বরিশালের মীরগঞ্জ ফেরিঘাট

অভিযানেও বন্ধ হচ্ছে না বাড়তি ভাড়া আদায়

বরিশালের নদীবেষ্টিত তিনটি উপজেলা মুলাদী, হিজলা ও মেহেন্দীগঞ্জ। এসব অঞ্চলের মানুষের বরিশাল শহরের সঙ্গে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম মীরগঞ্জ ফেরিঘাট।

বরিশালের নদীবেষ্টিত তিনটি উপজেলা মুলাদী, হিজলা ও মেহেন্দীগঞ্জ। এসব অঞ্চলের মানুষের বরিশাল শহরের সঙ্গে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম মীরগঞ্জ ফেরিঘাট। যাত্রী ও যানবাহনের জন্য ভাড়া নির্ধারণ করে সড়ক ও জনপথ বিভাগ ঘাটটি ইজারা দিয়েছে। তবে অভিযোগ রয়েছে, নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে বেশি আদায় করছেন ইজারাদার। বিভিন্ন সময় অভিযান পরিচালনা করা হলেও বন্ধ হয়নি বাড়তি ভাড়া আদায়।

যাত্রীদের অভিযোগ, জনপ্রতি ভাড়া ৮ টাকা হলেও দিতে হয় ২০ টাকা। একইভাবে ফেরি পারাপারে একটি মোটরসাইকেলের ভাড়া ৩০ টাকা নির্ধারিত থাকলেও গুনতে হয় ৫০-৬০ টাকা। বাস ভাড়া ৯০ টাকা হলেও আদায় করা হয় ৫৫০-৬০০, পণ্যবাহী অটোগাড়ি ৪০ টাকার স্থলে ৪০০-৫০০, পিকআপ ৮০ টাকার স্থলে দেড় হাজার টাকা আদায় করা হয়। এছাড়া প্রাইভেট কার ভাড়া ৫০ টাকা নির্ধারণ থাকলেও গুনতে হয় ২ হাজার ৮০০ টাকা। আবার রাত ৮টা বাজতেই স্বেচ্ছাচারিতা চরম পর্যায়ে পৌঁছে। এ সময় ইচ্ছামতো ভাড়া আদায় করে ইজারাদারের লোকজন। ভাড়া আদায়ে কোনো রসিদও দেয়া হয় না।

ট্রাকচালক রিপন রাঢ়ী বলেন, ‘লোড হোক বা খালি, ট্রাক একবার ফেরি পার হতেই গুনতে হয় ১ হাজার ৪০০ টাকা। আর আপডাউনে দিতে হয় ২ হাজার ৮০০ টাকা। তবে ভাড়া আদায়ের রসিদ দেয়া হয় না।’

অতিরিক্ত ভাড়া নেয়ার অভিযোগে ইজারাদার মেসার্স সিমু এন্টারপ্রাইজকে ১৭ সেপ্টেম্বর ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। একই অভিযোগে ২৬ অক্টোবর পুনরায় ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মেসার্স শিমু এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী রফিকুল ইসলাম খোকনের স্ত্রী। বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য রফিকুল ইসলাম খোকন ৫ আগস্টের পর থেকে আত্মগোপনে। সেখান থেকেও পরিবারের লোকজন দিয়ে মীরগঞ্জ ফেরি ঘাট পরিচালনা করছেন তিনি।

এ ব্যাপারে ইজারাদারের সহযোগী রাকিবুল ইসলাম মামুন বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে নির্ধারিত চার্টে ভাড়া নিলে ক্ষতির মুখে পড়তে হবে। তার পরও আমরা সহনীয় পর্যায়ে ভাড়া নিচ্ছি। ম্যাজিস্ট্রেট এসে কিছু বুঝে ওঠার আগেই জরিমানা করে চলে যান। এক মাসের মধ্যে দুবার জরিমানা করায় আমাদের আরো ক্ষতির মুখে পড়তে হবে।’

বরিশাল জেলা পরিষদের প্রশাসক মো. সোহরাব হোসেন (অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার, সার্বিক) বলেন, ‘অতিরিক্ত ভাড়া নেয়ার বিষয়ে ইজারাদারের বিরুদ্ধে কোনো আভিযোগ আসেনি। তাছাড়া অতিরিক্ত টাকা নেয়ার কারণে যদি ইজারাদারকে জরিমানা করা হয়, সেটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লিখিতভাবে জানালে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

আরও