চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের বাজারের উঠতে শুরু করেছে আমন ধান। তবে উৎপাদন খরচের তুলনায় দাম ৩৫ শতাংশ কম। প্রতি কেজি ধান বিক্রি হচ্ছে ১০-১৫ টাকায়। অর্থাৎ প্রতি মণ ধানের দাম ৪০০-৪৫০ টাকা। অথচ প্রতি মণ আমন ধান উৎপাদনে কৃষকের খরচ হয়েছে ৫০০-৭০০ টাকা।
কৃষকের অভিযোগ, সিন্ডিকেটের কবলে পড়েছে চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের ধানের বাজারগুলো। এতে ক্ষতির মুখে পড়ছেন তারা। পানির দামে ধান বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন কৃষক। আগে উপজেলার বিভিন্ন বাজারে হাটবারে ধানের বাজার বসত। কিন্তু সিন্ডিকেটের কারণে এখন অনেক স্থানে ধানের বাজার বসে না। ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে ধানের দাম কমিয়ে দিয়েছেন। তাদের বেঁধে দেয়া দামেই আমন ধান বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন কৃষক।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর উপজেলার ১৬টি ইউনিয়ন ও দুটি পৌরসভায় ১৯ হাজার ৮৫০ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ হয়েছে। বিগত পাঁচ বছরে উপজেলায় আমন ধান আবাদ কমেছে ৮০০ হেক্টর জমিতে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা প্রতাপ চন্দ্র রায় বণিক বার্তাকে বলেন, ‘বাজারে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের বিষয়ে আমি জানি না। খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’
সম্প্রতি বারইয়ারহাট পৌর ধানবাজারে গেলে কৃষকরা জানান, বারইয়ারহাট পৌর ধানবাজারে স্থানীয় ধান ব্যবসায়ীদের একটি সিন্ডিকেট রয়েছে। তারা বাইরের ধান ব্যবসায়ীদের বাজারে আসতে দেন না। ফলে কৃষক পাইকার না পেয়ে কম দামে স্থানীয় পাইকারের কাছে ধান বিক্রি করতে বাধ্য হন। এছাড়া অনেক সময় নছিমন ও করিমনে করে ধান আনতে গেলে পুলিশ বাধা দেয়। ফলে ধানবাজারটি মহাসড়কের পূর্ব পাশে হওয়ায় পশ্চিম পাশের কৃষকের বাজারে ধান নিয়ে আসতে অসুবিধা হয়।
হিঙ্গুলী ইউনিয়নের পূর্ব হিঙ্গুলী গ্রামের কৃষক সঞ্জিত দত্ত জানান, কৃষক আগের মতো বাজারে গিয়ে ধান বিক্রি করতে চান না। কারণ অনেক পাইকার বাড়ি থেকে ধান সংগ্রহ করেন। এছাড়া বারইয়ারহাট বাজারে আগের মতো পাইকার আসেন না। প্রতিটি বাজারে ধান ব্যবসায়ীদের একটি সিন্ডিকেট রয়েছে। তারা বাইরের পাইকারদের আসতে দেন না। মহাসড়কে তিন চাকার যানবাহন বন্ধ থাকায় তারা ধান নিয়ে স্থানীয় বাজারের বাইরে যেতে পারেন না। ফলে স্থানীয় পাইকারদের বেঁধে দেয়া দামে ধান বিক্রি করতে বাধ্য হন।