প্রথমবার দায়িত্ব নিয়েই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছেন তিন প্রতিমন্ত্রী

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী মনোনয়নে বড় ধরনের পরিবর্তন আনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। নির্বাচনের পর নতুন সরকারে অপেক্ষাকৃত নতুনদের জায়গা দিয়েছে ক্ষমতাসীনরা। এমনকি অর্থ, তথ্য ও বাণিজ্যের মতো সরকারের গুরুত্বপূর্ণ তিন মন্ত্রণালয়েও প্রতিমন্ত্রী হিসেবে নতুনদেরই বেছে নিয়েছেন সরকারপ্রধান। চলতি বছরের ১১ জানুয়ারি শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন মন্ত্রিসভায় প্রতিমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী মনোনয়নে বড় ধরনের পরিবর্তন আনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। নির্বাচনের পর নতুন সরকারে অপেক্ষাকৃত নতুনদের জায়গা দিয়েছে ক্ষমতাসীনরা। এমনকি অর্থ, তথ্য ও বাণিজ্যের মতো সরকারের গুরুত্বপূর্ণ তিন মন্ত্রণালয়েও প্রতিমন্ত্রী হিসেবে নতুনদেরই বেছে নিয়েছেন সরকারপ্রধান। চলতি বছরের ১১ জানুয়ারি শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন মন্ত্রিসভায় প্রতিমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন ঢাকা-১৭ আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলী আরাফাত ও টাঙ্গাইল-৬ আসনের সংসদ সদস্য আহসানুল ইসলাম টিটু। তাদের মধ্যে মোহাম্মদ আলী আরাফাত পান তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব। আর বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেয়া হয় আহসানুল ইসলাম টিটুকে। সরকার গঠনের ১ মাস ২০ দিনের মাথায় মন্ত্রিপরিষদের কলেবর বাড়ানো হয়। সে সময় অর্থ প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পান সংরক্ষিত নারী আসনের সদস্য ওয়াসিকা আয়শা খান। 

মন্ত্রিসভায় যোগ দেয়ার পর গত কয়েক মাসে তারা নিজ নিজ দপ্তর অনেকটাই সামলে নিয়েছেন। নবাগত হিসেবে কাজ শুরু করলেও এরই মধ্যে নিজ নিজ জায়গায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে শুরু করেছেন তারা। এ তিন মন্ত্রণালয়ের মধ্যে অর্থে একজন পূর্ণ মন্ত্রী থাকলেও তথ্য ও সম্প্রচার এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে কোনো পূর্ণ মন্ত্রী নিয়োগ দেননি সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা। 

চলমান প্রেক্ষাপটে তিনটি মন্ত্রণালয়েরই ভূমিকা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। এর মধ্যে অর্থ মন্ত্রণালয় দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন, জাতীয় বাজেট প্রণয়ন, করারোপ, অর্থসংশ্লিষ্ট আইন, বিধি-বিধান-প্রবিধান প্রণয়ন এবং বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কাজ করে থাকে। 

দেশের ইতিহাসে এ মন্ত্রণালয়ের প্রথম নারী প্রতিমন্ত্রী সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য ওয়াসিকা আয়শা খান। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাণিজ্যে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর করা এ রাজনীতিবিদ ২০১৪ ও ২০১৮ সালেও জাতীয় সংসদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে সংরক্ষিত নারী আসনের সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন। এছাড়া ২০২১ সালের জুনে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতিও হয়েছিলেন। 

রাজনৈতিক পরিবারে বেড়ে ওঠা ওয়াসিকা আয়শা খানের বাবা আতাউর রহমান খান কায়সার ছিলেন বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক এবং আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা। অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব ছাড়াও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অর্থ ও পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক হিসেবেও নিয়োজিত রয়েছেন ওয়াসিকা আয়শা খান। এছাড়া তিনি মহিলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। এর বাইরে তিনি জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার হ্রাসে গঠিত ক্লাইমেট পার্লামেন্ট বাংলাদেশ নেটওয়ার্কের ভাইস চেয়ারপারসন হিসেবে নিয়োজিত রয়েছেন। দায়িত্ব পালন করছেন চিটাগং আর্টস কমপ্লেক্সের উপদেষ্টা হিসেবেও।

