সাগরে মাছ ধরার ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞাকালীন বরাদ্দ

পাঁচ বছরে চালের পরিমাণ না বাড়ায় ক্ষুব্ধ জেলেরা

সাগরে মাছ ধরায় চলছে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা। এ সময় জেলেদের চাল সহায়তা দেয় সরকার। তবে চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে এ বছরের চাল গতকাল পর্যন্ত দেয়া হয়নি।

সাগরে মাছ ধরায় চলছে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা। এ সময় জেলেদের চাল সহায়তা দেয় সরকার। তবে চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে এ বছরের চাল গতকাল পর্যন্ত দেয়া হয়নি। জেলেদের অভিযোগ, বছর বছর নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বাড়লেও গত পাঁচ বছরে বরাদ্দ বাড়েনি। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নিবন্ধিত ২ হাজার ৫৫৭ জন জেলে।

উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, গত ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত মোট ৬৫ দিন সাগরে মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা চলছে। এই সময় মিরসরাই উপজেলার জেলেদের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয় ১৮৩ টন চাল, যা দিয়ে জেলে পরিবারগুলোকে দুই দফায় ৮৬ কেজি চাল সহায়তা দেয়া হয়। ২০১৯ সাল থেকে এই চাল পেয়ে আসছে তারা। এর পর এক কেজি বরাদ্দও বাড়েনি। অথচ সংসারে সদস্য সংখ্যা বাড়ছে প্রত্যেক বছর। জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে। জেলে পরিবারগুলোর খরচও বেড়েছে। ২০২১ সালে মিরসরাইয়ে মোট নিবন্ধিত জেলে ছিল ২ হাজার ২৬ জন। ওই বছরের শেষের দিকে ৬০০ জেলে নিবন্ধনের জন্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। এতে ৬৯ জেলে বাদ পড়েন। পরে মোট নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা গিয়ে দাঁড়ায় ২ হাজার ৫৫৭ জনে। অথচ ৬৫ দিনের বন্ধে চাল সহায়তা পায় ২ হাজার ১২৬ জন জেলে। এতে করে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে সহায়তাবঞ্চিত জেলেদের মাঝে। এছাড়া সহায়তা পাওয়া জেলেরাও চাল না পেয়ে দিন কাটাচ্ছে অনাহার-অর্ধাহারে।

প্রত্যেক নিষেধাজ্ঞায় বরাদ্দ বাড়ানোর অনুরোধ জানিয়ে জয়নগর জেলেপাড়ার বাসিন্দা শ্রীপদ চন্দ্র জলদাশ বলেন, ‘বিগত পাঁচ বছরে জয়নগর জেলেপাড়ায় প্রত্যেক পরিবারের সদস্য সংখ্যা বেড়েছে এক-দুজন। কিন্তু বন্ধের ভিজিএফের বরাদ্দ সে রকম বাড়েনি। এছাড়া বন্ধের সময় উপজেলা মৎস্য অফিস থেকে লোকজন এসে জাল জব্ধ করে পুড়িয়ে ফেলে। এতে চরম ক্ষতির মুখে পড়ে জেলেরা।’

ডোমখালি এলাকার জেলে হারাধন জলদাশ বলেন, ‘সহযোগিতা পাই না। সাগরে মাছও ধরতে পারি না। কয়েকজন জেলে অন্য কাজ করে সংসার চালালেও অধিকাংশ জেলেকে অনাহার-অর্ধাহারে দিন কাটাতে হচ্ছে।’

২০১৯ সাল থেকে ৬৫ দিনের বন্ধে জেলেরা দু’দফায় ৮৬ কেজি চাল সহায়তা পেয়ে আসছেন জানিয়ে উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা নাসিম আল মাহমুদ বলেন, ‘মিরসরাইয়ে নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা ২ হাজার ৫৫৭ জন হলেও আমরা বরাদ্দ পাই ২ হাজার ১২৬ জনের। তাই নিবন্ধিত ৪৩১ জেলেকে চাল সহায়তা দেয়া সম্ভব হয় না।’

আরও