বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দেয়ায় ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) সমালোচনা করেছেন ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সরেন। তিনি ভারত সরকারের নীতিকে দ্বিমুখী উল্লেখ করার পাশাপাশি নরেন্দ্র মোদিকে উদ্দেশ করে বলেছেন, ‘আপনি কেন শেখ হাসিনার উড়োজাহাজকে ভারতে অবতরণ করতে দিলেন; আর কীসের ভিত্তিতে তাকে আপনি আশ্রয় দিলেন?’ খবর হিন্দুস্তান টাইমস।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেন শেখ হাসিনা। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, শেখ হাসিনা দুই মাসের বেশি সময় ধরে দিল্লির লুটিয়েন্স এলাকায় অবস্থান করছেন। সেখানে বড় ধরনের একটি বাংলো বরাদ্দ পেয়েছেন তিনি। সাধারণত মন্ত্রী, জ্যেষ্ঠ এমপি ও সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তারা এ ধরনের বাংলো বরাদ্দ পেয়ে থাকেন।
সম্প্রতি ঝাড়খণ্ডের ঘরওয়া জেলায় এক নির্বাচনী সমাবেশে শেখ হাসিনার প্রসঙ্গটি তোলেন মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সরেন। মূলত দেশটির জাতীয় নাগরিক নিবন্ধন (এনআরসি) ও ইউনিফর্ম সিভিল কোডের (ইউসিসি) সমালোচনা করতে গিয়ে শেখ হাসিনাকে আলোচনায় টানেন মুখ্যমন্ত্রী।
হেমন্ত সরেন বলেন, ‘এনআরসি কিংবা ইউসিসি—ঝাড়খণ্ডে কোনোটাই বাস্তবায়ন হবে না। এখানে প্রাধান্য পাবে শুধু সিএনটি ও এসপিটি।’ ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার (জেএমএম) নির্বাহী প্রেসিডেন্ট হেমন্ত অভিযোগ করেন, ‘বিজেপি শুধু এখানকার বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মাঝে বিভাজন তৈরির চেষ্টা করছে। তাদের কাছ থেকে দূরে থাকাটা গুরুত্বপূর্ণ।’
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বিজেপির নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করার পর এসব মন্তব্য করলেন হেমন্ত সরেন। ইশতেহারে বলা হয়েছে, ঝারখণ্ডে ইউসিসি বাস্তবায়নের পাশাপাশি ভারত থেকে অবৈধ বাংলাদেশীদের বিতাড়িত করা হবে।
হেমন্ত সরেনের অভিযোগ, বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারী ইস্যুতে ভারত সরকার দ্বিমুখী নীতি অনুসরণ করছে। নরেন্দ্র মোদিকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘শপথ নেয়ার সময় নরেন্দ্র মোদি সংবিধানের সামনে মাথা নত করেছিলেন। তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, সংবিধান অনুযায়ী দেশ চলবে এবং সমাজের সবার অধিকার রক্ষা করা হবে। আমি তাকে জিজ্ঞাসা করতে চাই, আপনি কি বাংলাদেশের সঙ্গে কোনো চুক্তি করেছেন? নয়তো আপনি কেন শেখ হাসিনাকে বহনকারী উড়োজাহাজকে ভারতের মাটিতে অবতরণ করতে দিলেন; কীসের ভিত্তিতে আপনি তাকে আশ্রয় দিলেন?’
হেমন্ত সরেন আরো বলেন, ‘আপনি ঝাড়খণ্ডে উৎপাদিত বিদ্যুৎ বাংলাদেশের কাছে বিক্রি করেন, আবার বাংলাদেশের অনুপ্রবেশকারীদের নিয়ে কথা বলেন! সীমান্ত রক্ষা করা এবং অনুপ্রবেশকারী ঠেকানোর দায়িত্ব কেন্দ্রীয় সরকারের; এখানে রাজ্য সরকারের কোনো ভূমিকা নেই। অনুপ্রবেশকারীরা যে রাজ্য দিয়ে ভারতে প্রবেশ করে, সেটি আপনারা (বিজেপি) শাসন করেন; আপনারা কেন অনুপ্রবেশকারীদের বাধা দেন না?’