বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড় দানায় পরিণত হয়ে বাংলাদেশের উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে। এর প্রভাবে খুলনাসহ উপকূলীয় অঞ্চলে বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে।
খুলনা আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, বুধবার (২৩ অক্টোবর) সকাল ১১টা থেকেই আকাশ মেঘাচ্ছন্ন ছিল এবং বেলা ১২টার দিকে বৃষ্টি শুরু হয়। এরপর বিকাল ৩টা পর্যন্ত খুলনায় ৮ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) রাতে ঘূর্ণিঝড় দানা ভারতের উড়িষ্যার দিকে অগ্রসর হয়ে উপকূল অতিক্রম করতে পারে। এরই মধ্যে মোংলা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
উপকূলীয় এলাকার মানুষের মধ্যে বেড়িবাঁধ নিয়ে উৎকণ্ঠা তৈরি হয়েছে। খুলনার কয়রা, দাকোপ, পাইকগাছা ও বটিয়াঘাটার স্থানীয়রা আশঙ্কা করছেন ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে দুর্বল বেড়িবাঁধ ভেঙে তাদের এলাকা প্লাবিত হতে পারে। বিশেষত গত ঘূর্ণিঝড় রিমালে ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় ২৩ কিলোমিটার বাঁধ এখনও মেরামত না হওয়ায় পরিস্থিতি আরো সংকটজনক হয়ে উঠেছে।
কয়রা উপজেলার মদিনাবাদ গ্রামের বাসিন্দা সোহাগ হোসেন বলেন, আমাদের এলাকায় প্রায় ৩০০ মিটার বেড়িবাঁধ ধসে গেছে। নদীতে জোয়ারের চাপ বাড়লে পুরো এলাকা প্লাবিত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।
এছাড়াও দাকোপ, পাইকগাছা, এবং বটিয়াঘাটার বিভিন্ন এলাকার বেড়িবাঁধগুলোও ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। পানখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শেখ সাব্বির আহমেদ বলেন, বাঁধ দীর্ঘদিন ধরে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। কিন্তু মেরামতের উদ্যোগ নেয়া হয়নি।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের খুলনা-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আশরাফুল আলম বলেন, ঘূর্ণিঝড় রিমালে ক্ষতিগ্রস্ত ১৫ কিলোমিটার বাঁধ ইতোমধ্যে মেরামত করা হয়েছে। বাকি ২৩ কিলোমিটার বাঁধ মেরামতের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে, যা শীঘ্রই শুরু হবে।
ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় খুলনা জেলায় ৬০৪টি সাইক্লোন শেল্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে, যেখানে প্রায় ৩ লাখ মানুষ আশ্রয় নিতে পারবে। এছাড়াও স্বেচ্ছাসেবক দল ও সরকারি কর্মকর্তাদের প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
খুলনার জেলা প্রশাসক মো. সাইফুল ইসলাম জানান, দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। সাইক্লোন শেল্টারগুলো প্রস্তুত রয়েছে এবং প্রয়োজনে মানুষকে আশ্রয় নেয়া হবে।
মোংলা বন্দরসহ অন্যান্য স্থাপনাতেও সতর্কতা জারি করা হয়েছে।