গাজীপুরে তিন কারখানায় শ্রমিকদের কর্মবিরতি

বিভিন্ন দাবিতে গাজীপুরে তিনটি কারখানায় কর্মবিরতি পালন করেছেন শ্রমিকরা।

বিভিন্ন দাবিতে গাজীপুরে তিনটি কারখানায় কর্মবিরতি পালন করেছেন শ্রমিকরা। এর মধ্যে কোনাবাড়ী জরুন এলাকায় ইসলাম গ্রুপের শ্রমিকরা ২১ দফা এবং তুসুকা গ্রুপের শ্রমিকরা ১৬ দফা দাবিতে কর্মবিরতি পালন করেন। গতকাল সকাল সাড়ে ৮টা থেকে তারা কারখানার অভ্যন্তরে প্রধান ফটকের সামনে বিক্ষোভ মিছিলও করেন। তবে দাবি মেনে নেয়ায় বিকাল ৩টার দিকে শ্রমিকরা কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে নেন। এছাড়া চাকরিচ্যুতির প্রতিবাদ ও বকেয়া বেতন পরিশোধসহ আট দাবিতে টঙ্গীর ফেমাস প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং কারখানার শ্রমিকরা অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন। গতকাল বেলা ২টা পর্যন্ত এ কর্মসূচি পালন করেন তারা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শ্রমিকদের কর্মবিরতি ও বিক্ষোভের মুখে ইসলাম গ্রুপ কর্তৃপক্ষ গতকাল কারখানায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে। পরে শ্রমিকরা বাসায় চলে যান। তবে তুসুকা গ্রুপ কর্তৃপক্ষ ছুটি ঘোষণা না করলেও তারা কাজে যোগ দেননি।

ইসলাম গ্রুপের শ্রমিক বাপ্পি বলেন, ‌‘আমাদের ২১ দফা দাবির মধ্যে প্রায় সব দাবি মেনে নিলেও ১৪ জন কর্মকর্তার অব্যাহতির বিষয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষ কিছুই জানায়নি।’

জাতীয় গার্মেন্ট শ্রমিক জোট বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও কোনাবাড়ী থানার সভাপতি আশরাফুজ্জামান জানান, তুসুকা এবং ইসলাম গ্রুপের শ্রমিকদের দাবিগুলো আমি দেখেছি। অনেক দাবি মালিক পক্ষ পূরণের আশ্বাস দিয়েছে। এ অবস্থায় কর্মবিরতি প্রত্যাহার করেছেন শ্রমিকরা।

অন্যদিকে টঙ্গীর ফেমাস প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং কারখানার শ্রমিকরা মঙ্গলবার থেকে কর্মবিরতি পালন করে আসছেন। কারখানাটিতে ১২৭ জন শ্রমিক কাজ করতেন। মঙ্গলবার বিকালে কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের চাকরিচ্যুতের বিষয়টি মৌখিকভাবে ঘোষণা করে। এরপর থেকে শ্রমিকরা কারখানার ভেতরে অবস্থান নেন। বুধবার সকালে কারখানা কর্তৃপক্ষ নোটিস বোর্ডে চাকরিচ্যুতি ও কারখানা বন্ধের নোটিস ঝুলিয়ে দেয়। তবে শ্রমিক ও কর্মকর্তাদের অক্টোবরের বেতন এবং অতিরিক্ত মজুরি পরিশোধ করেনি মালিক পক্ষ। শ্রমিকরা পাওনা পরিশোধের দাবি জানালে মালিক পক্ষ অপারগতা প্রকাশ করে। পাওনা আদায়ে সহযোগিতা চেয়ে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর, শিল্প পুলিশসহ (আইআরআই) বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের কাছে আবেদন করেছেন তারা।

এ ব্যাপারে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের পরিদর্শক সঞ্জয় কুমার দাস বলেন, ‘কারখানা মালিকের প্রতিনিধি মো. রানা আমাদের জানিয়েছেন, আজ বিকালে কারখানার মালিক মোহাম্মদ হাসান আসবেন। শ্রমিকদের প্রতিনিধিরা আসবেন।’

গাজীপুর শিল্প পুলিশের পরিদর্শক (টঙ্গী জোন) কৃপা সিন্ধু বালা বলেন, ‘পাঁচদিন ধরে কারখানার ভেতরে শ্রমিকরা অবস্থান করছেন। কারখানায় বিশৃঙ্খলা ও ভাংচুর থেকে বিরত থাকতে শ্রমিকদের অনুরোধ করা হয়েছে। বিষয়টি সমাধানের জন্য মালিকপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা চলছে।’

আরও