কানপুর টেস্টে আড়াই দিনের খেলা বৃষ্টিতে পণ্ড হওয়ার পর জমজমাট লড়াই হলো চতুর্থ দিনে। ১৮ উইকেট পতনের এদিন কানপুরের দর্শক ছক্কাই দেখছে ১২টি। ভারত গড়েছে মোট ৯টি রেকর্ড।
গতকাল ৩ উইকেটে ১০৭ রান নিয়ে দিন শুরু করা বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসে ২৩৩ রানে অলআউট হয়ে যায়। এরপর স্বাগতিকরা দুর্দান্ত শুরুর পরও একটি পর্যায়ে তিনশ রানের আগেই অলআউট হওয়ার ঝুঁকিতে পড়লে ৯ উইকেটে ২৮৫ রানে ইনিংস ঘোষণা করে। যদিও শেষ বিকালে বাংলাদেশের ২ উইকেট তুলে নিয়ে এগিয়ে রয়েছে রোহিত শর্মার দল। চতুর্থ দিন শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ২৬/২। এখনো ২৬ রানে এগিয়ে ভারত।
কৃতী অফস্পিনার রবিচন্দ্র অশ্বিন শেষ বিকালে দুটি উইকেট তুলে নেন। দলীয় ১৮ রানে জাকির হাসানকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলে ও ২৬ রানের মাথায় নাইটওয়াচম্যান হাসান মাহমুদকে বোল্ড করে সাজঘরে ফেরান তিনি। সাদমান ইসলাম ৭ ও মুমিনুল হক শূন্য রানে অপরাজিত রয়েছেন।
এর আগে রোহিত ১১ বলে ১ চার ও ৩ ছক্কায় ২৩ রান করে আউট হওয়ার পর জশস্বী জয়সোয়াল ৫১ বলে ৭২ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে দলের রান ১০০ পার করান। ৩১ বলে ফিফটি করেন জয়সোয়াল। এটা ভারতের ইতিহাসে চতুর্থ দ্রুততম ফিফটি। দুজন ভিত গড়ে দেয়ার পর লোকেশ রাহুল (৪৩ বলে ৬৮), বিরাট কোহলি (৩৫ বলে ৪৭) ও শুভমান গিলের (৩৬ বলে ৩৯) ব্যাটে ভর করে ২৮৫ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করে স্বাগতিকরা। সাকিব আল হাসান ও মেহেদী হাসান মিরাজ উভয়ই ৪টি করে উইকেট নেন।
বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ে মাত্র তিন ওভারেই ৫১ রান তুলে নেয় স্বাগতিকরা। ১৪৭ বছরের টেস্ট ইতিহাসে এটিই দ্রুততম দলগত ফিফটি।
ঝড়ো ফিফটির পর রানের চাকা কিছুটা শ্লথ হলেও ১০.১ ওভারে ১০০ তুলে নেয় ভারত। টেস্ট ইতিহাসে এর আগে এত কম ওভারে আর কোনো দল ১০০ করতে পারেনি। আগের রেকর্ডটি ভারতেরই গড়া। ২০২৩ সালে পোর্ট অব স্পেনে স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ১২.২ ওভারের ১০০ ছুঁয়েছিল ভারতীয়রা। রোহিতও রেকর্ডের অংশ হয়েছেন। তিনি নিজের ইনিংসের প্রথম দুই বলেই ছক্কা হাঁকিয়েছেন। ইতিহাসের চতুর্থ ব্যাটার হিসেবে ইনিংসের প্রথম দুই বলে টানা ছক্কা হাঁকান তিনি।
বাংলাদেশ ৭৪.২ ওভারে তুলেছিল ২৩৩ রান। ভারতীয়রা সেই রান স্পর্শ করে মাত্র ২৭.৪ ওভারে! সাকিব ও মিরাজের প্রতিরোধের মুখে অবশ্য শেষটা ভালো হয়নি ভারতের।
ওভারপ্রতি ৮.২২ রান তুলেছে ভারত, যা কোনো পূর্ণাঙ্গ টেস্ট ইনিংসে সর্বোচ্চ। আবার গতকাল ১১টিসহ চলতি বছর ৯৬টি ছক্কায় নতুন রেকর্ড গড়েছে দলটি। ২০২২ সালে ৮৯টি ছক্কা মেরে আগের রেকর্ডটি গড়েছিল ইংল্যান্ড।
এর আগে সকালে ‘নিঃসঙ্গ শেরপা’ হয়ে লড়েছেন মুমিনুল হক। ৪০ রানে অপরাজিত থেকে ব্যাটিং করতে নামা এ বামহাতি ১৩তম সেঞ্চুরি তুলে নেন দাপটে। ৬ উইকেটে ২০৫ রান নিয়ে লাঞ্চ বিরতিতে যাওয়া সফরকারীরা পরের ৮.২ ওভারে শেষ ৪ উইকেট হারায়। শেষ ৫০ বলে পতন ঘটে ৪ উইকেট, রান আসে ২৮। মুমিনুল করেন নিজের ১৩তম ও দেশের বাইরে দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। ১৯৪ বলে ১৭ বাউন্ডারি ও ১ ছক্কায় ১০৭ রান করেন তিনি। এদিন তৃতীয় বামহাতি স্পিনার হিসেবে টেস্টে ৩০০ উইকেট পূর্ণ করেন রবীন্দ্র জাদেজা।