কমপ্লিট শাটডাউনে কার্যত অচল নোয়াখালী মেডিকেল কলেজ

অধ্যক্ষসহ চার শিক্ষকের পদত্যাগ দাবিতে শিক্ষার্থীদের কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচিতে কার্যত অচল হয়ে পড়েছে নোয়াখালীর আব্দুল মালেক উকিল মেডিকেল কলেজ।

অধ্যক্ষসহ চার শিক্ষকের পদত্যাগ দাবিতে শিক্ষার্থীদের কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচিতে কার্যত অচল হয়ে পড়েছে নোয়াখালীর আব্দুল মালেক উকিল মেডিকেল কলেজ। বুধবার থেকে কলেজের প্রধান ফটকে তালা ঝুলছে। এ পরিস্থিতিতে গতকাল সকাল থেকে ক্যাম্পাসের ভেতরে কেউ ঢুকতে পারছে না এবং বাইরেও যেতে পারছে না।

ইমন মুৎসুদ্দি নামে চতুর্থ বর্ষের এক শিক্ষার্থীকে দুই বছরের জন্য শাস্তি দেয়াকে কেন্দ্র করে অধ্যক্ষ ডা. সৈয়দ জাকির হোসেনসহ চার শিক্ষককের পদত্যাগ দাবি করেন শিক্ষার্থীরা।

গতকাল সরজমিনে দেখা গেছে, কমপ্লিট শাটডাউনের কারণে মেডিকেল কলেজের সব কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। তালা ঝুলছে কলেজের সব কক্ষে। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণে অধ্যক্ষসহ কয়েকজন শিক্ষক স্বেচ্ছায় ছুটিতে চলে যান। হলে থাকা বেশির ভাগ শিক্ষার্থীও চলে গেছেন। তবে মেয়ে শিক্ষার্থীদের অনেকেই যেতে পারেননি। তাদের আন্দোলনে যেতে বাধ্য করছেন আন্দোলনকারীরা। কার্যক্রম বন্ধ থাকায় ডোপ টেস্ট দিতে আসা চালকরাও পড়েছেন দুর্ভোগে। লাইন ধরে দাঁড়িয়ে ছিলেন তালাবদ্ধ মেডিকেল কলেজের প্রধান ফটকে। অন্যদিকে প্রশাসনিক ভবনের সামনে স্লোগান দিতে দেখা যায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের পদচারণায় যেখানে মুখর থাক কলেজ, সেখানে এখন সুনসান নীরবতা। নেই কর্ম ব্যস্ততা। বিভাগের সব অফিস রুমও রয়েছে বন্ধ।

নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে কয়েকজন শিক্ষক ও শিক্ষার্থী জানান, প্রকাশ্যে ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শিক্ষকদের অকথ্য ভাষায় গালমন্দসহ বিভিন্ন অপরাধে একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দুই বছরের জন্য শান্তি দেয়া হয় ইমন মুৎসুদ্দিকে। তারপর থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যেতে দেয়া হয়নি বলে ইমন শিক্ষার্থীদের মাঝে গুজব ছড়ায়। সে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষে থাকায় তাকে শাস্তি দেয়া হয়েছে এমনটা ছড়িয়ে দেয়। একপর্যায়ে রোববার সকালে ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের শিক্ষক রিয়াজ উদ্দিনের পদত্যাগ দাবি করে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা, যা পরবর্তী সময়ে চিকিৎসক ও শিক্ষকদের বিভিন্ন সংগঠনের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে রূপ নেয়। শিক্ষার্থীরা সেই রাজনীতির হাতিয়ার হিসেবে কাজ করছেন। শিক্ষক রিয়াজ উদ্দিন ছাড়াও কলেজের অধ্যক্ষ সৈয়দ জাকির হোসাইন, উপাধ্যক্ষ মাহবুবুর রহমান ও সার্জারি বিভাগের শিক্ষক সৈয়দ কামরুল হোসাইনেরও পদত্যাগ দাবি করছেন শিক্ষার্থীরা। দাবি আদায়ে অবস্থান কর্মসূচিসহ ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেয়া হয়।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগের বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষের বক্তব্যের জন্য তাদের কাউকে ক্যাম্পাসে বা ফোনে পাওয়া যায়নি। তবে এ বিষয়ে সার্জারি বিভাগের শিক্ষক সৈয়দ কামরুল হোসাইন বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা কী কারণে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলছে আমি ঠিক বুঝতে পারছি না। আমি সবসময় শিক্ষার্থীদের ভালো চেয়েছি। তাদের এবং কলেজের অমঙ্গল হয় এমন কোনো কাজ কখনো করিনি, সামনেও করব না।’

আরও