৩ ডলার ১০ সেন্ট। আগের সপ্তাহেও একই দামে পণ্যটি বেচাকেনা হয়েছে।
ডাটা অ্যান্ড অ্যানালিস্ট ফার্ম ক্যাপলারের প্রাকৃতিক গ্যাস ও এলএনজি বিশ্লেষক আনা সুবাসিক বলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যে ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা চলমান থাকলেও চলতি সপ্তাহে এলএনজির দাম স্থিতিশীল ছিল। এ স্থিতিশীলতা মূলত গ্রীষ্মকালীন তাপ কমে আসায় নিম্নমুখী চাহিদা এবং সে তুলনায় সরবরাহ বৃদ্ধির কারণে হয়েছে।’
এএনজেড রিসার্চ রিপোর্টের বিশ্লেষকরা জানান, জাপানে এলএনজির মজুদ বাড়ায় স্পট মার্কেটে পণ্যটির ব্যবসায়িক কার্যক্রম কমেছে। আবার কিছু কিছু ব্যবসায়ী প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজির জন্য ১৩ ডলার ১০ সেন্টের বেশি মূল্য পরিশোধ করতে অনিচ্ছুক।
জাপানের প্রধান বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোয় গত ২৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এলএনজির মজুদ ছিল ১৯ লাখ ৯০ হাজার টন। গত ২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এ মজুদের পরিমাণ ছিল ১৬ লাখ ৩০ হাজার টন।
অন্যদিকে শীর্ষ আমদানিকারক দেশ চীনে ১-৭ অক্টোবর পর্যন্ত স্বাধীনতা দিবসের ছুটিতে ব্যবসায়িক কার্যক্রম কন্ধ আছে।
এদিকে এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল কমোডিটি ইনসাইটস গত বৃহস্পতিবার নভেম্বরে সরবরাহ চুক্তিতে নর্থওয়েস্ট ইউরোপ এলএনজি মার্কার (এনডব্লিউএম) বাজার আদর্শে প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজির দাম স্থির করেছে ১২ ডলার ৬২ সেন্টে। এছাড়া নেদারল্যান্ডসে প্রাকৃতিক গ্যাসের ভার্চুয়াল ট্রেডিং পয়েন্ট টিটিএফে প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজিতে দশমিক ২১ শতাংশ ছাড় দেয়া হয়েছে।
আরগাস নভেম্বরে সরবরাহ চুক্তিতে প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজির মূল্য নির্ধারণ করেছে ১২ ডলার ৬০ সেন্ট। অন্যদিকে স্পার্ক কমোডিটিজ অক্টোবরে সরবরাহ চুক্তিতে প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজির দাম নির্ধারণ করেছে ১২ ডলার ৬৮৩ সেন্ট।
স্পার্ক কমোডিটিজের বিশ্লেষক কাসিম আফগান জানিয়েছেন, গত শুক্রবার আটলান্টিক সাগরপথে এলএনজি পরিবহনের ব্যয় টানা দ্বিতীয় সপ্তাহের মতো কমেছে। ব্যয় কমে দৈনিক ৫১ হাজার ৫০০ ডলারে নেমেছে। অন্যদিকে প্রশান্ত মহাসাগরীয় পথে পরিবহন ব্যয় নেমে এসেছে দৈনিক ৫৯ হাজার ৫০০ ডলারে।
কাসিম আফগান বলেন, ‘উভয় পথেই পরিবহন ব্যয় পাঁচ বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম।’
গ্লোবাল এনার্জি ট্রেডার গানভরের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান টরবিয়র্ন টর্নকুইস্ট সম্প্রতি জানান, দাম না বাড়লে ২০৪০ সালের মধ্যে এলএনজির চাহিদা বর্তমান পর্যায় থেকে আরো ৫০ শতাংশ বাড়তে পারে। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল কমোডিটি ইনসাইটসের এশিয়া প্যাসিফিক পেট্রোলিয়াম কনফারেন্সে (এপিপিইসি) এমন মন্তব্য করেন তিনি।