ওয়াসিকা আয়শা খান এরই মধ্যে চট্টগ্রামের রাজনীতিতে শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করে নিয়েছেন। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ভাষ্য, সরকারের প্রভাবশালী মন্ত্রণালয়ে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি জাতীয় ও স্থানীয় রাজনীতিতেও নিজেকে সমানভাবে প্রাসঙ্গিক করে তুলছেন। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কর্মসূচিগুলোয় সরব উপস্থিতির পাশাপাশি নিজ এলাকা চট্টগ্রামের আনোয়ারা ও কর্ণফুলীতে নিয়মিত রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন তিনি।

মন্ত্রিসভায় নবাগত হিসেবে নিজের কাজের অভিজ্ঞতা প্রসঙ্গে ওয়াসিকা আয়শা খান বণিক বার্তাকে বলেন, ‘‌দাপ্তরিক বিষয় এক কথায় প্রকাশ করা যাবে না। অর্থ মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম ডাটানির্ভর। তবে মোটা দাগে বলা যায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা এবং সরকারের প্রায়োরিটি অনুসারে কার্যক্রম পরিচালনা করছি।’

তথ্য মন্ত্রণালয়ের কাজ হলো দেশের তথ্যসংশ্লিষ্ট সম্পদের উন্নয়ন, সংরক্ষণ, তথ্যের নিরাপদ সঞ্চালন ও তথ্য অধিকার সংরক্ষণ, অবাধ তথ্যপ্রবাহ নিশ্চিতকরণসহ সংশ্লিষ্ট বিবিধ আইন, বিধি-বিধান ও প্রবিধান প্রণয়ন এবং বাস্তবায়ন করা। এছাড়া এর একটি বড় অংশজুড়ে রয়েছে ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট গণমাধ্যমসংক্রান্ত কার্যাবলি।

বর্তমানে প্রতিমন্ত্রী হিসেবে এ দায়িত্ব এককভাবে সামলাচ্ছেন মোহাম্মদ আলী আরাফাত। এরই মধ্যে সরকারের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন তিনি। মোহাম্মদ আলী আরাফাত প্রথমবারের মতো জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হন গত বছর জুলাইয়ে। একাদশ জাতীয় সংসদে ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনের মধ্য দিয়ে তিনি প্রথম এমপি হিসেবে নির্বাচিত হন। এরপর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে একই আসন থেকে দ্বিতীয়বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। 

এর আগে ২০২২ সালে দলের ২২তম জাতীয় সম্মেলনের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন মোহাম্মদ আলী আরাফাত। পরে দলের আন্তর্জাতিক বিষয়ে কাজ শুরু করেন তিনি। বিভিন্ন কূটনৈতিক, রাষ্ট্রদূতসহ বিদেশীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন বৈঠকে প্রতিনিধি দলের সদস্য হিসেবে কার্যক্রম পরিচালনা করেন তিনি। এমনকি নিকট অতীতে নির্বাচন ইস্যুতে দলের পক্ষে বিদেশীদের কাছে অবস্থান তুলে ধরতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন তিনি।

যুক্তরাষ্ট্রের ওকলাহোমা স্টেট বিশ্ববিদ্যালয় এবং টেক্সাসের এ অ্যান্ড এম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী মোহাম্মদ আলী আরাফাত ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশে অধ্যাপনা করেছেন এক দশকেরও বেশি সময় ধরে। প্রতিষ্ঠানটির স্কুল অব বিজনেসের অনুষদের শিক্ষক হিসেবে স্মল বিজনেস ম্যানেজমেন্ট, অ্যাডভান্সড মার্কেটিং ম্যানেজমেন্ট, স্ট্র্যাটেজিক ম্যানেজমেন্টের বিষয় পড়িয়েছেন তিনি। পাশাপাশি দায়িত্ব পালন করেছেন সুচিন্তা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান হিসেবেও। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও চ্যালেঞ্জ, ট্রানজিট এবং কানেক্টিভিটি, বিদ্যুৎ খাতের জন্য উপযুক্ত নীতি, যুদ্ধাপরাধের বিচার, বাংলাদেশে রাজনৈতিক উন্নয়ন এবং গণতন্ত্র ইত্যাদির মতো বিভিন্ন বিষয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে নিবন্ধ লিখেছেন তিনি।

মন্ত্রণালয়ে নিজের কাজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে মোহাম্মদ আলী আরাফাত বণিক বার্তাকে বলেন, ‘এটা বিশাল এক মন্ত্রণালয়। এখানে অনেকগুলো ডিপার্টমেন্ট রয়েছে। তারা একযোগে কাজ করছে। আমি স্ট্র্যাটেজিক ম্যানেজমেন্টের ছাত্র। শিক্ষকতাও করেছি অনেক দিন। আমি মনে করি, এখানে একটা সিস্টেম দাঁড় করাতে পারলে কাজ অটোমেটিক হয়ে যাবে। আমরা কৌশলগত জায়গায় দৃষ্টি দিচ্ছি।’

