এশিয়ার স্পট মার্কেটে চলতি সপ্তাহে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) দাম কিছুটা কমেছে। এ সময় পণ্যটির পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকলেও চাহিদা কম থাকায় দাম কমেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। খবর বিজনেস রেকর্ডার।
শিল্পসংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, উত্তর-পূর্ব এশিয়ায় নভেম্বরে সরবরাহ চুক্তিতে চলতি সপ্তাহে প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজি গড়ে ১৩ ডলারে লেনদেন হয়েছে, গত সপ্তাহে যা ছিল ১৩ ডলার ১০ সেন্ট। অন্যদিকে ডিসেম্বরে সরবরাহ চুক্তিতে চলতি সপ্তাহে প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজি ১৩ ডলার ৩০ সেন্টে বেচাকেনা হয়েছে।
কেপলারের এলএনজি ও প্রাকৃতিক গ্যাস বিশ্লেষক গো কাটায়ামা বলেন, ‘কিছুটা কমলেও এশিয়ার স্পট মার্কেটে এলএনজির দাম আগের সপ্তাহের তুলনায় স্থিতিশীল ছিল। ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা কিছুটা কমে আসায় ও বাজারে পর্যাপ্ত সরবরাহ দাম কমার পেছনে ভূমিকা রেখেছে।’
অস্ট্রেলিয়ার ইচথিস এলএনজি উৎপাদন কেন্দ্রের ট্রেন-২ চলতি সপ্তাহে পুনরায় চালু হয়েছে। ফলে বাজারে জ্বালানিপণ্যটির সরবরাহ বেড়েছে। এর আগে আগস্টে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য এটি বন্ধ করে দিয়েছিল কর্তৃপক্ষ। প্রসঙ্গত, এলএনজি উৎপাদন কেন্দ্রের একটি সম্পূর্ণ উৎপাদন লাইনকে ‘ট্রেন’ বলা হয়।
এদিকে অন্তত দুটি বাণিজ্য সূত্র জানিয়েছে, পূর্ব মালয়েশিয়ার পেট্রোনাসের বিনতুলু এলএনজি কমপ্লেক্সের দুটি উৎপাদন ট্রেন বন্ধ রয়েছে। এর মধ্যে একটি সূত্র জানিয়েছে, এলএনজি টিগা উৎপাদন স্থাপনার ট্রেন ৭ ও ৮ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে এ নিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে পেট্রোনাসের মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
পাইপলাইনে দুটি ছিদ্র শনাক্ত হওয়ায় জাপানের কানসাই ইলেকট্রিক পাওয়ার তাদের মিহামা নিউক্লিয়ার পাওয়ার স্টেশনের ৩ নং রিঅ্যাক্টর বন্ধ করে দিতে পারে। অন্যদিকে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে দেশটির শিকোকু ইলেকট্রিক পাওয়ারও তাদের ইকাতা ৩ নং রিঅ্যাক্টর বন্ধ করে দিয়েছে।
এদিকে এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল কমোডিটি ইনসাইটস গত বৃহস্পতিবার নভেম্বরে সরবরাহ চুক্তিতে নর্থওয়েস্ট ইউরোপ এলএনজি মার্কার (এনডব্লিউএম) বাজার আদর্শে প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজির দাম স্থির করেছে ১২ ডলার ৬৪ সেন্টে। এছাড়া নেদারল্যান্ডসে প্রাকৃতিক গ্যাসের ভার্চুয়াল ট্রেডিং পয়েন্ট টিটিএফে প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজিতে ২১ সেন্ট ছাড় দেয়া হয়েছে।
এদিকে আরগাস নভেম্বরে সরবরাহ চুক্তিতে প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজির মূল্যনির্ধারণ করেছে ১২ ডলার ৬১ সেন্ট। স্পার্ক কমোডিটিজ অক্টোবরে সরবরাহ চুক্তিতে প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজির দাম নির্ধারণ করেছে ১২ ডলার ৬৫ সেন্ট হিসাবে।
কমোডিটি প্রাইসিং এজেন্সি আরগাসের এলএনজি মূল্যায়ন বিভাগের প্রধান সামুয়েল গুড বলেন, ‘প্রধান বাজারগুলোয় এলএনজির দাম কমলেও গত বৃহস্পতিবার ইউরোপের ডিইএস মার্কেটে দাম বাড়ে। এটি চলতি সপ্তাহের শুরুতে হওয়া ক্ষতি কিছুটা হলেও পুষিয়ে নিতে সাহায্য করেছে।
স্পার্ক কমোডিটিজের বিশ্লেষক কাসিম আফগান বলেন, ‘গত শুক্রবার আটলান্টিক সাগরপথে এলএনজি পরিবহনের ব্যয় টানা তৃতীয় সপ্তাহের মতো কমেছে। ব্যয় কমে দৈনিক ৪৫ হাজার ডলারে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে প্রশান্ত মহাসাগরীয় পথে পরিবহন ব্যয় নেমে এসেছে দৈনিক ৫২ হাজার ২৫০ ডলারে।’