লেবাননে বিমান হামলায় নিহত নিজামের বাড়িতে আহাজারি

১২ বছরের প্রবাস জীবনে পরিবারে আর্থিক সচ্ছলতা আনতে না পারলেও মায়ের থাকার জন্য একটি টিনের ঘর বানিয়েছিলেন। ঘর বানানোর ৬ মাস পরেই মারা যান মা আনোয়ারা বেগম।

লেবাননের বৈরুতে ইসরাইলি বিমান হামলায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবার নিজাম উদ্দিন (৩২) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। গতকাল শনিবার (২ নভেম্বর) স্থানীয় সময় বিকেল সাড়ে ৩টায় বৈরুতের হাজমিয়ে এলাকায় মৃত্যু হয় তার।

নিহত নিজাম উদ্দিন কসবা উপজেলার খাড়েরা গ্রামের মৃত আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে। নিজামের মৃত্যুর খবরে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। দ্রুত তার মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়েছেন স্বজনরা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, খাড়েরা গ্রামের আব্দুল কুদ্দুস ও আনোয়ারা বেগম দম্পতির পাঁচ সন্তানের মধ্যে সবার ছোট নিজাম উদ্দিন। অনটনের সংসারে নুন আনতেই পান্তা ফুরাতো। তাই অর্থনৈতিক সচ্ছলতা আনতে ৭ লাখ টাকা দেনা করে ১২ বছর আগে লেবাননে পাড়ি জমান নিজাম। তবে সেখানে গিয়ে নির্ধারিত কাজ না পাওয়ায় ভালো উপার্জন ছিল না তার।

১২ বছরের প্রবাস জীবনে পরিবারে আর্থিক সচ্ছলতা আনতে না পারলেও মায়ের থাকার জন্য একটি টিনের ঘর বানিয়েছিলেন। ঘর বানানোর ৬ মাস পরেই মারা যান মা আনোয়ারা বেগম।

নিজামের বড় বোন সায়েরা বেগম জানান, বৈধ কাগজপত্র না থাকায় নিজাম দেশে ফিরতে পারেনি। পরিবারের সবাই বিয়ের কথা বলেলেও অর্থনৈতিক কারণে বারবারই এড়িয়ে গেছে সে। গতকাল শনিবার লেবাননের বৈরুতে একটি হোটেলে ইসরাইলের করা বিমান হামলায় মারা যান নিজাম। রাতে তার বন্ধুর মাধ্যমে মৃত্যুর খবর আসে। দ্রুত নিজামের মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনার দাবি জানান তিনি।

কসবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ শাহরিয়ার মোক্তার জানান, ইতোমধ্যে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করা হয়েছে। বৈরুতের পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলেই নিজামের মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনা হবে।

আরও