রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অযত্নে, অবহেলায় ভর্তির সময় জমা দেওয়া
শিক্ষার্থীদের মার্কশিট আর রেজিষ্ট্রেশন
কার্ড নষ্ট হয়ে গেছে পোকা কাটায়। জানা গেছে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সময়
জমা দিতে হয় অরিজিনাল এইচএসসি, এসএসসি মার্কশিট এবং রেজিষ্ট্রেশন কার্ড। সেগুলো
সংরক্ষণ করার দায়িত্বে থাকে বিভাগগুলো। বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) নৃবিজ্ঞান
বিভাগের এক শিক্ষার্থী তার মার্কশিট তুলতে গিয়ে দেখেন সবগুলো পোকায় খেয়ে নষ্ট করে
ফেলেছে। এক এক করে প্রায় ২৫ থেকে ৩০ জন শিক্ষার্থীর গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র একই
অবস্থায় দেখতে পান।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের ইত্তেহাদুল ইসলামসহ
বিভাগের প্রায় অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী বলেন, ডিপার্টমেন্ট আমাদের জীবনের এত গুরুত্বপূর্ণ
ডকুমেন্টসগুলোর সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পারে নাই। ভর্তির সময় জমা দেয়া মার্কশিট,
রেজিষ্ট্রেশন কার্ড থেকে শুরু করে প্রয়োজনীয় সকল ডকুমেন্টস ধ্বংস করে ফেলল।
এজন্যেই কি আমরা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছিলাম?
শিক্ষার্থীরা
দাবি করেন, তাদের কাগজপত্রগুলা বিভাগের অফিসের ফ্লোরে পড়ে ছিল। এজন্য সহজেই পোকা
কেটেছে। এটা অবশ্যই অেপেশাদার এবং দায়িত্বজ্ঞানহীন কাজ। ডিপার্টমেন্টের দায়িত্ব
হবে ক্ষতিপূরণ দিয়ে নতুন কপি এনে দেয়া।
তবে
বিভাগ কর্তৃপক্ষ বলছে, তিন মাস ধরে ডিপার্টমেন্ট বন্ধ ছিল এজন্য এমন অবস্থা হয়েছে।
তাছাড়া শিক্ষার্থীদের ডকুমেন্টগুলো ফেরত নিতে বলা হয়েছিল। অনেকে তুলে নিলেও কিছু
সংখ্যক শিক্ষার্থীদের গাফিলতির কারণে তা থেকে যায়। তবে বিভাগ থেকে সহযোগিতা করার
আশ্বাস দিচ্ছি।
এ
বিষয়ে নৃবিজ্ঞান বিভাগের ২০২০-২১ সেশনের শিক্ষার্থী ইত্তেহাদুল
ইসলাম প্রণুত বলেন, ডকুমেন্টগুলো পোকা কেটেছে মূলত অফিসের স্টাফদেরই গাফিলতির কারণে।
তারা অযুহাত দিচ্ছে যে ৩ মাস ডিপার্টমেন্ট বন্ধ ছিলো এজন্য এমন অবস্থা হয়েছে।
কিন্তু আমাদের কাগজপত্রগুলা বিভাগের অফিসের ফ্লোরে পড়ে ছিল। এজন্য সহজেই পোকা কেটে
নিয়েছে। এখন উল্টো তারা ডকুমেন্ট আগে না নিয়ে যাওয়ার জন্য দোষারোপ করছে। সোজা
বাংলায় ভিক্টিম ব্লেইমিং করার ট্রাই করছে।
একই
ব্যাচের আরেক শিক্ষার্থী আব্দুল হামিদ শুভ বলেন, কতটা গুরুত্বহীন মনে হলে আমাদের
জীবনের গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্রগুলো ফ্লোরে ফেলে রাখতে পারে! আমরা কাগজগুলো যেভাবে
জমা দিয়েছি সেভাবেই পুনরুদ্ধার করে ফেরত দিতে হবে। পরবর্তী কর্মদিবসে এ বিষয়ে
বিভাগের সিদ্ধান্ত জানতে চাই। আর এই কাগজগুলো যার বা যাদের দায়িত্বে ছিল দায়িত্বে
অবহেলার জন্য তাদেরকে বিচারের আওতায় আনতে হবে।
এ
বিষয়ে নৃবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক কাজী রবিউল আলম বণিক বার্তাকে বলেন, বিষয়টি
জানার পর শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেছি। যাদের মার্কশিটের ফটোকপি নেই তাদেরকে
বিভাগ থেকে সহযোগিতা করার আশ্বাসও দিয়েছি। তবে শিক্ষার্থীদের কাগজপত্রগুলো তুলে
নেয়ার কথা বললেও অনেকেই তা করেনি। এতে তাদের গাফিলতিও আছে বলে মনে করছি। আর এটি
নিয়ে বিস্তারিত সিদ্ধান্তের জন্য কিছুটা অপেক্ষা করতে হবে। অ্যাকাডেমিক কমিটির সভায়
এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।'
সার্বিক
বিষয়ে জানতে চাইলে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড. এস এম এক্রাম উল্লাহ বণিক
বার্তাকে বলেন, আসলে এ বিষয়ে আমি অবগত নই। সত্যিকার অর্থে এমনটা ঘটে থাকলে আমি
উপাচার্য স্যারের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিব। তবে বিভাগ এবং
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিস্তারিত কথা বলে অবশ্যই তাদের সহযোগিতা করা হবে।