পিলখানা হত্যা মামলার পুনঃতদন্তে হাইকোর্টের রুল

ঢাকার পিলখানায় সাড়ে ১৫ বছর আগে বিডিআর বিদ্রোহের সময় সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের মামলায় পুনঃতদন্ত কমিশন কেন নয়, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।

ঢাকার পিলখানায় সাড়ে ১৫ বছর আগে বিডিআর বিদ্রোহের সময় সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের মামলায় পুনঃতদন্ত কমিশন কেন নয়, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে পিলখানা হত্যা মামলার পুনঃতদন্ত চেয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে করা আবেদন নিষ্পত্তির নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট তানভীর আহমেদ।

২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদর দপ্তরে বিদ্রোহের ঘটনায় ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নিহত হন। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে ওই ঘটনা আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও আলোড়ন তোলে। সেই বিদ্রোহের পর সীমান্ত রক্ষাবাহিনী বিডিআরের নাম বদলে যায়, রাখা হয় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ ‘‌বিজিবি’। পরিবর্তন আসে পোশাকেও।

হত্যাকাণ্ডটির পুনঃতদন্ত কার্যক্রম শিগগিরই শুরু হবে বলে গত সোমবার জানিয়েছিলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেছিলেন, ‘বিডিআর হত্যাকাণ্ডের পুনঃতদন্ত হবে এবং অবশ্যই হতে হবে। দ্রুতই তদন্ত টিম করা হবে। যেহেতু অন্য অনেকগুলো হচ্ছে, এটাও হয়ে যাবে।’

বিদ্রোহের বিচার বিজিবির আদালতে হলেও হত্যাকাণ্ডের মামলা বিচারের জন্য আসে প্রচলিত আদালতে। এ ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা হয়। এর মধ্যে হত্যা মামলায় ৮৫০ জনের বিচার শেষ হয় ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর। তাতে ১৫২ জনের ফাঁসি, ১৬০ জনের যাবজ্জীবন ও ২৫৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়। খালাস পান ২৭৮ জন। ২০১৭ সালের ২৭ নভেম্বর সে মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের রায়ও হয়ে যায় হাইকোর্টে। তাতে ১৩৯ আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হয়। যাবজ্জীবন সাজা দেয়া হয় ১৮৫ জনকে। আরো ২২৮ জনকে দেয়া হয় বিভিন্ন মেয়াদে সাজা। খালাস পান মোট ২৮৩ জন।

হত্যা মামলায় হাইকোর্টের দেয়া রায়ের বিরুদ্ধে ২২৬ আসামি আপিল ও লিভ টু আপিল করেছেন। অন্যদিকে হাইকোর্টে ৮৩ আসামির খালাস এবং সাজা কমানোর রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। এসব আপিল ও লিভ টু আপিল এখন শুনানির অপেক্ষায়।

অন্যদিকে বিস্ফোরক আইনের মামলায় ৮৩৪ আসামির বিরুদ্ধে বিচারকাজ শুরু হয়েছিল ২০১০ সালে। কিন্তু মাঝপথে সে কার্যক্রম এক প্রকার স্থগিত রেখে শুধু হত্যা মামলার সাক্ষ্য উপস্থাপন করে রাষ্ট্রপক্ষ। যে কারণে মামলাটির বিচার ঝুলে যায়। ফলে হত্যা মামলায় খালাস বা সাজাভোগ শেষে ৪৬৮ বিডিআর সদস্যের মুক্তি আটকে আছে বিস্ফোরক মামলার কারণে।

এদিকে ক্ষমতার পালাবদলের মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনার তদন্ত পুনরায় শুরুর দাবি উঠছে।

আরও