বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তবর্তী স্থান আমলীঘাট। ফেনী নদীর তীরবর্তী স্থানটি চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার করেরহাট ইউনিয়নের মধ্যে পড়েছে। ভারতীয় চিনি পাচারের জন্য রুটটি ব্যবহার করছে পাচারকারীরা। এজন্য ভারতীয় পাহাড়ি এলাকায় সুড়ঙ্গও তৈরি করা হয়েছে। চলতি মাসে ৬৫ বস্তা চিনি
জব্দ করেছে বিজিবি। পাচারকাজে ব্যবহার করা হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। অর্থলোভে এর সঙ্গে জড়িয়ে
পড়ছে কিশোর ও যুবকরা। সর্বশেষ
গত মঙ্গলবার চিনি পাচারের সময় নদীতে ডুবে এক কিশোরের মৃত্যুর
পর বেরিয়ে আসে এসব চাঞ্চল্যকর তথ্য।
করেরহাট ইউনিয়নের আমলীঘাটের কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আমলীঘাট চিনি পাচারের নিরাপদ রুট হয়ে দাঁড়িয়েছে। পাচারের জন্য ভারতীয় পাহাড়ি এলাকায় খোঁড়া হয়েছে সুড়ঙ্গ। এ সুড়ঙ্গ দিয়েই ভারতীয় পাচারকারীদের যোগসাজশে চিনিগুলো বাংলাদেশে পাচার করা হয়। এ কাজে ব্যবহার করা হয় স্থানীয় বাসিন্দাদের। সাধারণত রাত ৮টার পর শুরু হয় চিনি পাচার। ২০০-৩০০ শ্রমিক সুড়ঙ্গপথে ভারত থেকে চিনির বস্তাগুলো এনে নৌকাভর্তি করেন। প্রতি বস্তা চিনি পারাপারে দেয়া হয় ২০০ টাকা। একজন তিন-পাঁচ বস্তা চিনি আনতে পারেন। অভিযোগ রয়েছে, চিনি পারাপারে মাঝি হিসেবে কাজ করেন মফিজুল, জামাল ও রাইফুল। তাদের কাজ চিনি পাচারে শ্রমিক সংগ্রহ করা। প্রতিদিন দুই দেশের সীমান্ত বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে শত শত বস্তা চিনি ঢুকছে বাংলাদেশে। এসব চিনি স্থানীয় দোকান ছাড়াও সরবরাহ করা হয় চট্টগ্রাম শহরে। কয়েক মাস আগে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ তিন টন চিনিসহ দুই ব্যক্তিকে আটক করে। এছাড়া চলতি মাসে ৬৫ বস্তা চিনি জব্দ করেছে বিজিবি।
মফিজুলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘করেরহাট ইউনিয়নের পশ্চিম অলিনগর গ্রামের জামাল মাঝি ও তার ভাই রাইফুল নৌকার মাঝি হিসেব কাজ করেন। আমি মাঝে মাঝে করলেও এখন করি না।’
জোরারগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল হারুন বলেন, ‘সীমান্ত এলাকায় বিজিবি আমাদের প্রবেশ করতে দেয় না। এটা দেখভাল করার দায়িত্ব বিজিবির।’
বিজিবি অলিনগর বিওপির নায়েব সুবেদার আব্দুল কুদ্দুস বণিক বার্তাকে বলেন, ‘আমরা সবসময় সীমান্ত পাহারায় রয়েছি। স্থানীয়রা অনেক কথাই বলে। চলতি মাসে ৬৫ বস্তা চিনি জব্দ করেছি।’