২০ এপ্রিল থেকে ১৯ জুলাই পর্যন্ত তিন মাস দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বৃহৎ কৃত্রিম জলাধার রাঙ্গামাটির কাপ্তাই হ্রদে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে জেলা প্রশাসন। হ্রদে কার্পজাতীয় মাছের বংশবিস্তার ও প্রাকৃতিক প্রজনন নিশ্চিতকরণে প্রতি বছরের মতো এবারো এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। ফলে এ তিন মাস সব ধরনের মাছ শিকার, বাজারজাত এবং পরিবহন করা যাবে না। এ সময় বন্ধ থাকবে স্থানীয় পর্যায়ের বরফ কল। নিয়মিত হ্রদ টহলে থাকবে বিএফডিসির মনিটরিং টিম।
গতকাল বেলা ১১টায় রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক বৈঠক থেকে এ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছে। বৈঠকে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফডিসি) রাঙ্গামাটি বিপণন কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক কমান্ডার মো. আশরাফুল আলম ভূঁইয়া, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শ্রীবাস চন্দ্র চন্দ, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ সদস্য বিপুল ত্রিপুরা, সদর ইউএনও নাজমা বিনতে আমিন, সংরক্ষিত পৌর কাউন্সিলর জোবায়তুন নাহার, রাঙ্গামাটি জেলা মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক উদয়ন বড়ুয়াসহ অন্য মৎস্য ব্যবসায়ী ও খাতসংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, ‘প্রতি বছরের মতো এবারো কাপ্তাই হ্রদে কার্প জাতীয় মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন ও বংশবৃদ্ধির লক্ষ্যে তিন মাস মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। নিষেধাজ্ঞাকালীন মাছ আহরণের ওপর নির্ভরশীল জেলেদের বিশেষ ভিজিএফ কার্ডের মাধ্যমে খাদ্যশস্য সহায়তা দেয়া হবে। এছাড়া অবৈধ উপায়ে মাছ আহরণ, পরিবহন ও বাজারজাত বন্ধ করতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার পাশাপাশি কাপ্তাই হ্রদের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে নৌ-পুলিশ মোতায়েন করা হবে। হ্রদে অবৈধ উপায়ে মাছ শিকারের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
কেন এ বছর ১০ দিন আগে থেকে মাছ আহরণ বন্ধ হচ্ছে জানতে চাইলে সেলফোনে তিনি বলেন, ‘হ্রদের পানি কমে যাওয়ায় এবার ১০ দিন আগে থেকে মাছ আহরণ বন্ধ করা হয়েছে।’
এদিকে পানিস্বল্পতার কারণে কাপ্তাই হ্রদে তিন মাসের নিষেধাজ্ঞা গত বছর ১ মে থেকে ১৭ আগস্ট পর্যন্ত তিন মাস ১৭ দিন করা হয়েছিল। এর আগের মৌসুমেও একই কারণে তিন মাসের নির্ধারিত নিষেধাজ্ঞা এক মাস বাড়িয়ে চার মাস করা হয়েছিল।
কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ (কন্ট্রোল রুম) সূত্রে জানা গেছে, গতকাল দুপুর ১২টা পর্যন্ত কাপ্তাই হ্রদে ৭৬ দশমিক ৩৭ এমএসএল (মিনস সি লেভেল) পানি রয়েছে। স্বাভাবিক সময় অনুযায়ী হ্রদে পানি থাকার কথা ৮৬ দশমিক ২০ এমএসএল।