ভ্রমণের আনন্দ প্রতিটি মানুষকেই মূর্ছনা দেয়। নিজে ভালো থাকতে, মনকে ভালো রাখতে, প্রকৃতির সান্নিধ্যে সময় কাটাতে কিংবা নিখাদ বিনোদনের আশায় মানুষ ভ্রমণে যায়। সেটা যদি হয় কোনো ক্লাবের সঙ্গে তাহলে তার আনন্দই আলাদা।
পাহাড়-বনানী বেষ্টিত নৈসর্গিক সৌন্দর্যে ভরা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে বহু রকমের ক্লাব। তার মধ্যে অন্যতম বিকাশমান হলো: চবি অ্যাডভেঞ্চার ক্লাব। যার কাজ শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভ্রমণপিয়াস ও বাস্তবিক জ্ঞান সঞ্চিত করা।
বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন মানুষজনের সঙ্গে ভ্রমণ ও জ্ঞান অর্জনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে এটি কাজ করছে।
ভ্রমণপ্রেমীদের কথা মাথায় রেখে চবি শিক্ষার্থী সাদমান ইশরাকের উদ্যোগে ২০১৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়ে বর্তমান পর্যন্ত দেশ ও দেশের বাইরে প্রায় ১০০টিরও বেশি জায়গায় ভ্রমণ করেছে এ ক্লাব।
এ ক্লাবের সঙ্গে চবির শিক্ষার্থী ছাড়াও যেকোনো শিক্ষার্থী স্বল্প খরচে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান ভ্রমণ করে বাস্তব অভিজ্ঞতা ও নানামুখী জ্ঞান অর্জন করতে পারবে, যা শিক্ষার্থীদের একাডেমিক পড়ালেখার ক্ষেত্রেও সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
চলতি বছর ক্লাবটির চট্টগ্রামের উল্লেখযোগ্য ভ্রমণের জায়গাগুলো হলো: সোনাইছড়ি ঝরনা, হরিণমারা ঝরনা, বোয়ালিয়া ট্রেইল, রূপসী ঝরনা, বড় কমলদহ প্রভৃতি। চট্টগ্রামের বাইরে সুন্দরবন, কক্সবাজার, সেন্ট মার্টিনসহ বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণ করেছে। এছাড়া বিগত বছরগুলোয় ভারতের মেঘালয়, সিকিম, তামিলনাড়ুসহ নেপালের সৌন্দর্যময় জায়গাগুলোয় ভ্রমণ করেছিল।
ক্লাবটির আরো একটি বিশেষ দিক হলো ভ্রমণ সরঞ্জাম ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সরবরাহ করা, পরিবেশ সচেতনতায় কাজ করা, বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি, বিভিন্ন স্থানে ভ্রমণের ছবি প্রদর্শনী নিয়েও কাজ করা এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে ঘোষিত দিবস পালন করার মাধ্যমে সচেতনতা সৃষ্টি করা।
চবি ক্যাম্পাসে ভ্রমণপ্রেমী শিক্ষার্থীদের কাছে অ্যাডভেঞ্চার ক্লাব যেন এক অনন্য আস্থার প্রতীক। ক্যাম্পাসজুড়ে প্রতিনিয়ত বহু ক্লাবের উত্থান-পতন ঘটলেও অ্যাডভেঞ্চার ক্লাবটি প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে তার আপন গতিতে এগিয়ে চলছে।
ভ্রমণ করার আনন্দ কেমন এ ক্লাবের সঙ্গে যে বা যারা ভ্রমণে গিয়েছে তারা উপলব্ধি করতে পেরেছে। কেননা পরিচিত বন্ধুরা একসঙ্গে ঘুরতে যাওয়ার আনন্দ বেড়ে যায় বহু গুণে। আর সেই একসঙ্গে ঘুরতে যাওয়ার সুযোগটা করে দিচ্ছে এ অ্যাডভেঞ্চার ক্লাব। এ অনিন্দ্যসুন্দর ক্লাবটির কল্যাণপ্রত্যাশী চবির অ্যাডভেঞ্চারপ্রিয় সব শিক্ষার্থী।
ক্লাবটির বর্তমান সভাপতি ইমাম হাসান সৈকত বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা যখন অল্প খরচে সৌন্দর্যপূর্ণ জায়গাগুলোয় ভ্রমণে যেতে পারে তখন তারা খুব উচ্ছ্বসিত থাকে। যদি একবার কোনো শিক্ষার্থী আমাদের সঙ্গে ভ্রমণে যায় তাহলে সে বারবার আমাদের সঙ্গে যেতে আগ্রহ প্রকাশ করে। বিষয়টা আমাদের কাছে খুব ভালো লাগে।’