বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে যশোরে ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে বৃষ্টিপাত হয়েছে। বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান বিমান ঘাঁটির আবহাওয়া দপ্তরের তথ্যমতে, গতকাল বেলা ১১টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ১১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। বাতাসে আমন ধানের গাছ হেলে পড়েছে। বৃষ্টিতে আগাম শীতকালীন সবজি খেতে পানি জমেছে। এতে ধান ও সবজি নষ্ট হয়ে ফলন বিপর্যয় দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন চাষীরা।
কৃষকরা বলছেন, চলতি মৌসুমে সবজি চাষ নিয়ে চাষীদের চিন্তার শেষ নেই। এ বছর কয়েকবার প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যে পড়তে হয়েছে। তিন-চারবার সবজির চারা রোপণ করা হয়েছে। বারবার চারা রোপণ করতে গিয়ে একদিকে যেমন খরচ বাড়ছে কয়েক গুণ, অন্যদিকে রোপণের সময়ও শেষের দিকে। এবার যোগ হয়েছে ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’। এর প্রভাবে ঝড়ো বাতাস ও বৃষ্টির কারণে সবজি খেতে পানি জমেছে। পাশাপাশি মাঠের পর মাঠে ধানের গাছ হেলে পড়েছে। যেসব ধানের শীষ বের হয়নি ও দানা নরম, সেসব ধানের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে।
সদর উপজেলার চূড়ামনকাঠি ইউনিয়নের আব্দুলপুর গ্রামের কৃষক শফিকুল জানান, এবার সবজি চাষীদের দুর্ভোগের শেষ নেই। তিন মাস ধরে বিপাকে রয়েছেন তারা। শীতকালীন সবজির চারা রোপণ করলেই কিছুদিন পরপর সেগুলো বৃষ্টিতে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এতে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে।
ঝিকরগাছা উপজেলার নিশ্চিন্তপুর গ্রামের কৃষক সুমন কবির জানান, কয়েক মাস ধরে বৃষ্টিতে নিচু অঞ্চলের জমিতে ধানের চারা নষ্ট হয়ে গেছে। উঁচু জমিতে ধান ভালো হলেও ঝড়ো বাতাসে গাছগুলো হেলে পড়েছে। তার দেড় বিঘা জমির ধান হেলে পড়েছে। ধানের শীষে যে দানা রয়েছে, তা এখনো শক্ত হয়নি। অনেক ধান চিটা হয়ে যাবে। যে ফলন হওয়ার কথা ছিল, তাও কমে যাবে। সাধারণত বিঘাপ্রতি ১৮-২০ মণ ফলন হয়। গাছ হেলে পড়ায় পাঁচ মণ কমে যাবে।
এ ব্যাপারে যশোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. সুশান্ত কুমার তরফদার বলেন, ‘এবার বৃষ্টিতে কৃষকের অনেক ক্ষতি হচ্ছে। সবজি চাষীদের ক্ষতি বেশি হলেও এতদিন ধানের তেমন ক্ষতি হয়নি। শুনেছি, ঝড়ে কিছু জায়গায় ধানগাছ হেলে পড়েছে। যেসব ধানের দানা শক্ত হয়ে গেছে, সেগুলোর ক্ষতি হবে না। তবে যেসব ধানের শীষ বের হচ্ছে এবং দানা এখনো শক্ত হয়নি, সেগুলোর ক্ষতি হতে পারে।’