চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে বেড়েছে ডায়রিয়ার প্রকোপ। গত দুই মাসে রোগটিতে আক্রান্ত হয়েছে ৪৪০ জন। এর মধ্যে অর্ধেকই শিশু। চিকিৎসকরা বলছেন, বন্যার কারণে রোগীর সংখ্যা বাড়লেও শিশুদের ডায়রিয়া হচ্ছে মূলত মায়ের অসচেতনতার কারণে। মায়েরা ময়লা হাতে শিশুকে খাবার খাওয়ান। অনেক সময় শিশুর হাত পরিষ্কার না করেই খাবার দেয়া হয়। এছাড়া পুকুরের পানি দিয়ে রান্না করা খাবার খাওয়ানোর কারণেও শিশুরা আক্রান্ত হচ্ছে।
মিরসরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, সেপ্টেম্বরে ১৮৮ জন ডায়রিয়া রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে। এদের মধ্যে শিশু ১০০টি। ২৯ অক্টোবর পর্যন্ত ২৫২ জন চিকিৎসা নিয়েছে। এর মধ্যে শিশু রয়েছে ১২০টি। মার্চ-এপ্রিলে নিয়মিত দুই শতাধিক ডায়রিয়া রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছিল। কিন্তু মে, জুন ও জুলাইয়ে অনেকটা কমে যায়। আগস্টে বন্যার কারণে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে ডায়রিয়া রোগী বাড়তে থাকে। গত ২৪ ঘণ্টায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৫ জন ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হয়েছে। ওদের মধ্য আটটি শিশু। গতকাল পর্যন্ত ১৭ জন ডায়রিয়া রোগী ভর্তি ছিল।
মিরসরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নার্স ইনর্চাজ সীমা রানী নাথ বণিক বার্তাকে বলেন, ‘মায়ের অসচেতনতায় শিশুদের ডায়রিয়া বাড়ছে। শিশুর ডায়রিয়া হলে যে পরিমাণ চিকিৎসা ও সেবা নিতে হয়, মায়েরা তা করেন না। এছাড়া পুকুরে পানি ব্যবহারের কারণে ডায়রিয়া হতে পারে। আমরা সবসময় মায়েদের সচেতন হতে পরামর্শ দিচ্ছি।’
সরজমিনে মিরসরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, শিশু ওয়ার্ডের ১২টি আসনে ১৭টি শিশু ভর্তি রয়েছে। ১৩ মাস বয়সী জুবায়েদা জ্বর ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে তাকে।
চৌধুরীহাট এলাকার দিদারুল আলমের মেয়ে জান্নাতুল আনিশা (দেড় বছর) বমি ও ডায়রিয়া নিয়ে সোমবার সকালে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়। তার মা বলেন, ‘রোববার রাতে হঠাৎ করে আনিশার বমি ও ডায়রিয়া শুরু হয়। সোমবার সকালে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সুস্থ হতে আরো কয়েকদিন সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।’