নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে সরকারের পদত্যাগ দাবি ছাত্রলীগের

অন্তর্বর্তী সরকারের পদত্যাগ দাবি করে ছাত্রলীগ বলেছে, ‘বাংলাদেশ ও এদেশের মানুষের ভাগ্যের উপর অন্ধকার নিয়ে আসা এই অবৈধ, দেশবিরোধী সরকারকে অবিলম্বে পদত্যাগ করে গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক শক্তির সরকার প্রতিষ্ঠায় এদেশের ছাত্র-তরুণ সমাজ, কৃষক-শ্রমিক ও জনতার প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।‘

বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। নিষেধাজ্ঞার সেই সিদ্ধান্তের আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিবাদ জানিয়েছে ছাত্রলীগ। এক বিবৃতিতে নিষিদ্ধ করার বিষয়টিকে ‘ষড়যন্ত্রমূলক সিদ্ধান্ত’ আখ্যা দিয়ে তা প্রত্যাখ্যান করেছে সংগঠনটি। একইসঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারকে ‘অবৈধ, অসাংবিধানিক, দেশবিরোধী’ উল্লেখ করে এর পদত্যাগ দাবি করেছে ছাত্রলীগ।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভ্যারিফায়েড ফেসবুক পেইজে বিবৃতিটি দেয়া হয়। ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন এবং সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়, 'বাংলা ভাষা, স্বাধীনতা, গণতন্ত্র, সাম্য ও মানবিক মর্যাদায় যুগে যুগে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের রয়েছে লড়াকু ইতিহাস। ৫২’ র ভাষা আন্দোলন, ৬২’ র শিক্ষা আন্দোলন, ৬৬’ র ছয়দফা, ৬৯’ র গণঅভ্যুত্থান, ৭১’ র মহান মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব ও আত্মদান থেকে শুরু করে পরবর্তীতে জনগণের সকল আন্দোলনেও যুগপৎ স্রষ্টা হিসেবে ভূমিকা রেখেছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। এছাড়াও গণতন্ত্রের রক্ষাকবচ, সাম্য-মানবিক ও কল্যাণধর্মী রাষ্ট্র বিনির্মাণে সোচ্চার থেকেছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।'

কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে বলা হয়, ‘সাম্প্রতিক সময়ে শিক্ষার্থীদের অন্তরের আকুতিকে অনুধাবন করে কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালীন সময়ে একটি যৌক্তিক সংস্কার ও সমাধানের জন্য সর্বাত্মক ভূমিকা রেখেছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। কিন্তু উদ্দেশ্যমূলকভাবে ‘মেটিকিউলাস প্ল্যানের’ অংশ হিসেবে বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে শিক্ষার্থীদের বিপরীতে দাঁড় করানোর অপচেষ্টা করেছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পরিপন্থী ও রাষ্ট্রবিরোধী কুচক্রী স্বার্থান্বেষী মহল।‘

অন্তর্বর্তী সরকার দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিসহ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিতে নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করেছে উল্লেখ করে ছাত্রলীগ বলেছে, ‘বর্তমানে দেশের বিদ্যমান সংকটে যখন দ্রব্যমূল্যের অসহনীয় ঊর্ধ্বগতি, লাগামহীন অরাজকতা, মব জাস্টিস, হাজার-হাজার দলীয় নেতাকর্মীকে হত্যা, রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় বিদ্যমান আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক ব্যর্থতা প্রবল, তখনই এসব লুকানোর জন্য বাংলাদেশ ছাত্রলীগের মতো ঐতিহ্যবাহী একটি সংগঠনকে নিষিদ্ধ করে জনগণের দৃষ্টিকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার অপপ্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে অবৈধ ও অসাংবিধানিক সরকার বলে বিবৃতিতে বলা হয়েছে।‘

ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে অভিযোগকে ‘সর্বৈব মিথ্যা ও বানোয়াট’ উল্লেখ করে বলা হয়, ‘শেখ হাসিনা যখন ১৫ই জুলাই থেকে সংঘটিত প্রতিটি ঘটনার আন্তর্জাতিক তদন্তের আয়োজন করেছিলেন, তখন এই অবৈধ সরকার হত্যা, ধ্বংসযজ্ঞ ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডকে দায়মুক্তি দিতে এটি করেছে।’

অন্তর্বর্তী সরকারের পদত্যাগ দাবি করে ছাত্রলীগ বলেছে, ‘বাংলাদেশ ও এদেশের মানুষের ভাগ্যের উপর অন্ধকার নিয়ে আসা এই অবৈধ, দেশবিরোধী সরকারকে অবিলম্বে পদত্যাগ করে গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক শক্তির সরকার প্রতিষ্ঠায় এদেশের ছাত্র-তরুণ সমাজ, কৃষক-শ্রমিক ও জনতার প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।‘

আরও