পৃথিবী তার মতো করে চলছে, আমরা পিছিয়ে আছি। কিন্তু কেন? আমরা আসলে আমাদের প্রিয় সন্তানদের সবসময় যথাযথ স্পেস দিতে পারি না। তাদের সবসময় দাবিয়ে রাখার চেষ্টা। ওটা ঠিক না। ভয় যেন না পায়। বাবা-মা, শিক্ষককে যদি সন্তানরা ভয় পায় তাহলে সে তার কাজ ঠিকই করবে তবে লুকিয়ে লুকিয়ে করবে। একপর্যায়ে সে বুঝতে পারবে না সে যা করছে তা ভুল নাকি সঠিক। আমার সন্তানদের যেভাবে বড় করি, আমি চেষ্টা করি আমার শিক্ষার্থীদেরও সেভাবে গড়ে তুলতে।
সবসময় একটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে যে আমি পারব। এ আত্মবিশ্বাস থাকা জরুরি। আমাদের দেশের অধিকাংশ শিক্ষার্থীর মধ্যে এ আত্মবিশ্বাসের অভাব দেখি। তারা সবসময় ভয়ের মধ্যে থাকে আর ভাবে আমাকে দিয়ে কিছু হবে না। আরেকটি কারণ হলো বাবা-মার মধ্যে একধরনের প্রবণতা আছে অমুকের সন্তান যদি প্রথম হয় তুমি কেন হবে না। ইঁদুর দৌড়ের এ ঘটনা বাচ্চাদের মধ্যে ভয় তৈরি করে। সবসময় একটি ভীতি, আতঙ্ক নিয়ে থাকে যে তাকে প্রথম হতে হবে। শুধু প্রথম হলেই জীবনে সফলতা আসবে বিষয়টি তেমন না। সত্যিকার অর্থে দরকার মানুষের মতো মানুষ হওয়া। মূল্যবোধসম্পন্ন মানুষ হতে হবে। এটি পরিবার থেকেই আসে।
আনন্দ নিয়ে যেকোনো কিছু শিখতে হবে। যদি বোঝা মনে হয় তাহলে ভালো করা সম্ভব না। সারাক্ষণ ভয় কাজ করবে। কোনো রকম পরীক্ষা শেষ হলেই বাঁচি—এ মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
যেকোনো কাজে দৃঢ়তা থাকতে হবে, রুটিন মেনে চলতে হবে। আমি ভালো করব, আমি পারব—এ তাড়না নিজের মধ্যে থাকতে হবে। তাহলেই শিক্ষার্থীদের কাজগুলো সহজ হয়ে যাবে। পৃথিবীতে যারা বড় মানুষ হয়েছে তারা আলাদা কেউ না। আমাদের মতোই সাধারণ। তবে তাদের অন্তর আলাদা। তারা সময়কে কাজে লাগিয়েছে।
কখনো কারো সমালোচনা করতে হয় না। যারা সমালোচনা করে, দোষ ধরে তারা পেছনেই থাকে। লিডার হতে হলে সামনে থাকতে হবে। সামনে এগিয়ে গেলে অন্যের দোষ খোঁজার সময় পাবে না। নিজের সফলতা কীভাবে অর্জন করতে হয় নিজেই শিখতে পারবে।
অধ্যাপক ড. মো. আবুল কাশেম মিয়া
উপাচার্য, ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (ইউআইইউ)