প্ল্যানপোস্ট এআই বাংলাদেশের প্রথম স্বদেশী কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই)চালিত কনটেন্ট জেনারেশন প্লাটফর্ম, যা ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান এবং ডিজিটাল পেশাদারদের জন্য দ্রুত, সহজ ও আকর্ষণীয় কনটেন্ট তৈরি করতে সহায়ক। এ প্লাটফর্ম এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে, যা কনটেন্ট তৈরির দীর্ঘ ও ক্লান্তিকর প্রক্রিয়াকে সম্পূর্ণরূপে বদলে দিতে পারে, কারণ এটি কনটেন্ট তৈরির ক্ষেত্রে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের মালিকদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জগুলোকে সমাধান করে।
প্ল্যানপোস্ট এআইয়ের প্রতিষ্ঠাতা মো. শাহিনুর রহমান বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিবিএ ও এমবিএ সম্পন্ন করেছেন। তার সঙ্গে এ দলে কাজ করেছেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, গ্রিন ইউনিভার্সিটি, মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির এক ঝাঁক শিক্ষার্থী।
শাহিনুর রহমান ২০১৭ সালে প্রথমবারের মতো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) সম্পর্কে জানার পর উৎসুক ছিলেন। তার প্রথম চিন্তা ছিল যে এটি এমন একটি প্রযুক্তি, যা পৃথিবীকে আমূল পরিবর্তন করতে পারে। সেদিন থেকে তিনি কোর্সের মাধ্যমে ডিপ লার্নিং, মেশিন লার্নিং ও এআই নিয়ে শেখা শুরু করেন। কোরসেরা, ইউডেমি, এডএক্স এবং অন্যান্য অনলাইন প্লাটফর্ম থেকে বেশকিছু কোর্স সম্পন্ন করার পর তিনি হাতে-কলমে এআই শেখার জন্য বাংলাদেশের কোনো কোর্স খোঁজ করতে থাকেন। কিন্তু তখন বাংলাদেশে এ ধরনের কোনো কোর্স ছিল না। পরে তিনি জানতে পারেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগ ডেটা সায়েন্টিস্টদের জন্য একটি প্রশিক্ষণ কোর্স অফার করে, যেখানে মেশিন লার্নিং অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
শাহিনুর রহমান বলেন, ‘এআই ও মার্কেটিংয়ের অভিজ্ঞতা থেকে কনটেন্ট ক্রিয়েশনকে লক্ষ্য করে এআই ব্যবহার করে ব্যবসায়িক সমাধান তৈরির পরিকল্পনা করি। ২০১৫ সাল থেকে ডিজিটাল মার্কেটার হিসেবে কাজ করে আসছি। আমার নিজস্ব একটি মার্কেটিং এজেন্সিও রয়েছে। সব আয় প্ল্যানপোস্ট এআইয়ে বিনিয়োগ করেছি। তবে এত বড় প্রকল্প নির্মাণের জন্য তা যথেষ্ট ছিল না। তাই পরিবার থেকে আর্থিক সহায়তা নিয়ে প্ল্যানপোস্ট এআই তৈরি করা হয়েছে। পরিবার থেকে ৪০ লাখ টাকার এবং নিজের আয় থেকে ১ কোটি ১০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছি।’
প্ল্যানপোস্ট এআই উন্নত এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে খুব অল্প সময়ে বাংলা ও ইংরেজিতে প্রাসঙ্গিক কনটেন্ট তৈরি করতে পারে, যা সা ধারণ ব্যবহারকারীদের জন্যও সহজে ব্যবহারযোগ্য। ডিজাইন বা মার্কেটিংয়ের দক্ষতার প্রয়োজন ছাড়াই ব্যবসায়ীরা তাদের ব্র্যান্ডের জন্য আকর্ষণীয় কনটেন্ট তৈরি করতে পারবেন। প্লাটফর্মটির মূল লক্ষ্য হলো সময় ও খরচ কমিয়ে ব্যবহারকারীদের সৃজনশীল কনটেন্ট তৈরি করতে সহায়তা করা এবং তাদের গ্রাহকদের সঙ্গে আরো সহজে ও গভীরভাবে যোগাযোগ করার সুযোগ করে দেয়া।
এছাড়া প্লাটফর্মে হাজার হাজার সুন্দর ও আকর্ষণীয় ডিজাইন টেমপ্লেট রয়েছে, যা বিভিন্ন ব্যবসার জন্য কাস্টমাইজ করা যায়। প্ল্যানপোস্ট এআই শুধু ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসাগুলোর জন্য নয়, এটি বাংলাদেশের প্রযুক্তি খাতের উন্নয়নের একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। এটি কনটেন্ট তৈরি এবং ব্যবসার প্রচারণার প্রক্রিয়াকে বদলে দিতে এসেছে। আপনার ব্যবসার গল্প যেন শুধু দেশে সীমাবদ্ধ না থাকে, বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে—এটাই প্ল্যানপোস্ট এআইয়ের লক্ষ্য। দেশের এসএমই খাতকে শক্তিশালীকরণ এবং আইটি খাতের অগ্রগতি একসঙ্গে সম্ভব করতে, এটি এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।
কনটেন্ট তৈরি মাত্র ১০-২০ সেকেন্ডে: প্লাটফর্মটি এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যাতে ব্যবহারকারীরা খুব দ্রুত প্রাসঙ্গিক ও আকর্ষণীয় কনটেন্ট তৈরি করতে পারেন। ১০-২০ সেকেন্ডের মধ্যে পছন্দসই কনটেন্ট তৈরি করে তা সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করা সম্ভব।
এক ক্লিকে সব সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মে পোস্ট: প্ল্যানপোস্ট এআইয়ের মাধ্যমে কনটেন্ট তৈরি করেই তা শুধু একটি ক্লিকেই ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, লিংকডইনসহ অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মে পোস্ট করা যায়, যা ব্যবসায়ীদের সময় ও পরিশ্রম বাঁচায়।
কোনো ডিজাইন বা টেকনিক্যাল স্কিলের প্রয়োজন নেই: প্ল্যানপোস্ট এআই নিজেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে ডিজাইন তৈরি করে দেয়, তাই ব্যবহারকারীদের কোনো প্রকার গ্রাফিক ডিজাইন বা টেকনিক্যাল দক্ষতা থাকা প্রয়োজন নেই।
হাজারো কনভারসেশনকেন্দ্রিক ডিজাইন: প্লাটফর্মটিতে হাজার হাজার টেমপ্লেট ও কনভারসেশনকেন্দ্রিক ডিজাইন রয়েছে, যা ব্র্যান্ডের সঙ্গে ক্যাপশন তৈরি করতে সক্ষম। এ ডিজাইনগুলো বিভিন্ন ইন্ডাস্ট্রির জন্য প্রাসঙ্গিক কনটেন্ট তৈরি করতে বিশেষভাবে উপযোগী।
বাংলা ও ইংরেজি ভাষার কনটেন্ট জেনারেশন: প্লাটফর্মটি একই সঙ্গে বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় কনটেন্ট তৈরির সুবিধা দেয়, যা দেশীয় ও আন্তর্জাতিক অডিয়েন্সের সঙ্গে সহজে যোগাযোগ করতে সহায়ক।
এসইও-অপ্টিমাইজড কনটেন্ট: প্ল্যানপোস্ট এআই এসইওবান্ধব কনটেন্ট তৈরি করতে সক্ষম, যা ব্যবসায়ের সার্চ ইঞ্জিন র্যাঙ্কিং উন্নত করতে সহায়ক।