‘বাংলাদেশের
উন্নয়ন করতে হলে মানবসম্পদের উন্নয়ন করতে হবে। এ বিষয়ে দল-মত নির্বিশেষে সবাই
একমত। শিক্ষা বলতে শুধু লাখ লাখ এ প্লাস বা
গোল্ডেন নয়, শিক্ষার মানের উন্নয়ন করতে হবে। মান নিশ্চিত করতে হলে তা প্রাথমিক শিক্ষা
থেকেই শুরু করতে হবে।’ গতকাল
গাইবান্ধায় ‘প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষা পরিস্থিতি আমাদের করণীয়’ শীর্ষক
দিনব্যাপী সংলাপে সিপিডির ফেলো এবং এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্লাটফর্ম বাংলাদেশের আহ্বায়ক ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য
এসব কথা বলেন। জেলা সদরের রাধাকৃষ্ণপুর এসকেএস ইন হলরুমে সেন্টার
ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) আয়োজনে এ সংলাপ অনুষ্ঠিত
হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইন, বিচার ও স্থায়ী কমিটির সদস্য ও গাইবান্ধা-১ সুন্দরগঞ্জ আসনের সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, ‘দেশীয় শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন করতে হবে। যেসব এলাকায় দারিদ্র্যের হার বেশি সেখানে উন্নতির হার বাড়াতে হবে। চর এলাকায় শিক্ষকদের থাকার জন্য রেসিডেনশিয়াল ব্যবস্থা করতে হবে।’
প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থার ওপর ভিডিও প্রেজেন্টেশন মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান। উন্মুক্ত আলোচনার ভিত্তিতে বক্তব্য রাখেন গবেষক মোজাহিদুল ইসলাম।
অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সুন্দরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আব্দুর রশিদ, সচেতন নাগরিক কমিটি সনাক সভাপতি অধ্যাপক জহুরুল কাইয়ুম, এসকেএস স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভাইস প্রিন্সিপাল ড. অনামিকা সাহা, ইকো সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন ইএসডিও জেনারেল কমিটির সদস্য আখতারুজ্জামান, সিপিডি ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান প্রমুখ।
সংলাপে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জাতীয় বাজেটসংক্রান্ত তথ্য তুলে ধরে বলা হয়, ‘ঝরে পড়া রোধে সুবিধাবঞ্চিত এবং জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থীদের শিক্ষা ভাতা ও শিক্ষা অনুদান প্রদান’-এর লক্ষ্যমাত্রা ২০১৮-১৯ এবং ২০২২-২৩ অর্থবছরের মধ্যে ১ দশমিক ৫০ লাখ সুবিধাভোগী থেকে শূন্য দশমিক ৮৩ লাখ সুবিধাভোগীতে নেমে এসেছে।
এতে জানানো হয়, বিদ্যালয়ে তালিকাভুক্তির হার গাইবান্ধা জেলার ক্ষেত্রে জাতীয় হারের তুলনায় বেশি হলেও প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ঝরে পড়ার হার জাতীয় হারের চেয়ে বেশি।
উল্লেখ্য, সুন্দরগঞ্জে সর্বমোট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ২৫৯টি। গাইবান্ধা জেলায় বাল্যবিবাহের হার জাতীয় হারের চেয়ে বেশি। ইন্টারনেট ব্যবহারের দিক দিয়ে জাতীয় হারের চেয়ে প্রায় ২০ শতাংশ কম। প্রায় অর্ধেক জনসংখ্যা এখনো নিরাপদ স্যানিটেশনের আওতায় আসেনি। শিক্ষা অবকাঠামোয় বিদ্যালয়ে প্রয়োজনীয় বাথরুম তৈরি ও তা নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত কোনো নির্দিষ্ট জনবল না থাকার অন্যতম কারণ সরকারি বরাদ্দের অপ্রতুলতাসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরা হয়।