নিষেধাজ্ঞা শেষ

ইলিশ ধরতে নদীতে নেমেছেন জেলেরা

ব্যবসায়ীরা বলছেন, ভরা মৌসুমে সাধারণত ভোলার বিভিন্ন মাছঘাট, চরফ্যাশনের বৃহত্তর মোকাম শ্যামরাজ মৎস্য বন্দর,কচ্ছপিয়া মাছঘাট ও বরিশাল মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে গড়ে প্রতিদিন আসে ৬০০ থেকে ৭০০ মন ইলিশ। কিন্তু আজ সোমবার দুপুর পর্যন্ত আড়তে উঠেছে প্রায় দুই হাজার মন ইলিশ।

২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে রোববার (৩ নভেম্বর) রাত থেকে সাগর ও নদীতে মাছ শিকারে নেমেছেন জেলেরা। এর ফলে ভোলাসহ উপকূলে বেড়েছে ইলিশসহ অন্যান্য মাছের সরবরাহ।সোমবার (৪ নভেম্বর) সকাল থেকেই স্থানীয় বাজারগুলোতে ইলিশের পসরা সাজিয়ে বসেছেন বিক্রেতারা। ইলিশসহ অন্যান্য মাছের সরবরাহ বাড়ায় গত সপ্তাহের তুলনায় অধিকাংশ মাছের দাম কিছুটা কমেছে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, ভরা মৌসুমে সাধারণত ভোলার বিভিন্ন মাছঘাট, চরফ্যাশনের বৃহত্তর মোকাম শ্যামরাজ মৎস্য বন্দর,কচ্ছপিয়া মাছঘাট ও বরিশাল মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে গড়ে প্রতিদিন আসে ৬০০ থেকে ৭০০ মন ইলিশ। কিন্তু আজ সোমবার দুপুর পর্যন্ত আড়তে উঠেছে প্রায় দুই হাজার মন ইলিশ।

সরেজমিনে, ভোলা সদর উপজেলার ভোলার খাল নামক মাছ ঘাট, নাছির মাঝি মাছঘাট, কোরার হাট মাছের মোকাম, তুলাতুলি মাছ ঘাট, বিশ্বরোড মাছের ঘাট, জংশন এলাকার মাছঘাট, ইলিশার মাছ ঘাট,দৌলতখান উপজেলার পাতার খাল,চরফ্যাশনের চেয়ারম্যানের খাল মাছ ঘাটসহ বিভিন্ন মাছের মোকাম ঘুরে দেখা যায়, মৎস্য ব্যবসায়ীদের ব্যস্ততা চোখে পড়ার মত। কেউ বরফ তৈরি করছেন, কেউ ঝুড়ি প্রস্তুত করছেন, কেউবা গদিতে মাছ তুলে দাম হাকাচ্ছেন। সারারাত নদীতে মাছ ধরে সকাল বেলা ঘাটগুলোতে চকচকে রুপালী ইলিশসহ বিভিন্ন মাছ নিয়ে আসেন জেলেরা। আর মাছ আসলেই হাঁক-ডাক দিতে থাকে ব্যাপারীরা।

জেলেদের দেয়া ভাষ্যমতে,সাধারণত নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষের পরের কয়েকদিন ছাড়া হঠাৎ একসঙ্গে এতো ইলিশ দেখা যায় না। ফলে নিষেধাজ্ঞা শেষের সঙ্গে সঙ্গেই ইলিশে সয়লাব হয়ে গেছে ভোলা,বরিশালসহ উপকুলের আড়ত ও তৎসংলগ্ন বাজারগুলো। জেলার কার্ডধারী জেলেরা জানান, এবার মৌসুমে নদীতে যে পরিমাণ ইলিশের দেখা মিলতে শুরু করেছে,এর ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কয়েকগুণ বেশী ইলিশ আহরিত হতে পারে বলে ধারনা জেলেদের। সোমবার ভোরে ভোলা শহরতলীর শিবপুর মৎস্য ঘাট ও ধনিয়ার নাছির মাঝি নামক মাছঘাটের আড়তগুলো ঘুরে দেখা গেছে ভিন্নচিত্র।

নাছির মাঝি ঘাটের আড়ৎদার খালেক মাঝি জানান, প্রচুর ইলিশ ধরা পড়লেও সেগুলোর আকার একেবারেই ছোট। গ্রেট সাইজের চোখশোভা ইলিশের দেখা মিলছেনা। ইলিশাঘাটের আড়ৎ মালিক বাসু মিয়া জানান, নদীতে প্রচুর ইলিশ মিললেও সেগুলো মোকামে পাঠালে ভালো দাম মিলবে না। বড় সাইজের ইলিশের তেমন দেখা এখনো মিলছে না। ফলে স্থানীয় খুচরা বাজারগুলোতে ছোট ইলিশে সয়লাব আর এগুলো সেখানে বিক্রি করে জেলেরা লাভবান হচ্ছেন।

তিনি জানান, আরো ২/১দিন পর বড়সাইজের ইলিশ পাওয়া যেতে পারে। এদিকে রোববার রাতভর ইলিশ ধরার পর খুব ভোরেই সেগুলো এনে আড়তে রাখা হয়েছে। সেখানে বেচাকেনার ধুম পড়েছে। মাছের আড়ৎগুলোতে জেলে,আড়ৎদার আর সাধারণ ক্রেতাদের আগমনে সরগরম হয়ে উঠেছে উপকুলের মৎস্যবাজারগুলো আর পর্যাপ্ত ইলিশ পেতে শুরু করায় লোকসান কাটিয়ে উঠার আসায় স্বস্তি ফিরছে জেলেদের মাঝে।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার দেব বাসস'কে জানান,এবারের অভিযান সফল হওয়ায় ইলিশ আহরণের লক্ষ্যমাত্রা এক লাখ ৮৫ হাজার মেট্রিন টনের বেশী অর্জিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি জানান,সারা দেশে ইলিশ শিকারের মোট লক্ষ্যমাত্রা ৫ লাখ ৭৫ হাজার মেট্রিকটন।

ইলিশের প্রধান প্রজনন সময়ে মা ইলিশ রক্ষায় চলতি বছরের ১৩ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এ নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ায় জেলেরা এখন নির্বিঘ্নে নদীতে মাছ শিকার করতে পারছেন আর প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ায় তারা খুবই লাভবান ও আনন্দিত।

আরও