চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের করেরহাট ইউনিয়নের দক্ষিণ অলিনগরে নতুন করে শুরু হয়েছে নদীভাঙন। ফেনী নদীর পানি কমতে শুরু করায় ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। অনেকে ঘরবাড়ি অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। নদীপারের বাসিন্দাদের দাবি, ওই এলাকায় আধা কিলোমিটারের মধ্যে ৫০০ পরিবার ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে।
নদীপারের বাসিন্দারা জানান, অলিনগর অংশে ফেনী নদীর ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে লায়লা বেগম আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়সহ একটি মসজিদ ও মাদ্রাসা। ওই এলাকায় আধা কিলোমিটারের মধ্যে প্রায় ৫০০টি ঘরবাড়ি ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে। এরই মধ্যে বন্যায় নদীর গতিপথ পরির্বতন হওয়ায় ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। বন্যায় প্রায় ৩০ ফুট ভেঙে নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।
করেরহাট ইউনিয়নের দক্ষিণ অলিনগর গ্রামের মোল্লা বাড়ির জাকির হোসেন ভূঁইয়া বলেন, ‘আগে আমাদের বাড়িতে ৫০টি পরিবার ছিল। বিভিন্ন সময় নদীভাঙনের কবলে পড়ে ৩০টি পরিবার অন্যত্র চলে গেছে। সাম্প্রতিক বন্যায় আমার দুটি ঘর নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। আমার ভাইয়ের ঘর নদীগর্ভে চলে যাওয়ায় অন্যত্র ভাড়া বাসায় থাকছেন।’
ওই এলাকার বাসিন্দা মো. ইউনূস বলেন, ‘সাম্প্রতিক বন্যায় আমার ভিটেমাটি নদীতে চলে গেছে। পরিবার নিয়ে ২ হাজার টাকায় ভাড়া বাসায় উঠেছি। আমি দিনমজুর। কোনোমতে সংসার চলে। এ অবস্থায় কোনো কোনো মাসে ভাড়া দিতে হিমশিম খেতে হয়।’
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ৫ আগস্টের আগে শক্তিশালী ড্রেজার দিয়ে অপরিকল্পিতভাবে বালি উত্তোলনের কারণে নদীতে বিলীন হয়েছে ভাঙনরোধী ব্লক। ফলে সাম্প্রতিক বন্যায় ভাঙন বেড়েছে। বালি উত্তোলনকারীদের ভয়ে স্থানীয়রা মুখ খুলতে পারত না।
স্থানীয় বাসিন্দা আকলিমা আক্তার বলেন, ‘ভয়ে রাতে ঘুম আসে না। ছেলেমেয়েকে উপজেলার বামনসুন্দর দারোগারহাটে নানার বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছি। একটি ঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।’
নদীভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত জাফর উদ্দিন বলেন, ‘আমার একটি ঘর ও রান্নাঘর ভেঙে গেছে। ঘরের টিন নদীর স্রোতে চলে গেছে। অপরিকল্পিত বালি উত্তোলনের কারণে নদীতে দেয়া ব্লক ভেঙে গেছে। পার্শ্ববর্তী রোজিনা আক্তারের রান্নাঘর ও মহিউদ্দিনের গোয়ালঘর ভেঙে গেছে।’