তিনি বলেন, ‘গণমাধ্যমের কল্যাণ, মত প্রকাশ ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার জন্য স্বাস্থ্যকর সুন্দর পরিবেশ নিশ্চিত করা আমাদের অঙ্গীকার। একই সঙ্গে পেশাদার সাংবাদিকদের সঙ্গে নিয়ে অপতথ্যকেও মোকাবেলা করব। অসত্য তথ্য দিয়ে মিথ্যাচার করা ও গুজব ছড়ানো এমন এক ক্ষতিকারক বিষয়, যা পেশাদার সাংবাদিকতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। গণতন্ত্রকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। দেশকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। মানুষ যেন সঠিক তথ্য পায় সে বিষয়টিই নিশ্চিত করতে চাই।’

দেশের অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ-সম্প্রসারণ, দ্রব্যমূল্য পরিস্থিতিকে স্বাভাবিক ও সহনীয় পর্যায়ে রাখা, পণ্য ও সেবা রফতানির বাজার সম্প্রসারণ, বাণিজ্যসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ-আলোচনা, ব্যবসাসংক্রান্ত দ্বিপক্ষীয় ও বহুপক্ষীয় চুক্তি সম্পাদন, বাণিজ্যসংক্রান্ত গবেষণা পরিচালনাসহ বহুমুখী কাজ পরিচালনা ও দেখভালের সঙ্গে জড়িত বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। 

এ মন্ত্রণালয়ে প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন প্রথমবারের মতো মন্ত্রিসভায় স্থান পাওয়া আহসানুল ইসলাম টিটু। তিনি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে টাঙ্গাইল-৬ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এর আগে ২০০৮ সালে আসনটিতে তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। কিন্তু সেবার তিনি বিজয়ী হতে পারেননি। পরবর্তী সময়ে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে একই আসন থেকে বিজয়ী হয়ে প্রথমবারের মতো সংসদে প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ পান। এছাড়া তিনি টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

আহসানুল ইসলাম টিটু ঢাকা রেসিডেনশিয়াল মডেল থেকে মাধ্যমিক ও ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক সম্পন্ন করে ব্যাংককের অ্যাজাম্পশন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিবিএ ও যুক্তরাষ্ট্রের পিটসবার্গ স্টেট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ ডিগ্রি অর্জন করেন। পরবর্তী সময়ে ব্যবসায় নিযুক্ত হন। ১৯৯৩ সালে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সদস্যপদ পান। ১৯৯৫ সালে তিনি মনা ফাইন্যান্সিয়াল কনসালট্যান্সি অ্যান্ড সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তিনি সন্ধানী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব পালন করছেন। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের কাউন্সিলর, ভাইস চেয়ারম্যান, পরিচালক, সিনিয়র সহসভাপতি এবং সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। এছাড়া তিনি বাংলাদেশ বীমা সমিতিতে দায়িত্বশীল পদে যুক্ত ছিলেন।

মন্ত্রণালয় সামলানোর অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বণিক বার্তাকে বলেন, ‘যত সময় যাবে অভিজ্ঞতা তত বাড়বে। আমাদের মন্ত্রণালয়ের কাজ শুধু দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করা না। আমরা বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) ১৩তম মিনিস্ট্রিয়াল কনফারেন্সে গিয়েছি। সেখানে আমাদের কিছু অর্জন রয়েছে। এ মুহূর্তে আমরা জাপানের সঙ্গে ইপিএ নেগোসিয়েশন করছি। এর আগে আমরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে থাইল্যান্ড গিয়েছি। তাদের সঙ্গে আমরা ট্রেড এগ্রিমেন্ট করার চেষ্টা করছি। একাধিক দেশের সঙ্গে আমরা বাণিজ্যিক চুক্তি করার চেষ্টা করছি। মাল্টি ডাইমেনশনে আমাদের মন্ত্রণালয়ের কাজ চলছে। এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের সঙ্গে সঙ্গে নতুন বাজারে প্রবেশাধিকার পেতে আমাদের যাতে কোনো অসুবিধা না হয়, তার জন্য আমরা কাজ করছি। রফতানির বৈচিত্র্যায়ন নিয়ে আমরা কাজ করছি। বিভিন্ন আঙ্গিকে আমাদের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। এটি একটা ব্যস্ততম মন্ত্রণালয়।’

আরও