সোহেল তাজ

মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরতে ব্যর্থ হয়েছে আ. লীগ

মুক্তিযুদ্ধে যারা শহীদ হয়েছে, লাখো মানুষ প্রাণ দিয়েছেন তাদের যদি আমরা সম্মান না দিতে পারি, সেটি আমাদের ব্যর্থতা। ২৪ এর আন্দোলনে যারা আত্মাহুতি দিয়েছেন তাদেরকেও আমাদের স্মরণ করতে হবে।’

আওয়ামী লীগ সরকারে থাকা অবস্থায় মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরতে ব্যর্থ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তানজিম আহমদ সোহেল তাজ। রোববার (৩ নভেম্বর) ৩ দফা দাবিতে পদযাত্রা শেষে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় যাওয়ার আগে শাহবাগের সাকুরা মোড়ে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।

সোহেল তাজ বলেন, ‘আমি মনে করি বৈষম্যহীন দুর্নীতিমুক্ত নতুন একটি বাংলাদেশ, সুন্দর আধুনিক বাংলাদেশ গড়ার লক্ষে ২০২৪ সালে ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থান হয়েছে। যে আশা আকাঙ্ক্ষা নিয়ে আন্দোলনটা হয়েছে, আমি মনে করি এ আশা আকাঙ্ক্ষায় আমি যে তিন দাবি নিয়ে এসেছি, এ তিন দাবি এবং মহান মুক্তিযুদ্ধ একই সূত্রে গাঁথা।

তানজিম আহমদ সোহেল তাজ বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের লক্ষ্য ছিল ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে হিন্দু, বৌদ্ধ, মুসলমান সকলে সমান অধিকার নিয়ে বসবাস করবে। যেখানে দুর্নীতি থাকবে না, বৈষম্য থাকবে না। এমন একটি সমাজ হবে, যেখানে মেধাই সকল কিছুর মাপকাঠি। বলেন, ‘এ জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের কিন্তু একই লক্ষ্য। ২৪ এর আন্দোলন এবং ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা আন্দোলন একই সূত্রে গাঁথা।

তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধে যারা শহীদ হয়েছে, লাখো মানুষ প্রাণ দিয়েছেন তাদের যদি আমরা সম্মান না দিতে পারি, সেটি আমাদের ব্যর্থতা। ২৪ এর আন্দোলনে যারা আত্মাহুতি দিয়েছেন তাদেরকেও আমাদের স্মরণ করতে হবে।’

সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, মনে রাখতে হবে আমাদের মুক্তিযুদ্ধ কিন্তু একজনের নেতৃত্বে হয় নাই। আমাদের স্বাধীনতার আদর্শ চেতনা এটা কিন্তু এক ব্যক্তির না। এটা ছিল বাংলাদেশের সকলের চাওয়া, এটার প্রতীক ছিলেন বঙ্গবন্ধু। এ আদর্শ বা চেতনা ছিল সাধারণ জনতার। মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতৃত্ব দেয়া যে দল, সেই দল সরকারে থাকা সত্ত্বেও মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস আমরা আমাদের নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে ব্যর্থ হয়েছি। এটা চিন্তা করলে আমি বিস্মিত হই, অবাক হই, আমি আশ্চর্য হই। কেন এটা করা হল না, কেন আমরা নতুন প্রজন্মকে সুযোগ দিলাম না, কার কি অবদান ছিল- এটা জানার সুযোগ দেয়া হল না, এই প্রশ্ন থেকে যায়।

সোহেল তাজের তিনটি দাবি হলো-

১. যেহেতু ১০ এপ্রিল, ১৯৭১ স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের মাধ্যমে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের প্রথম সরকার গঠিত হয়, সেহেতু বাংলাদেশ স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র (প্রজাতন্ত্র) হিসেবে জন্ম লাভ করে। তাই এ দিনটিকে ‘প্রজাতন্ত্র দিবস’ ঘোষণা করতে হবে।

২. ৩ নভেম্বর জেলহত্যা দিবসকে জাতীয় শোক দিবস হিসেবে ঘোষণা করে রাষ্ট্রীয়ভাবে পালন করতে হবে।

৩. জাতীয় চার নেতাসহ মহান মুক্তিযুদ্ধের সব বেসামরিক ও সামরিক সংগঠক, পরিচালক, অমর শহীদ ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নাম, অবদান ও জীবনীসহ মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ও পূর্ণাঙ্গ ইতিহাস যথাযথ মর্যাদা ও গুরুত্বের সঙ্গে সর্বস্তরের পাঠ্যপুস্তকে ও সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

আরও