সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বিকল্পধারা বাংলাদেশের প্রধান একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী মারা গেছেন। শুক্রবার রাত সোয়া ৩টায় রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তার বয়স হয়েছিল ৯৪ বছর। ফুসফুসে সংক্রমণ হওয়ায় ২ অক্টোবর বদরুদ্দোজা চৌধুরীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। তিনি ‘স্কিমিক হার্ট ডিজিজে’ ভুগছিলেন।
তার মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
গতকাল সকাল ৮টার পর হাসপাতাল প্রাঙ্গণে তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে বাদ জোহর বারিধারায় ৮ নম্বর সড়কে বায়তুল আতিক জামে মসজিদে দ্বিতীয় জানাজা হয়।
আজ সকাল ১০টার দিকে মুন্সিগঞ্জের স্টেডিয়ামে বদরুদ্দোজা চৌধুরীর তৃতীয় জানাজা হবে। বাদ জোহর গ্রামের বাড়ি মজিদপুর দয়হাটায় চতুর্থ জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে বলে জানা গেছে।
১৯৭৮ সালে প্রতিষ্ঠিত বিএনপির প্রথম মহাসচিব ছিলেন একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী। দলটির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান তাকে এ পদে আসীন করেন। বিএনপির প্রতীক ধানের শীষ নিয়ে মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর থেকে ১৯৭৯, ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। জিয়াউর রহমানের সরকারে তিনি উপপ্রধানমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সরকারে শিক্ষা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন।
২০০১ সালের ১৪ নভেম্বর অধ্যাপক একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। কিন্তু বিএনপির সঙ্গে রাজনৈতিক মতপার্থক্যের কারণে ২০০২ সালের ২১ জুন রাষ্ট্রপতির পদ থেকে ইস্তফা দেন তিনি। পরে বিএনপি ছেড়ে ২০০৪ সালের ৮ মে ‘বিকল্পধারা বাংলাদেশ’ নামে রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠা করেন এবং আমৃত্যু দলটির প্রেসিডেন্ট ছিলেন।
বদরুদ্দোজা চৌধুরী ১৯৩০ সালের ১১ অক্টোবর কুমিল্লা শহরে নানাবাড়িতে (প্রখ্যাত মুন্সেফ বাড়ি) জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৪৭ সালে ঢাকার সেন্ট গ্রেগরি হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে প্রথম বিভাগে ম্যাট্রিকুলেশন এবং ১৯৪৯ সালে ঢাকা কলেজ থেকে প্রথম বিভাগে আইএসসি পাস করার পর ১৯৫৪-৫৫ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস ডিগ্রি লাভ করেন। পরে লন্ডনের রয়্যাল কলেজ অব ফিজিশিয়ানস, এডিনবার্গ ও গ্লাসগো থেকে এফআরসিপি ও এসসিপিএস লাভ করেন তিনি। ঢাকায় মেডিসিন বিভাগের খ্যাতিমান চিকিৎসক হিসেবে দীর্ঘদিন মানুষকে চিকিৎসাসেবা দিয়েছেন বদরুদ্দোজা চৌধুরী।
তিনি স্ত্রী হাসিনা ওয়ার্দা চৌধুরী, এক ছেলে ও দুই মেয়ে রেখে গেছেন। ছেলে মাহী বি চৌধুরী বিকল্পধারা বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব। মুন্সিগঞ্জ-১ আসন থেকে তিনবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি।