পদ্মা সেতু হয়ে যশোর-ঢাকা রুটে পদ্মবিলা জংশন দিয়ে ট্রেন চলাচলের প্রস্তুতি চলছে। তবে সাধারণ মানুষ বলছে, যশোর শহর থেকে ১৮ কিলোমিটার দূরের এই স্টেশন থেকে ঢাকা যাওয়ার ট্রেন ধরতে যাওয়া ‘বাস্তবতাবিবর্জিত’। এ কারণে পদ্মবিলা জংশনের পরিবর্তে যশোর জংশন থেকে ঢাকা রুটের ট্রেন চলাচলের দাবিতে আন্দোলন করছে বৃহত্তর যশোর রেলযোগাযোগ উন্নয়ন সংগ্রাম কমিটি।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের কাজ প্রায় শেষ। নতুন এই রুটে ট্রেন চলাচল শুরু হলে যশোর থেকে ঢাকার দূরত্ব কমবে ১৯৩ কিলোমিটার। রেলপথটি ঢাকার কমলাপুর থেকে শুরু হয়ে নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ ও নড়াইলের ওপর দিয়ে যশোর গিয়ে শেষ হয়েছে। এই রেললিংক প্রকল্পে যশোর থেকে ৩ ঘণ্টায় ঢাকায় যাওয়া সম্ভব হবে।
বৃহত্তর যশোরবাসীকে পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকায় যাওয়ার জন্য ট্রেনে উঠতে হবে শহরের মূল স্টেশন থেকে ১৮ কিলোমিটার দূরের পদ্মবিলা স্টেশন থেকে। স্টেশনটির অবস্থান বেনাপোল থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার, ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর স্টেশন থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরে। এ অঞ্চলের মানুষকে ট্রেনে পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকায় যেতে হলে ১৮-৪৫ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে পদ্মবিলা স্টেশনে যেতে হবে। তাই ভোগান্তি লাঘবে পদ্মা সেতুর রুটের সঙ্গে বেনাপোল, যশোর, দর্শনা ও কোটচাঁদপুর রেলওয়ে স্টেশন সংযুক্ত করার দাবি তাদের।
বৃহত্তর যশোর রেল যোগাযোগ উন্নয়ন সংগ্রাম কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ফারাজী আহমেদ সাঈদ বুলবুল বলেন, ‘যশোর শহরের প্রাণকেন্দ্র দড়াটানা থেকে ১৮ কিলোমিটার দূরত্বের স্টেশনে পৌঁছতে সময় লাগে ১ ঘণ্টার বেশি।’
বৃহত্তর যশোর রেল যোগাযোগ উন্নয়ন সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক জাতীয় হকি দলের ম্যানেজার কাওসার আলী বলেন, ‘এজন্য আমাদের দাবি, যশোরের ট্রেন যশোর জংশন হয়ে যেতে হবে। এই দাবি আদায়ে প্রয়োজনে আমরা রেল অবরোধসহ আরো কর্মসূচি গ্রহণ করব।’
বৃহত্তর যশোর রেল যোগাযোগ উন্নয়ন সংগ্রাম কমিটির সদস্য সচিব রুহুল আমীন বলেন, ‘বর্তমানে যশোরবাসী ঢাকার সঙ্গে যোগাযোগের জন্য তিনটি ট্রেন পাচ্ছে। পদ্মা সেতু রেল প্রকল্প চালু হলে এ রুটে মাত্র একটা ট্রেন পাবে। এ অঞ্চলের মানুষ রেলসেবা থেকে বঞ্চিত হবে।’
যশোর রেলওয়ে জংশনের স্টেশনমাস্টার আয়নাল হাসান জানান, ঢাকার ট্রেনের ব্যাপারে এখনো কোনো নির্দেশনা তারা পাননি। মন্ত্রণালয় থেকে সিদ্ধান্ত নিলে খুলনার ট্রেনগুলো যশোর জংশন হয়ে ঢাকায় যাওয়া সম্ভব।