সিলেটে ন্যাশনাল টি কোম্পানির (এনটিসি) চা বাগানগুলোয় শ্রমিকদের কর্মবিরতি অব্যাহত রয়েছে। সাত সপ্তাহের বকেয়া মজুরি ও ১৩ মাসের প্রভিডেন্ট ফান্ডের চাঁদা শ্রমিক তহবিলে জমা না দেয়ার প্রতিবাদে এ কর্মসূচি পালন করছেন তারা। এর অংশ হিসেবে গতকাল আম্বরখানা-এয়ারপোর্ট সড়কে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেন এনটিসির লাক্কাতুরা, কেওয়াচড়া ও দলদলি চা বাগানের কয়েকশ শ্রমিক। তাদের অভিযোগ, মজুরি না পাওয়ায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, শ্রমিকদের কর্মবিরতির কারণে বন্ধ রয়েছে ন্যাশনাল টি কোম্পানির মালিকানাধীন ১২টি কারখানা। ব্যাহত হচ্ছে উৎপাদন, নষ্ট হচ্ছে পাতা। এর প্রভাব পড়বে চা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে। বাগানগুলোর মধ্যে একটি সিলেটে পড়লেও বাকিগুলো মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জে। মালিকদের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, ব্যাংক থেকে লোন জটিলতায় শ্রমিকদের মজুরি বকেয়া পড়েছে।
সিলেট ভ্যালি চা শ্রমিক ইউনিয়ন সভাপতি রাজু গোয়ালা জানান, গতকাল ১৬ দিনের মতো কর্মবিরতি পালন করেছেন ন্যাশনাল টি কোম্পানির কয়েক হাজার চা শ্রমিক। তিনি বলেন, ‘মালিক পক্ষ নানা অজুহাতে শ্রমিকদের মজুরি দিচ্ছে না। আমরা চাই মালিক বাঁচুক, শ্রমিকও বাঁচুক। সবাই মিলে শিল্পটাকে বাঁচিয়ে রাখতে চাই।’
এ বিষয়ে এনটিসির মালিকানাধীন লাক্কাতুরা চা বাগানের আইনি উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট আবুল হাসনাত মো. জাফর চৌধুরী বলেন, ‘আশা করি আগামী সপ্তাহ নাগাদ সমস্যার সমাধান হবে। বাগান বন্ধ হওয়ায় আমাদের যেমন ক্ষতি হচ্ছে, শ্রমিকরাও কষ্টে আছেন। আমরা সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছি। কিন্তু এটা তো জাতীয় ব্যাপার, এ কারণে আমাদের করার মতো তেমন কিছু নেই।’
এনটিসির মহাব্যবস্থাপক এমদাদুল হক বলেন, ‘বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক থেকে প্রতি বছরের আগস্টে ঋণের অনুমোদন দেয়া হয়। দেশের চলমান পরিস্থিতিতে ঋণ পেতে সমস্যা হচ্ছে। এছাড়া পরিচালনা পর্ষদ পূর্ণাঙ্গ পুনর্গঠন না হওয়ার কারণেও একটু সমস্যা হচ্ছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে সংকট দূরীকরণের চেষ্টা চলছে।’