চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরে পর্যাপ্ত আবাসন ও গণপরিবহন না থাকায় শ্রমিক সংকটে পড়েছে উৎপাদনের যাওয়া শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরের দূরত্ব বেশি হওয়ায় শ্রমিকরা গণপরিবহনে বেশি টাকা খরচ যেতে চাচ্ছেন না। সম্প্রতি বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চলে উৎপাদনে যাওয়া চীনা পোশাক কারখানা খাইশি লিনজেরি বাংলাদেশ কোম্পানি লিমিটেড পড়েছে শ্রমিক সংকটে।
খাইশি লিনজেরি বাংলাদেশ লিমিটেড সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালের ৮ নভেম্বর বেপজার সঙ্গে চুক্তি করে খাইশি লিনজেরি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরের বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চলে ১১টি প্লট বরাদ্দ পায় তারা। এখানে তারা মেয়েদের বিভিন্ন ধরনের পোশাক ও ফোম তৈরি করবে। এছাড়া একটি প্লটে পোশাক তৈরির প্রয়োজনীয় কাঁচামাল উৎপাদন করবে। শতভাগ রফতানিকারক খাইশি লিনজেরি বাংলাদেশ লিমিটেড একটি প্লটে কারখানা নির্মাণ শেষে গত ডিসেম্বরে উৎপাদন শুরু করেছে। বছরে ৩০ মিলিয়ন পিস পোশাক তৈরির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হলেও দক্ষ ও অদক্ষ শ্রমিক সংকটের কারণে এখনো পুরোদমে কারখানাটি চালু করা সম্ভব হচ্ছে না।
বর্তমানে চালু হওয়া একটি কারখানায় সাত হাজার শ্রমিক নিয়োগ দেয়ার প্রক্রিয়া শুরু করলেও পেয়েছে মাত্র ৭০০ জন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরের আশপাশে আবাসন সমস্যা, প্রয়োজনীয় গণপরিবহন ব্যবস্থা, মানসম্মত খাবারের দোকান গড়ে না ওঠায় শ্রমিকরা কাজে যোগদানে অনীহা প্রকাশ করছেন। খাইশি লিনজেরি বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চলে ১১ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে। চীনা এ কোম্পানির সবক’টি প্লটে উৎপাদন শুরু হলে ১১ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে খাইশি লিনজেরির মানবসম্পদ কর্মকর্তা জামান উল্ল্যা বণিক বার্তাকে বলেন, ‘সরকার নির্দেশিত সর্বশেষ শ্রম আইন অনুসারে আমাদের কারখানায় নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। তবু দক্ষ-অদক্ষ শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে কারখানাগুলো পুরোদমে চালু করা সম্ভব হচ্ছে না। বর্তমানে আমাদের সাত হাজার শ্রমিক প্রয়োজন। কিন্তু রয়েছে মাত্র ৭০০ জন। প্রয়োজনীয় আবাসন ও গণপরিবহন না থাকায় শ্রমিকেরা আসতে চাচ্ছেন না।’
খাইশি লিনজেরির পরিচালক শিয়াও হং শি বণিক বার্তাকে বলেন, ‘আবাসন, পরিবহন, নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন সমস্যার কারণে শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। এছাড়া দক্ষ শ্রমিকের তুলনায় অদক্ষ শ্রমিকও পেতে কষ্ট হচ্ছে। তবে বেপজা থেকে আমরা অনেক সহযোগিতা পেয়েছি।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বেপজার প্রকল্প পরিচালক এনামুল হক বণিক বার্তাকে বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরে গণপরিবহন চালুর বিষয়ে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশনের চেয়ারম্যানকে ১ ফেব্রুয়ারি চিঠি দিয়েছি। আমরা প্রয়োজনীয় আবাসন ব্যবস্থা ও গণপরিবহন চালুর জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। তবে আবাসনের জন্য সবাইকে আন্তরিক হতে হবে।’