কক্সবাজারের টেকনাফে নাফ নদীর ওপারে মিয়ানমারে সংঘাত চলছে। গতকাল দুপুর ১২টায় শুরু হওয়া গোলাগুলি বিকাল পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। কয়েকটি গুলি এসে টেকনাফ স্থলবন্দরের পণ্যবাহী ট্রাক ও স্থানীয় এক ব্যক্তির ঘরে লেগেছে। এ ঘটনার পর টেকনাফ স্থলবন্দরসহ দমদমিয়া এলাকায় নতুন করে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। জনপ্রতিনিধি, বন্দর কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় বাসিন্দারা এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে।
বন্দর সূত্রে জানা গেছে, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের দুটি সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ) ও আরাকান রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশনের (আরএসও) মধ্যে গোলাগুলি ও সংঘর্ষ চলছে। টেকনাফ স্থলবন্দরের কিছুটা দূরে নাফ নদীর অভ্যন্তরে লালদিয়ার দ্বীপ ঘিরে এ সংঘর্ষ চলছে বলে জানা গেছে। লালদিয়া দ্বীপ মিয়ানমারের অভ্যন্তরে পড়েছে। লালদিয়া চরে অবস্থানরত আরএসওকে হঠিয়ে আরাকান আর্মি চরটি নিয়ন্ত্রণে নিতে চায়। এ নিয়ে ১১ সেপ্টেম্বর একবার গোলাগুলি হয়েছিল। দ্বিতীয় দফায় গতকাল আবারো গোলাগুলি হয়েছে।
হ্নীলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী বলেন, ‘দুপুরে গুলির শব্দে দমদমিয়াসহ বন্দর এলাকা কেঁপে ওঠে। গুলি দমদমিয়ার আয়ুব নামে এক ব্যক্তির ঘরে এসে লেগেছে। বাড়িটির জানালা ও ভেতরে আলমারিতে গুলি লেগেছে। বন্দরেও কয়েকটি গুলি এসে পড়েছে।’
স্থলবন্দর পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড ল্যান্ড পোর্ট লিমিটেডের ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘দুপুরে কার্যালয়ে অবস্থান করার সময় গোলাগুলির শব্দ শুনতে পেয়েছি। একপর্যায়ে কার্যালয়ের জানালায় এসে গুলি লাগে। এতে জানালা ভেঙে যায়। এ সময় পণ্য বোঝাইকারী একটি ট্রাকেও গুলি লেগেছে। এর আগে গত বুধ ও বৃহস্পতিবারও গোলাগুলির শব্দ শোনা গেছে। বন্দরের কার্যক্রম সাময়িক বন্ধ রয়েছে।’
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আদনান চৌধুরী বলেন, ‘গতকাল দুপুর ১২টার দিকে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সংঘাতের জেরে ছোড়া কয়েকটি গুলি টেকনাফ স্থলবন্দরের ভবনে আঘাত হানে। এতে ভবনটির দরজা-জানালার কাচ ভেঙেছে। তবে এতে কেউ হতাহত হননি। বিষয়টি বিজিবি ও কোস্টগার্ডসহ প্রশাসনের সংশ্লিষ্টদের জানানো হয়েছে।’